গল্প লেখার জন্য কয়েকটি টিপস : সংলাপ: গল্পে সংলাপ লেখা
১. গল্পে সংলাপ লেখার অনেকগুলো রাস্তা আছে। আপনি যেকোন একটা বেছে নিতে পারে। ইদানিং সবাই আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করে। এটা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে খুব সমালোচনা হচ্ছে। তবে একান্ত চরিত্রের প্রয়োজনে আপনি সেটা করতেই পারে।
২. সংলাপ লম্বা করবেন না।
৩. গল্পে আপনার যে ক্যারেকটার সংলাপ বলবে। যে স্টাইলে বলবে সেটা যেন তার চারিত্রিক বৈশিষ্ঠ হয়। সবচে ভালো উপায় আপনি চরিত্রটি যেভাবে দাড় করালেন সেটা যদি আপনার পরিচিত কারো সাথে মিলে যায় তাহলে আপনি তার কথা বলা ভঙ্গিটাই ব্যবহার করতে পারেন।
৪. শুধু সংলাপ দিয়েও গল্প লেখা যায়
৫. সংলাপে বুদ্ধির দীপ্তি থাকলে সমঝদাররা গ্রহণ করবে। যেমন শেষের কবিতা।
৬. সংলাপে যেন জগাঘিচুড়ি না হয়।
৭. সংলাপ ব্যাকরণ মেনে হবেনা। প্রচলিত ভাষায় হবে।
৮. মনে রাখবেন সংলাপ দূবল হলে গল্প ঝুলে যাবে।
৯. ভালো সংলাপ ধারনার জন্য দেশি বিদেশী নাটক পড়–ন।
১০. সংলাপের সওয়াল জওয়াব খেয়াল রাখবেন প্রাসঙ্গিক হচ্ছে কিনা।
১১. সংলাপ মানানসই না হলে এডিয়ে যাবেন ্ প্রয়য়োজণে কথকের ভ’মিকা নেবেন।
১২. কোনো আঞ্চলকি ভাষা ভালো না জানলে সে ভাষায় সংলাপ লখিতে যাবনে না । হাস্যকর মনে হব।ে
চরিত্র সৃস্টি
১. প্রতিটি চরিত্র সৃস্ট্রির জন্য আপনি ঠিক করে নিন আপনার গল্পে কয়টি চরিত্র থাকবে।
২. চরিত্রের ধর্ম, পেশা, বয়স, অতীত ইতিহাস, শ্রেনী, জন্মস্থান ইত্যাদি অনুসারে তার নাম রাখুন।
৩. কোন ক্যারেকটার কেমন, কার বাচনভঙ্গি কি, পোষাক কি, অভ্যাস বদঅভ্যাস কি, দোষ গুণ কি, লক্ষ্য ও পরিনতি কি? এসব আলাদা একটা কাগজে নোট রাখুন , যাতে গল্প লেখার সময় আপনি খেই হারিয়ে না ফেলেন।
৪. চরিত্রের জন্য প্রয়োজন ডিটেইল। গল্পের সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রতিটি চরিত্রে নিখুত বিবরণ তুলে ধরতে হবে। এমনকি একটি ছোট কারেক্টার হলেও। মনে রাখবেন প্রতিটি কারেক্টারকে আপনি যতো শক্ত কওে প্রতিষ্ঠা করবেন। আপনার গল্পের বাঁধন ততই শক্ত হবে। আর পাঠক প্রতিটি কারেক্টারের ভেতওে যতটা যেতে পারবে। ততই তার গল্প ভালো রাগবে। সত্যজিত রায়ের লেখাগুলো এক্ষেত্রে আমার কাছে অনুসরনীয় মনে হয়।
৫. প্রতিটি ব্যক্তির একটি দোষগুনের সাথে তার আচরণের সমন্বয় ঘটাতে হবে।
৬. সংলাপের ক্ষেত্রেও কারেক্টারকে ফুটিয়ে তোলার একটা ব্যাপার আছে। যেমন একজন মাওলানা কথায় আরবি ঊর্দূ শব্দের ব্যবহার থাকবে। একজন কমরেডের ভাষায় তার রাজনীতি জগতের কিছু ভাষা থাকবে। এসব সুক্ষè বিষয় যত খেয়াল রাখবেন চরিত্র ততই জীবন্ত হয়ে উঠবে।
৭. ভালোমানুষ মন্দমানুষ চরিত্রগুলোও যতœ করে ফুটিয়ে তুলতে হবে।
৮. চরিত্র গুলোর বিভিন্ন মনস্তাত্বিক দিক রয়েছে। সেটা ফুটিয়ে না তুললে চরিত্রের কার্যাবলী পাঠকের কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হবেনা। যেমন ধরুন হরিপদ দত্ত দেশকে ভালোবাসে তবুও সে একসময় ভারতে চলে যায়। এক্ষেত্রে শুধু পরিস্থিতি নয়। হরিপদ সে সময় কি ভেবেছিলো সেটাও আপনাকে পরিষ্কার করতে হবে।
৯. মনে রাখবেন চরিত্র ফুটিয়ে তোলার সময় কোনো গ্যাপ যেন না থাকে। পাঠকের চোখে যেন কোনো ঘাটতি ধরা না পড়ে। তাহলে পাঠকের কাছে চরিত্রকে অচেনা বলে মনে হবে। এবং তখন গল্পটাও পাঠকের কাছ থেকে দূরে চলে যাবে।
১০. ভালো হয় আপনি যদি প্রতিটি গল্পে এমন একটা চরিত্র রাখতে পারেন। যেখানে পাঠক নিজেকে বসিয়ে কল্পনা করতে পারবে। মূল চরিত্র হলেতো কথাই নেই। অল্পবয়সী পাঠকদের জন্য এটা খুব কার্যকর পদ্ধতি।
১১. গল্প বলার মধ্যে যেরকম ক্লাইমেক্স নাটকীয়তা আবার গল্পের ভেতেরেই ছোট ছোট গল্প থাকবে। সংলাপের ক্ষেত্রেও তাই। কারণ সংলাপের মাধ্যমেও আপনার গল্পটা সামনে আগাচ্ছে। তাই সংলাপে, ক্লাইমেক্স নাটকীয়তা আবার গল্পের ভেতেরেই ছোট ছোট গল্প থাকবে।