গালিগালাজ’ করা অসুস্থ মানসিকতার পরিচয়
:আমিন ইকবাল :
গালি একটি সামাজিক ব্যাধি। গালি দেয়া পাপের কাজ। গালিগালাজ করা কোনো সুস্থ মানসিকতার পরিচয় নয়। ভালো মানুষ কখনো গালি দেয় না। দিতেই পারে না। মুদ্রাদোষ বা অভ্যাসবশত অনেকেই কথায় কথায় গালি দেয়, অনেকেই হাসি-তামাশা ও ঠাট্টাচ্ছলেও অন্যকে গালি দিয়ে বসে এসবের কোনোটিই ঠিক নয়। গালি সম্বন্ধে হজরত রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন:-
‘এমন দুই ব্যক্তি, যারা একে অপরকে গালমন্দ করল, তখন ওই গালির পাপ সে ব্যক্তির ওপরই পতিত হবে, যে প্রথমে গালি দিয়েছে যে পর্যন্ত না নির্যাতিত ব্যক্তি সীমা অতিক্রম করে।’
এই হাদিসের আলোকে বোঝা যায় গালির সূচনাকারী ব্যক্তি অত্যাচারী এবং দ্বিতীয় ব্যক্তি অত্যাচারিত। আর অত্যাচারিত ব্যক্তি ওই পরিমাণ প্রতিশোধ গ্রহণ করতে পারে যে পরিমাণ সে নির্যাতিত হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে গালি দ্বারা গালির প্রতিশোধ গ্রহণ না করাই উত্তম। অন্যথায় উত্তম ও অধমের প্রভেদ থাকবে না। এতে বোঝা যায় যে, কোনো মন্দ কাজের জবাব ভালো দ্বারা দেয়াই উত্তম। ইসলামের সৌন্দর্য হলো এমন কথা, কাজ ও বিষয় পরিহার করা যা নিরর্থক। অর্থাৎ যেসব কথা, কাজ ও বিষয়ে দুনিয়া ও আখেরাতের কোনো ফায়দা নেই তা পরিহার করা। গালি দেয়ার ফলে দুনিয়া ও আখেরাতের কোনো উপকার হয় না বরং ক্ষতিই সাধিত হয়।
অতএব আমাদের উচিত গালির অভ্যাস পরিত্যাগ করা। হজরত রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন,
‘কোনো মুসলমানকে গালি দেয়া ফাসেকি।’ [বুখারি ও মুসলিম]
জিহ্বার সংযত ও পরিমিত ব্যবহার সমাজ, পরিবারে ও রাষ্ট্রে শান্তি আসে। জিহ্বার ব্যবহার প্রসঙ্গে হজরত রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন,
‘যখন আদম সন্তান ভোরে ঘুম থেকে উঠে তখন তার অঙ্গসমূহ জিহ্বাকে বিনয়ের সঙ্গে বলে আমাদের সম্পর্কে আল্লাহকে ভয় কর। কেননা আমরা তোমার সঙ্গে জড়িত। সুতরাং তুমি ঠিক থাকলে আমরাও ঠিক থাকব। আর তুমি বাঁকা হলে আমরাও বাঁকা হয়ে পড়ব।’
কিন্তু জিহ্বা যেহেতু মনের মুখপাত্র তাই সব অঙ্গের কার্যকলাপ জিহ্বা দ্বারা প্রকাশ পায়। সে জন্য অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা, মন্দ কথা, খারাপ উক্তি ও গালি থেকে বিরত থাকা কর্তব্য। হজরত রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন,
‘যে নীরব থেকেছে সে মুক্তি পেয়েছে।’ [তিরমিজি]।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
সাদ ইবনে মালিক (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (স.) বলেছেন- মুসলমানদের গালি দেয়া জঘন্য পাপ (ফাসেকী)। (নাসাঈ, ইবনে মাজা)
হযরত আবু যর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ (স:) কে বলতে শুনেছেন, কোন ব্যক্তি অপর কোন ব্যক্তিকে যেন ফাসেক অথবা কাফের এর অপবাদ না দেয়। কেননা সে যদি প্রকৃতই তা না হয়ে থাকে তবে এই অপবাদ তার নিজের ঘাড়ে চেপে আসবে। ( বুখারী)
হযরত আবু হোরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (স:) ইরশাদ করেছেন, পরস্পরকে গালি দানকারীর মধ্যে যে পূর্বে গালি দিয়েছে সে দোষী, যদি নির্যাতিত (প্রথম যাকে গালি দেয়া হয়েছে) ব্যক্তি পরিসীমা অতিক্রম না করে থাকে। (মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজি)
নবী (সঃ) আরো বলেন- ৪টি স্বভাব থাকলে সে মুনাফিক। তাহলো- আমানত খেয়ানত করা, মিথ্যে বলা, ওয়াদা খেলাফ করা, ঝগড়া ও গালমন্দ করা (বোখারী, মুসলিম)।
হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন আস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, স্বীয় পিতামাতাকে গালি দেয়া কবিরা গুনাহের অন্তর্ভূক্ত। সাহাবাগণ প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! কোন ব্যক্তি কি তার পিতামাতাকে গালি দিতে পারে? রাসূল সাঃ বললেন, হ্যাঁ, এভাবে দিতে পারে যে, ব্যক্তি অন্য ব্যক্তির পিতাকে গালি দিবে, আর উক্ত ব্যক্তি প্রথম ব্যক্তির পিতাকে গালি দিল। ব্যক্তি অন্য ব্যক্তির মাকে গালি দিল, তখন উক্ত ব্যক্তি প্রথম ব্যক্তির মাকে গালি দিল।{সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৪৬, শরহু মাশকিলুল আসার, হাদীস নং-৮৯৯}
ইসলাম যেসব আচরণগত উপদেশ দিয়েছে সেগুলোর একাংশ দেখে নেই-
নবী (সঃ) বলেন, মুমিন কখনো দোষারোপকারী, অভিশাপকারী, অশ্লীল ও গালিগালাজকারী হয় না। [তিরমিজি ২০৪৩]
ইসলামে সুন্দর ব্যবহারের গুরুত্ব অপরিসীম। নবী (সঃ) বলেন “ইসলাম হচ্ছে সুন্দর ভাষায় কথা বলা ও ক্ষুধার্তকে আহার দেয়া”।
রাসূল (সঃ) বলেছেন “তোমরা ভাষায় মিষ্টভাষি হও, আচরণে সংযমি হও।”
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন- আল্লাহর রাস্তায় (জিহাদের) ধুলি ও জাহান্নামের ধোঁয়া কোন বান্দার মধ্যে কখনো একত্র হতে পারে না। অনুরূপভাবে মনের সংকীর্ণতা ও ঈমান কখনো একত্র হতে পারে না। (নাসাঈ, ইবনে মাজা)
সামুরা (রা.) বলেন, নবী (স.) বলেছেন- তোমরা পরস্পরকে আল্লাহর অভিশাপ, আল্লাহর ক্রোধ এবং আগুনের দ্বারা অভিসম্পাত করো না। (তিরমিজি, আবু দাউদ)
:আমিন ইকবাল :
গালি একটি সামাজিক ব্যাধি। গালি দেয়া পাপের কাজ। গালিগালাজ করা কোনো সুস্থ মানসিকতার পরিচয় নয়। ভালো মানুষ কখনো গালি দেয় না। দিতেই পারে না। মুদ্রাদোষ বা অভ্যাসবশত অনেকেই কথায় কথায় গালি দেয়, অনেকেই হাসি-তামাশা ও ঠাট্টাচ্ছলেও অন্যকে গালি দিয়ে বসে এসবের কোনোটিই ঠিক নয়। গালি সম্বন্ধে হজরত রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন:-
‘এমন দুই ব্যক্তি, যারা একে অপরকে গালমন্দ করল, তখন ওই গালির পাপ সে ব্যক্তির ওপরই পতিত হবে, যে প্রথমে গালি দিয়েছে যে পর্যন্ত না নির্যাতিত ব্যক্তি সীমা অতিক্রম করে।’
এই হাদিসের আলোকে বোঝা যায় গালির সূচনাকারী ব্যক্তি অত্যাচারী এবং দ্বিতীয় ব্যক্তি অত্যাচারিত। আর অত্যাচারিত ব্যক্তি ওই পরিমাণ প্রতিশোধ গ্রহণ করতে পারে যে পরিমাণ সে নির্যাতিত হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে গালি দ্বারা গালির প্রতিশোধ গ্রহণ না করাই উত্তম। অন্যথায় উত্তম ও অধমের প্রভেদ থাকবে না। এতে বোঝা যায় যে, কোনো মন্দ কাজের জবাব ভালো দ্বারা দেয়াই উত্তম। ইসলামের সৌন্দর্য হলো এমন কথা, কাজ ও বিষয় পরিহার করা যা নিরর্থক। অর্থাৎ যেসব কথা, কাজ ও বিষয়ে দুনিয়া ও আখেরাতের কোনো ফায়দা নেই তা পরিহার করা। গালি দেয়ার ফলে দুনিয়া ও আখেরাতের কোনো উপকার হয় না বরং ক্ষতিই সাধিত হয়।
অতএব আমাদের উচিত গালির অভ্যাস পরিত্যাগ করা। হজরত রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন,
‘কোনো মুসলমানকে গালি দেয়া ফাসেকি।’ [বুখারি ও মুসলিম]
জিহ্বার সংযত ও পরিমিত ব্যবহার সমাজ, পরিবারে ও রাষ্ট্রে শান্তি আসে। জিহ্বার ব্যবহার প্রসঙ্গে হজরত রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন,
‘যখন আদম সন্তান ভোরে ঘুম থেকে উঠে তখন তার অঙ্গসমূহ জিহ্বাকে বিনয়ের সঙ্গে বলে আমাদের সম্পর্কে আল্লাহকে ভয় কর। কেননা আমরা তোমার সঙ্গে জড়িত। সুতরাং তুমি ঠিক থাকলে আমরাও ঠিক থাকব। আর তুমি বাঁকা হলে আমরাও বাঁকা হয়ে পড়ব।’
কিন্তু জিহ্বা যেহেতু মনের মুখপাত্র তাই সব অঙ্গের কার্যকলাপ জিহ্বা দ্বারা প্রকাশ পায়। সে জন্য অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা, মন্দ কথা, খারাপ উক্তি ও গালি থেকে বিরত থাকা কর্তব্য। হজরত রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন,
‘যে নীরব থেকেছে সে মুক্তি পেয়েছে।’ [তিরমিজি]।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
সাদ ইবনে মালিক (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (স.) বলেছেন- মুসলমানদের গালি দেয়া জঘন্য পাপ (ফাসেকী)। (নাসাঈ, ইবনে মাজা)
হযরত আবু যর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ (স:) কে বলতে শুনেছেন, কোন ব্যক্তি অপর কোন ব্যক্তিকে যেন ফাসেক অথবা কাফের এর অপবাদ না দেয়। কেননা সে যদি প্রকৃতই তা না হয়ে থাকে তবে এই অপবাদ তার নিজের ঘাড়ে চেপে আসবে। ( বুখারী)
হযরত আবু হোরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (স:) ইরশাদ করেছেন, পরস্পরকে গালি দানকারীর মধ্যে যে পূর্বে গালি দিয়েছে সে দোষী, যদি নির্যাতিত (প্রথম যাকে গালি দেয়া হয়েছে) ব্যক্তি পরিসীমা অতিক্রম না করে থাকে। (মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজি)
নবী (সঃ) আরো বলেন- ৪টি স্বভাব থাকলে সে মুনাফিক। তাহলো- আমানত খেয়ানত করা, মিথ্যে বলা, ওয়াদা খেলাফ করা, ঝগড়া ও গালমন্দ করা (বোখারী, মুসলিম)।
হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন আস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, স্বীয় পিতামাতাকে গালি দেয়া কবিরা গুনাহের অন্তর্ভূক্ত। সাহাবাগণ প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! কোন ব্যক্তি কি তার পিতামাতাকে গালি দিতে পারে? রাসূল সাঃ বললেন, হ্যাঁ, এভাবে দিতে পারে যে, ব্যক্তি অন্য ব্যক্তির পিতাকে গালি দিবে, আর উক্ত ব্যক্তি প্রথম ব্যক্তির পিতাকে গালি দিল। ব্যক্তি অন্য ব্যক্তির মাকে গালি দিল, তখন উক্ত ব্যক্তি প্রথম ব্যক্তির মাকে গালি দিল।{সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৪৬, শরহু মাশকিলুল আসার, হাদীস নং-৮৯৯}
ইসলাম যেসব আচরণগত উপদেশ দিয়েছে সেগুলোর একাংশ দেখে নেই-
নবী (সঃ) বলেন, মুমিন কখনো দোষারোপকারী, অভিশাপকারী, অশ্লীল ও গালিগালাজকারী হয় না। [তিরমিজি ২০৪৩]
ইসলামে সুন্দর ব্যবহারের গুরুত্ব অপরিসীম। নবী (সঃ) বলেন “ইসলাম হচ্ছে সুন্দর ভাষায় কথা বলা ও ক্ষুধার্তকে আহার দেয়া”।
রাসূল (সঃ) বলেছেন “তোমরা ভাষায় মিষ্টভাষি হও, আচরণে সংযমি হও।”
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন- আল্লাহর রাস্তায় (জিহাদের) ধুলি ও জাহান্নামের ধোঁয়া কোন বান্দার মধ্যে কখনো একত্র হতে পারে না। অনুরূপভাবে মনের সংকীর্ণতা ও ঈমান কখনো একত্র হতে পারে না। (নাসাঈ, ইবনে মাজা)
সামুরা (রা.) বলেন, নবী (স.) বলেছেন- তোমরা পরস্পরকে আল্লাহর অভিশাপ, আল্লাহর ক্রোধ এবং আগুনের দ্বারা অভিসম্পাত করো না। (তিরমিজি, আবু দাউদ)