শতকথা: কাজী নজরুল ইসলাম

জেনে নিন কাজী নজরুল ইসলাম এর A to Z

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<h3 style="text-align: center;">
<span style="background-color: blue; color: white; font-family: sans-serif; font-size: large;"><b>জেনে নিন কাজী নজরুল ইসলাম এর A to Z</b></span></h3>
<div style="text-align: justify;">
<span style="font-size: large;"><span style="background-color: white; font-family: sans-serif;">জেনে নিন কাজী নজরুল ইসলাম এর A to Z→ - প্রশ্নঃ কাজী নজরুল কবে, কোথায় জন্মগ্রহণ করেন? উত্তরঃ ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ বঙ্গাব্দ (২৪ মে ১৮৯৯) খ্রি:) চুরুলিয়া গ্রাম, আসানসোল, বর্ধমান পশ্চিমবঙ্গ। প্রশ্নঃ কাজী নজরুলের পিতার নাম কী? উত্তরঃ কাজী ফকির আহমদ। প্রশ্নঃ নজরুলের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বর্ণনা দাও। উত্তরঃ দশ বছর বয়সে গ্রামের মক্তব থেকে নিম্ন প্রাইমারী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ (১৯০৯) হন্ এরপর ১৯১৪ সালের ত্রিশালের দরিরামপুর স্কুলে, ১৯১৫ সালে পশ্চিমবঙ্গের রানীগঞ্জ শিয়ারশোল রাজস্কুলে অষ্টম শ্রেণীতে ভর্তি হন। এই স্কুল থেকে ১৯১৭ সালে দশম শ্রেণী প্রি-টেস্ট পরীক্ষার সময় লেখাপড়া অসমাপ্ত রেখে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। প্রশ্নঃ বার বছর বয়সে তিনি কোথায় যোগ দেন? উত্তরঃ লেটোর দলে এবং দলে ‘পালা গান’ রচনা করেন। প্রশ্নঃ নজরুল বাংলা সাহিত্যে কী নামে পরিচিত? উত্তরঃ বিদ্রোহী কবি। প্রশ্নঃ বাংলাদেশের জাতীয় কবি কে? উত্তরঃ কাজী নজরুল ইসলাম। প্রশ্নঃ কাজী নজরুল বাংলাদেশের কোন সঙ্গীতের রচয়িতা? উত্তরঃ রণসঙ্গীত। প্রশ্নঃ রণসঙ্গীত হিসাবে মূল কবিতাটির কত চরণ গৃহীত? উত্তরঃ ২১ চরণ। প্রশ্নঃ রণসঙ্গীত কী শিরোনামে সর্বপ্রথম কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়? উত্তরঃ নতুনের গান শিরোনামে ঢাকার শিখা পত্রিকায় ১৯২৮ (১৩৩৫ বঙ্গাব্দে) বার্ষিক সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। প্রশ্নঃ কাজী নজরুলের কোন গ্রন্থে এই সঙ্গীত অন্তর্ভুক্ত আছে? উত্তরঃ সন্ধ্যা কাব্য গ্রন্থে। প্রশ্নঃ ‘বিদ্রোহী’ কবিতা প্রথম কোথায় প্রকাশিত হয়? উত্তরঃ ‘সাপ্তাহিক বিজলী’র ২২ পৌষ (১৩২৮) সংখ্যায়। প্রশ্নঃ কাজী নজরুল কোন দৈনিক পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন? উত্তরঃ ‘সান্ধ্য দৈনিক নবযুগ’ (১৯২০)-এর। প্রশ্নঃ এই পত্রিকার সঙ্গে আর কোন দুজন রাজনৈতিক নেতা যুক্ত ছিলেন? উত্তরঃ কমরেড মুজাফফর আহমদ ও শেরে বাংলা ফজলুল হক। প্রশ্নঃ কাজী নজরুলের সম্পদনায় কোন অর্ধসাপ্তাহিক পত্রিকা বের হত? উত্তরঃ ‘ধূমকেতু’ (১৯২২)। প্রশ্নঃ ধূমকেতু পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথের কোন বাণী ছাপা হয়? উত্তরঃ ‘আয় চলে আয়, রে ধূমকেতু/আঁধারে বাঁধ অগ্নিসেতু-’। প্রশ্নঃ কোন কবিতা প্রকাশিত হলে তিনি গ্রেফতার হন? উত্তরঃ ধূমকেতু’র পূজা সংখ্যায় (১৯২২) ‘আনন্দময়ীর আগমনে’। প্রশ্নঃ রবীন্দ্রনাথ তাঁর কোন গীতিনাট্য নজরুলকে উৎসর্গ করেন? উত্তরঃ বসন্ত। প্রশ্নঃ হুগলি জেলে কর্মকর্তাদের অন্যায় আচরণের বিরুদ্ধে নজরুল অনশন করলে রবীন্দ্রনাথ নজরুলকে কী লিখে টেলিগ্রাফ পাঠান? উত্তরঃ Give up hunger strike. Our literature claims you. প্রশ্নঃ কাজী নজরুল জেল থেকে মুক্তি পান কবে? উত্তরঃ ১৯২৩-এর ১৫ অক্টোবর। প্রশ্নঃ কাজী নজরুল ইসলাম কংগ্রেসের রাজনীতিতে যোগ দেন কখন? উত্তরঃ ১৯২৫-এ ফরিদপুর কংগ্রেসের প্রাদেশিক সম্মেলনে। প্রশ্নঃ নজরুল সম্পাদিত ‘লাঙ্গল’ পত্রিকার প্রকাশকাল কত? উত্তরঃ ১৯২৫ সাল। প্রশ্নঃ কাজী নজরুলকে জাতীয় সংবর্ধনা দেয়া হয় কোথায় এবং কখন? উত্তরঃ ১৯২৯-এর ১৫ ডিসেম্বর কলকাতার অ্যালবার্ট হলে। প্রশ্নঃ নজরুলের প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থের নাম কী? উত্তরঃ ব্যথার দান (প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ১৯২২)। প্রশ্নঃ নজরুলের প্রথম প্রকাশিত রচনার নাম কী? উত্তরঃ বাউন্ডেলের আত্মকাহিনী (প্রকাশ: জ্যৈষ্ঠ ১৩২৬; সওগাত)। প্রশ্নঃ নজরুলের প্রথম প্রকাশিত কবিতার নাম কী? উত্তরঃ মুক্তি (প্রকাশ: শ্রাবণ ১৩২৬)। প্রশ্নঃ নজরুলের প্রথম প্রকাশিত গল্পের নাম কী? উত্তরঃ বাউন্ডেলের আত্মকাহিনী (প্রকাশ: জ্যৈষ্ঠ ১৩২৬)। প্রশ্নঃ নজরুলের প্রথম প্রকাশিত গল্পগ্রন্থের নাম কী? উত্তরঃ ব্যথার দান (প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ১৯২২)। প্রশ্নঃ নজরুলের প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের নাম কী? উত্তরঃ অগ্নি-বীণা (সেপ্টেম্বর, ১৯২২)। প্রশ্নঃ নজরুলের প্রথম প্রকাশিত উপন্যাসের নাম কি? উত্তরঃ বাঁধনহারা (১৯২৭)। প্রশ্নঃ নজরুলের প্রথম প্রকাশিত প্রবন্ধের নাম কী? উত্তরঃ তুর্কমহিলার ঘোমটা খোলা (প্রকাশ: কার্তিক ১৩২৬)। প্রশ্নঃ নজরুলের প্রথম প্রবন্ধগ্রন্থ কোনটি? উত্তরঃ যুগবাণী (অক্টোবর ১৯২২)। প্রশ্নঃ নজরুলের প্রথম প্রকাশিত নাটকের নাম কী? উত্তরঃ ঝিলিমিলি (১৩৩৪, নওরোজ)। প্রশ্নঃ প্রথম প্রকাশিত নাট্য গ্রন্থ কী? উত্তরঃ ঝিলিমিলি (১৩৩৭)। এই গ্রন্থে মোট তিনটি নাটক আছে। প্রশ্নঃ নজরুলের প্রথম বাজেয়াপ্ত গ্রন্থের নাম কী? উত্তরঃ বিষের বাঁশী (প্রকাশ: আগষ্ট ১৯২৪/ বাজেয়াপ্ত: ২৪ অক্টোবর ১৯২৪)। প্রশ্নঃ নজরুলের মোট কয়টি গ্রন্থ বাজেয়াপ্ত হয়, কী কী? উত্তরঃ ৫টি। বিশের বাঁশী, ভাঙার গান, প্রলয় শিখা, চন্দ্রবিন্দু, যুগবাণী। প্রশ্নঃ জেলে বসে লেখা জবানবন্দির নাম কী? উত্তরঃ রাজবন্দির জবানবন্দি। রচনার তারিখ: ৭/১/</span><wbr style="background-color: white; font-family: sans-serif;"></wbr><span class="word_break" style="background-color: white; font-family: sans-serif;"></span><span style="background-color: white; font-family: sans-serif;">১৯২৩ প্রশ্নঃ ‘দারিদ্র্য’ কবিতাটি নজরুল ইসলামের কোন কাব্যের অন্তর্গত? উত্তরঃ সিন্ধু হিন্দোল কাব্যের। প্রশ্নঃ কোন কবিতা রচনার জন্য কাজী নজরুল ইসলামের ‘অগ্নিবীনা’ কাব্য নিষিদ্ধ হয়? উত্তরঃ রক্তাম্বরধারিনী মা। প্রশ্নঃ ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি কবি নজরুল ইসলামের কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত? উত্তরঃ অগ্নি-বীণা। প্রশ্নঃ অগ্নি-বীণা কাকে উৎসর্গ করা হয়? উত্তরঃ বিপ্লবী বারীন্দ্রকুমার ঘোষকে। প্রশ্নঃ অগ্নি-বীণার প্রথম কবিতা কোনটি? উত্তরঃ প্রলয়োল্লাস। প্রশ্নঃ নজরুলের কোনটি পত্রোপন্যাসের পর্যায়ভুক্ত। উত্তরঃ বাঁধনহারা। প্রশ্নঃ বঙ্গবন্ধু সরকার কর্তৃক রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে নজরুলকে কলকাতা থেকে ঢাকায় আনায়ন করা হয় কত সালে? উত্তরঃ ১৯৭২-এর ২৪ মে। প্রশ্নঃ কবির বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থগুলো</span><wbr style="background-color: white; font-family: sans-serif;"></wbr><span class="word_break" style="background-color: white; font-family: sans-serif;"></span><span style="background-color: white; font-family: sans-serif;"> কী কী? উত্তরঃ ‘অগ্নি-বীণা’ (১৯২২), বিষের বাঁশি (১৯২৪), ভাঙার গান (১৯২৪), সাম্যবাদী (১৯২৫), সর্বহারা (১৯২৬), ফণি-মনসা (১৯২৭), জিঞ্জির (১৯২৮), সন্ধ্যা (১৯২৯), প্রলয় শিখা (১৯৩০) ইত্যাদি। প্রশ্নঃজবিনী কাব্যগুলো কী কী? উত্তরঃ ‘চিত্তনামা’ (১৯২৫) ও মরু-ভাস্কর (১৯৫০)। প্রশ্নঃ চিত্তনামা ও মরু-ভাস্কর কার জীবনভিত্তিক কাব্য? উত্তরঃ চিত্তনামা : দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ: মরু-ভাস্কর: হয়রত মুহম্মদ। প্রশ্নঃ হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর জীবনী গ্রন্থ কোনটি? উত্তরঃ মরু ভাস্কর। প্রশ্নঃ কাজী নজরুল ইসলামের উপন্যাসগুলোর নাম উল্লেখ কর। উত্তরঃ ‘বাঁধনহারা’ (১৯২৭), মৃত্যুক্ষুধা (১৯৩০) ও কুহেলিকা (১৯৩১)। প্রশ্নঃ কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত গল্পগ্রন্থগুলোর</span><wbr style="background-color: white; font-family: sans-serif;"></wbr><span class="word_break" style="background-color: white; font-family: sans-serif;"></span><span style="background-color: white; font-family: sans-serif;"> নাম কর। উত্তরঃ ব্যথার দান (১৯২২), রিক্তের বেদন (১৯২৫), শিউলিমালা (১৯৩১)। প্রশ্নঃ সংগীত বিষয়ক গ্রন্থাবলীর উল্লেখ কর। উত্তরঃ চোখের চাতক, নজরুল গীতিকা, সুর সাকী, বনগীতি প্রভৃতি। প্রশ্নঃ তাঁকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও ভারত সরকার কর্তৃক কোন কোন পদক দেয়া হয়? উত্তরঃ যথাক্রমে জগত্তারিণী স্বর্ণপদক (১৯৪৫) ও পদ্মভূষণ (১৯৬০) পদক দেয়া হয়। প্রশ্নঃ ডি-লিট পদক ‘রবীন্দ্রভারতী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কখন দেয়া হয়? উত্তরঃ যথাক্রমে ১৯৬৯ সাল ও ১৯৭৪ সালে। বাংলাদেশ সরকার ‘একুশে পদক’ দেন ১৯৭৬ সালে। প্রশ্নঃ বিবিসির বাংলা বিভাগ কর্তৃক জরিপকৃত (২০০৪) সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালির তালিকায় নজরুলের স্থান কত? উত্তরঃ তৃতীয়। প্রশ্নঃ বাল্যকাল তিনি কী নামে পরিচিত ছিলেন? উত্তরঃ দুখু মিয়া। প্রশ্নঃ কাজী নজরুল ইসলাম কী নামে খ্যাত? উত্তরঃ বিদ্রোহী কবি। প্রশ্নঃ বাংলা ভাষায় কে প্রথম ইসলামী গান ও গজল রচনা করেন? উত্তরঃ কাজী নজরুল ইসলাম। প্রশ্নঃ কাজী নজরুল ইসলাম ১৯১৭ সালে কত নং বাঙালি পল্টনে যোগ দেন। উত্তরঃ ৪৯ নং প্রশ্নঃ আদালতে প্রদত্ত কবি নজরুলের রচনার নাম কী? উত্তরঃ রাজবন্দীর জবানবন্দি প্রশ্নঃ ১৯৩৩ সালে প্রকাশিত ‘বিষের বাঁশী’ কাব্যগ্রন্থ কার নামে উৎসর্গ করেন। উত্তরঃ মিসেস এম রহমান প্রশ্নঃ ‘চন্দ্রবিন্দু’ কাজী নজরুল ইসলামের কোন ধরনের রচনা? উত্তরঃ গল্প প্রশ্নঃ ‘ভাঙ্গার গান’ কাজী নজরুল ইসলামের কোন ধরনের রচনা? উত্তরঃ কাব্যগ্রন্থ। প্রশ্নঃ আবুল মনসুর আহমদ এর কোন গ্রন্থে কাজী নজরুল ইসলাম ভূমিকা রচনা করেছেন? উত্তরঃ আয়না প্রশ্নঃ কাজী নজরুল ইসলাম সম্পাদিত তিনটি পত্রিকার নাম কী? উত্তরঃ ধূমকেতু (১৯২২), লাঙ্গল (১৯২৫), দৈনিক নবযুগ (১৯৪১) প্রশ্নঃ কাজী নজরুল ইসলামের তিনটি নাটকের নাম করুন। উত্তরঃ ঝিলমিলি, আলেয়া, পুতুলের বিয়ে প্রশ্নঃ কাজী নজরুল ইসলামের ‘অগ্নি-বীণা’ কাব্যের প্রথম কবিতাটি কোনটি? উত্তরঃ প্রলয়োল্লাস। প্রশ্নঃ ১৯৩০ সালে কোন কবিতার জন্য নজরুল ইসলাম ৬ মাসের জন্য কারাবরণ করেন? উত্তরঃ প্রলয় শিখা প্রশ্নঃ কাজী নজরুল ইসলামের প্রেমমূলক রচনা কোনটি? উত্তরঃ শিউলীমালা প্রশ্নঃ ‘সাম্যবাদী’ কাজী নজরুলের কোন জাতীয় রচনা? কত সালে কোথায় প্রথম প্রকাশিত হয়? উত্তরঃ কবিতা, ১৩৩২ বঙ্গাব্দে ১লা পৌষ ‘লাঙ্গল’ পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়। প্রশ্নঃ ‘আমি সৈনিক’ রচনাটি কবি নজরুল ইসলামের কোন গ্রন্থের অন্তর্ভূক্ত। উত্তরঃ দুর্দিনের যাত্রী। প্রশ্নঃ কত সলে কবি নজরুলকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়? উত্তরঃ ১৯৭৪ সালে। প্রশ্নঃ কাজী নজরুল ইসলামের প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম কী এবং কত সালে প্রকাশিত হয়? উত্তরঃ অগ্নিবীণা, ১৯২২ সালে প্রকাশিত হয়। প্রশ্নঃ কাজী নজরুল ইসলামের দুটি অনুবাদ গ্রন্থের নাম করুন। উত্তরঃ রুবাইয়াৎ-ই-হাফি</span><wbr style="background-color: white; font-family: sans-serif;"></wbr><span class="word_break" style="background-color: white; font-family: sans-serif;"></span><span style="background-color: white; font-family: sans-serif;">জ (১৯৩০) ও রুবাইয়াৎ-ই- ওমর খৈয়াম (১৯৬০)। প্রশ্নঃ এ পর্যন্ত কাজী নজরুল ইসলামের প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা কত? উত্তরঃ ৫১টি প্রশ্নঃ কাজী নজরুল ইসলাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে কোন গ্রন্থটি উৎসর্গ করেন? উত্তরঃ সঞ্চিতা। প্রশ্নঃ কাজী নজরুলের ‘সাম্যবাদী’ কবিতাটি প্রথম কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়? উত্তরঃ লাঙ্গল। প্রশ্নঃ নজরুল সাহিত্যের লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য কী? উত্তরঃ সংস্কার ও বন্ধন মুক্তি প্রশ্নঃ কত সালে কাজী নজরুল ইসলাম আশালতা সেন গুপ্তার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবন্ধ হন? উত্তরঃ ১৯২৪ সালে প্রশ্নঃ ১৯২২ সালে ধূমকেতুর শারদীয় সংখ্যায় কী কী প্রকাশের জন্য কাজী নজরুল ইসলামকে এক বৎসর কারাবণ করতে হয়? উত্তরঃ আনন্দময়ীর আগমনে কবিতা এবং ‘বিদ্রোহীর কৈফিয়াৎ’ প্রকাশের জন্য। প্রশ্নঃ কত সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কবি নজরুলকে ডক্টরেট উপাধি প্রদান করে? উত্তরঃ ১৯৭৪ সালে প্রশ্নঃ নজরুল ইসলামের কবিতা সর্বপ্রথম কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। উত্তরঃ বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য পত্রিকায়। প্রশ্নঃ বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গণে দুটি বৃক্ষ আছে। তার একটি রবীন্দ্রনাথের নামে অপরটি কার নামে? উত্তরঃ কাজী নজরুল ইসলামের নামে। প্রশ্নঃ নজরুলকে দিয়ে কবিতা লিখিয়ে তা পত্রিকায় প্রকাশ করে সুবিধা আদায় করতে চেয়েছিল কে? উত্তরঃ প্রশ্নঃ ‘যাকে হাত দিয়ে মালা দিতে পার নি’- এই বিখ্যাত গানের চরণটি নজরুল কাকে উদ্দেশ্য করে রচনা করেছেন? উত্তরঃ নার্গিসকে। প্রশ্নঃ নার্গিসের বাড়ি কোথায়? উত্তরঃ কুমিল্লা জেলার দৌলতপুরে। প্রশ্নঃ নজরুল ইসলামের রচনা দুটো ঐতিহ্য একই মিলন মোহনায় এসে মিসেছে। ঐতিহ্য দুটো কী? উত্তরঃ মুসলিম ঐতিহ্য এবং হিন্দু ঐতিহ্য। প্রশ্নঃ মুসলিম ও হিন্দু এতিহ্যকে একীভূত করার উদ্দেশ্যে তিনি তাঁর ছেলের নাম কী রাখেন? উত্তরঃ কৃষ্ণ-মোহাম্মদ প্রশ্নঃ নজরুল মায়ের মত সম্মান করতো কোন মহিলাকে? উত্তরঃ বিরজা সুন্দরী নামে কুমিল্লার এক হিন্দু মহিলাকে। প্রশ্নঃ তিনি মৃত্যুবরণ করেন কবে? উত্তরঃ ২৯ আগষ্ট, ১৯৭৬; ১২ ভাদ্র ১৩৮৩ বঙ্গাব্দ।</span></span></div>
</div>

জেনে নিন কাজী নজরুল ইসলাম এর A to Z

জেনে নিন কাজী নজরুল ইসলাম এর A to Z জেনে নিন কাজী নজরুল ইসলাম এর A to Z→ - প্রশ্নঃ কাজী নজরুল কবে, কোথায় জন্মগ্রহণ করেন? উত্তরঃ ১১ জ্যৈষ...

আরও পড়ুন »

আমার কৈফিয়ৎ – কাজী নজরুল ইসলাম

Unknown কাজী নজরুল ইসলাম ৮:৫২:০০ AM

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;">
<a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEj2wGn1v3sQ_EOZ1Q9S3yeHREuszAUed3w0J-wCQNEXWH_TucB78HP0tSJXE1jtnynIj8zO2YIc1gFMgPvJ0a1zuG-TNI99Q_7Z8OYTGLKjJJwOq6aGg5nHmmJ8nTnN0fnYeZefz2YAdWED/s1600/images+%25281%2529.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="200" data-original-width="252" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEj2wGn1v3sQ_EOZ1Q9S3yeHREuszAUed3w0J-wCQNEXWH_TucB78HP0tSJXE1jtnynIj8zO2YIc1gFMgPvJ0a1zuG-TNI99Q_7Z8OYTGLKjJJwOq6aGg5nHmmJ8nTnN0fnYeZefz2YAdWED/s1600/images+%25281%2529.jpg" /></a></div>
<h3 class="entry-title" style="background-color: #f3f3f3; border: 0px; font-family: Oswald, "Bebas Neue", Bebas, "Arial Narrow", sans-serif; font-size: 19.2px; font-stretch: normal; font-variant-east-asian: normal; font-variant-numeric: normal; font-weight: normal; line-height: normal; margin: 15px 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
আমার কৈফিয়ৎ – কাজী নজরুল ইসলাম</h3>
<div style="background-color: #f3f3f3; border: 0px; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-east-asian: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
বর্তমানের কবি আমি ভাই, ভবিষ্যতের নই ‘নবী’,<br />
কবি ও অকবি যাহা বলো মোরে মুখ বুঁজে তাই সই সবি!<br />
কেহ বলে, ‘তুমি ভবিষ্যতে যে<br />
ঠাঁই পাবে কবি ভবীর সাথে হে!<br />
যেমন বেরোয় রবির হাতে সে চিরকেলে-বাণী কই কবি?’<br />
দুষিছে সবাই, আমি তবু গাই শুধু প্রভাতের ভৈরবী!<span id="more-1494" style="border: 0px; font-family: inherit; font-size: inherit; font-stretch: inherit; font-style: inherit; font-variant: inherit; font-weight: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;"></span></div>
<div style="background-color: #f3f3f3; border: 0px; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-east-asian: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
কবি-বন্ধুরা হতাশ হইয়া মোর লেখা প’ড়ে শ্বাস ফেলে!<br />
বলে, কেজো ক্রমে হচ্ছে অকেজো পলিটিক্সের পাশ ঠেলে’।<br />
পড়ে না ক’ বই, ব’য়ে গেছে ওটা।<br />
কেহ বলে, বৌ-এ গিলিয়াছে গোটা।<br />
কেহ বলে, মাটি হ’ল হয়ে মোটা জেলে ব’সে শুধু তাস খেলে!<br />
কেহ বলে, তুই জেলে ছিলি ভালো ফের যেন তুই যাস জেলে!</div>
<div style="background-color: #f3f3f3; border: 0px; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-east-asian: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
গুরু ক’ন, তুই করেছিস শুরু তলোয়ার দিয়ে দাড়ি চাঁছা!<br />
প্রতি শনিবারী চিঠিতে প্রেয়সী গালি দেন, ‘তুমি হাঁড়িচাঁচা!’<br />
আমি বলি, ‘প্রিয়ে, হাটে ভাঙি হাঁড়ি!’<br />
অমনি বন্ধ চিঠি তাড়াতাড়ি।<br />
সব ছেড়ে দিয়ে করিলাম বিয়ে, হিন্দুরা ক’ন, আড়ি চাচা!’<br />
যবন না আমি কাফের ভাবিয়া খুঁজি টিকি দাড়ি, নাড়ি কাছা!</div>
<div style="background-color: #f3f3f3; border: 0px; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-east-asian: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
মৌ-লোভী যত মৌলবী আর ‘ মোল্‌-লা’রা ক’ন হাত নেড়ে’,<br />
‘দেব-দেবী নাম মুখে আনে, সবে দাও পাজিটার জাত মেরে!<br />
ফতোয়া দিলাম- কাফের কাজী ও,<br />
যদিও শহীদ হইতে রাজী ও!<br />
‘আমপারা’-পড়া হাম-বড়া মোরা এখনো বেড়াই ভাত মেরে!<br />
হিন্দুরা ভাবে,‘ পার্শী-শব্দে কবিতা লেখে, ও পা’ত-নেড়ে!’</div>
<div style="background-color: #f3f3f3; border: 0px; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-east-asian: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
আনকোরা যত নন্‌ভায়োলেন্ট নন্‌-কো’র দলও নন্‌ খুশী।<br />
‘ভায়োরেন্সের ভায়োলিন্‌’ নাকি আমি, বিপ্লবী-মন তুষি!<br />
‘এটা অহিংস’, বিপ্লবী ভাবে,<br />
‘নয় চর্‌কার গান কেন গা’বে?’<br />
গোঁড়া-রাম ভাবে নাস্তিক আমি, পাতি-রাম ভাবে কন্‌ফুসি!<br />
স্বরাজীরা ভাবে নারাজী, নারাজীরা ভাবে তাহাদের আঙ্কুশি!</div>
<div style="background-color: #f3f3f3; border: 0px; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-east-asian: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
নর ভাবে, আমি বড় নারী-ঘেঁষা! নারী ভাবে, নারী-বিদ্বেষী!<br />
‘বিলেত ফেরনি?’ প্রবাসী-বন্ধু ক’ন, ‘ এই তব বিদ্যে, ছি!’<br />
ভক্তরা বলে, ‘নবযুগ-রবি!’-<br />
যুগের না হই, হজুগের কবি<br />
বটি ত রে দাদা, আমি মনে ভাবি, আর ক’ষে কষি হৃদ্‌-পেশী,<br />
দু’কানে চশ্‌মা আঁটিয়া ঘুমানু, দিব্যি হ’তেছে নিদ্‌ বেশী!</div>
<div style="background-color: #f3f3f3; border: 0px; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-east-asian: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
কি যে লিখি ছাই মাথা ও মুণ্ডু আমিই কি বুঝি তার কিছু?<br />
হাত উঁচু আর হ’ল না ত ভাই, তাই লিখি ক’রে ঘাড় নীচু!<br />
বন্ধু! তোমরা দিলে না ক’ দাম,<br />
রাজ-সরকার রেখেছেন মান!<br />
যাহা কিছু লিখি অমূল্য ব’লে অ-মূল্যে নেন! আর কিছু<br />
শুনেছ কি, হুঁ হুঁ, ফিরিছে রাজার প্রহরী সদাই কার পিছু?</div>
<div style="background-color: #f3f3f3; border: 0px; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-east-asian: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
বন্ধু! তুমি ত দেখেছ আমায় আমার মনের মন্দিরে,<br />
হাড় কালি হ’ল শাসাতে নারিনু তবু পোড়া মন-বন্দীরে!<br />
যতবার বাঁধি ছেঁড়ে সে শিকল,<br />
মেরে মেরে তা’রে করিনু বিকল,<br />
তবু যদি কথা শোনে সে পাগল! মানিল না ররি-গান্ধীরে।<br />
হঠাৎ জাগিয়া বাঘ খুঁজে ফেরে নিশার আঁধারে বন চিরে’!</div>
<div style="background-color: #f3f3f3; border: 0px; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-east-asian: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
আমি বলি, ওরে কথা শোন্‌ ক্ষ্যাপা, দিব্যি আছিস্‌ খোশ্‌-হালে!<br />
প্রায় ‘হাফ’-নেতা হ’য়ে উঠেছিস্‌, এবার এ দাঁও ফস্‌কালে<br />
‘ফুল’-নেতা আর হবিনে যে হায়!<br />
বক্তৃতা দিয়া কাঁদিতে সভায়<br />
গুঁড়ায়ে লঙ্কা পকেটেতে বোকা এই বেলা ঢোকা! সেই তালে<br />
নিস্‌ তোর ফুটো ঘরটাও ছেয়ে, নয় পস্তাবি শেষকালে।</div>
<div style="background-color: #f3f3f3; border: 0px; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-east-asian: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
বোঝে না ক’ যে সে চারণের বেশে ফেরে দেশে দেশে গান গেয়ে,<br />
গান শুন সবে ভাবে, ভাবনা কি! দিন যাবে এবে পান খেয়ে!<br />
রবে না ক’ ম্যালেরিয়া মহামারী,<br />
স্বরাজ আসিছে চ’ড়ে জুড়ি-গাড়ী,<br />
চাঁদা চাই, তারা ক্ষুধার অন্ন এনে দেয়, কাঁদে ছেলে-মেয়ে।<br />
মাতা কয়, ওরে চুপ্‌ হতভাগা, স্বরাজ আসে যে, দেখ্‌ চেয়ে!</div>
<div style="background-color: #f3f3f3; border: 0px; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-east-asian: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
ক্ষুধাতুর শিশু চায় না স্বরাজ, চায় দুটো ভাত, একটু নুন,<br />
বেলা ব’য়ে যায়, খায়নি ক’ বাছা, কচি পেটে তার জ্বলে আগুন।<br />
কেঁদে ছুটে আসি পাগলের প্রায়,<br />
স্বরাজের নেশা কোথা ছুটে যায়!<br />
কেঁদে বলি, ওগো ভগবান তুমি আজিও আছে কি? কালি ও চুন<br />
কেন ওঠে না ক’ তাহাদের গালে, যারা খায় এই শিশুর খুন?</div>
<div style="background-color: #f3f3f3; border: 0px; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-east-asian: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
আমরা ত জানি, স্বরাজ আনিতে পোড়া বার্তাকু এনেছি খাস!<br />
কত শত কোটি ক্ষুধিত শিশুর ক্ষুধা নিঙাড়িয়া কাড়িয়া গ্রাস<br />
এল কোটি টাকা, এল না স্বরাজ!<br />
টাকা দিতে নারে ভুখারি সমাজ।<br />
মা’র বুক হ’তে ছেলে কেড়ে খায়, মোরা বলি, বাঘ, খাও হে ঘাস!<br />
হেরিনু, জননী মাগিছে ভিক্ষা ঢেকে রেখে ঘরে ছেলের লাশ!</div>
<div style="background-color: #f3f3f3; border: 0px; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-east-asian: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
বন্ধু গো, আর বলিতে পারি না, বড় বিষ-জ্বালা এই বুকে!<br />
দেখিয়া শুনিয়া ক্ষেপিয়া গিয়াছি, তাই যাহা আসে কই মুখে।<br />
রক্ত ঝরাতে পারি না ত একা,<br />
তাই লিখে যাই এ রক্ত-লেখা,<br />
বড় কথা বড় ভাব আসে না ক’ মাথায়, বন্ধু, বড় দুখে!<br />
অমর কাব্য তোমরা লিখিও, বন্ধু, যাহারা আছ সুখে!</div>
<div style="background-color: #f3f3f3; border: 0px; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-east-asian: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
পরোয়া করি না, বাঁচি বা না-বাঁচি যুগের হুজুগ কেটে গেলে,<br />
মাথায় উপরে জ্বলিছেন রবি, রয়েছে সোনার শত ছেলে।<br />
প্রার্থনা ক’রো যারা কেড়ে খায় তেত্রিশ কোটি মুখের গ্রাস,<br />
যেন লেখা হয় আমার রক্ত-লেখায় তাদের সর্বনাশ!</div>
</div>

আমার কৈফিয়ৎ – কাজী নজরুল ইসলাম

আমার কৈফিয়ৎ – কাজী নজরুল ইসলাম বর্তমানের কবি আমি ভাই, ভবিষ্যতের নই ‘নবী’, কবি ও অকবি যাহা বলো মোরে মুখ বুঁজে তাই সই সবি! কেহ বলে, ‘...

আরও পড়ুন »

বিদ্রোহী কবির বিদ্রোহী কবিতা : বিদ্রোহী - কাজী নজরুল ইসলাম

Unknown কাজী নজরুল ইসলাম ৯:০২:০০ AM

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<div class="" data-block="true" data-editor="7c5vh" data-offset-key="72s31-0-0" style="background-color: white; color: #1d2129; font-family: Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 14px; white-space: pre-wrap;">
<h3 style="font-family: inherit; position: relative; text-align: left;">
<span data-offset-key="72s31-0-0" style="font-family: inherit;"><a class="rg_l" href="https://www.google.com.bd/imgres?imgurl=http%3A%2F%2Fbangla.newsnextbd.com%2Fwp-content%2Fuploads%2F2017%2F04%2F9-3.jpg&imgrefurl=http%3A%2F%2Fbangla.newsnextbd.com%2F%25E0%25A6%25B2%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%2596%25E0%25A7%258B-%25E0%25A6%2595%25E0%25A6%25A3%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25A0%25E0%25A7%2587-%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25A6%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%258B%25E0%25A6%25B9%25E0%25A7%2580-%25E0%25A6%2595%25E0%25A6%25AC%2F&docid=THRcQvPw1-w1KM&tbnid=kk1EhbL4WXM8QM%3A&vet=10ahUKEwiQjdXh4_fVAhVCLY8KHSY1BBMQMwg5KBIwEg..i&w=600&h=300&bih=613&biw=1366&q=%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B9%E0%A7%80%20%E0%A6%95%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A6%BE&ved=0ahUKEwiQjdXh4_fVAhVCLY8KHSY1BBMQMwg5KBIwEg&iact=mrc&uact=8" jsaction="fire.ivg_o;mouseover:str.hmov;mouseout:str.hmou" jsname="hSRGPd" rel="noopener" style="background: rgb(184, 104, 37); color: #660099; cursor: pointer; display: inline-block; font-family: arial, sans-serif; font-size: 0px; font-weight: normal; height: 159px; left: 0px; position: absolute; text-decoration-line: none; white-space: normal; width: 299px;"><img alt="বিদ্রোহী কবিতা এর চিত্র ফলাফল" class="rg_ic rg_i" data-src="https://encrypted-tbn0.gstatic.com/images?q=tbn:ANd9GcTedzEqYttRfdQrxv2XR_ErEyvB5E9YASY6_vPFf8cMlfvyUpSD" data-sz="f" jsaction="load:str.tbn" name="kk1EhbL4WXM8QM:" src="https://encrypted-tbn0.gstatic.com/images?q=tbn:ANd9GcTedzEqYttRfdQrxv2XR_ErEyvB5E9YASY6_vPFf8cMlfvyUpSD" style="border: 0px; color: rgba(0, 0, 0, 0); display: block; height: 159px; margin-left: 0px; margin-right: -19px; margin-top: 0px; width: 318px;" /></a></span></h3>
<h3 style="font-family: inherit; position: relative; text-align: left;">
<span data-offset-key="72s31-0-0" style="font-family: inherit;"><br /></span></h3>
<h3 style="font-family: inherit; position: relative; text-align: left;">
<span data-offset-key="72s31-0-0" style="font-family: inherit;"><br /></span></h3>
<h3 style="font-family: inherit; position: relative; text-align: left;">
<span data-offset-key="72s31-0-0" style="font-family: inherit;"><br /></span></h3>
<h3 style="font-family: inherit; position: relative; text-align: left;">
<div style="font-family: Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 14px; font-weight: normal; margin-bottom: 6px; white-space: normal;">
বিদ্রোহী </div>
<div style="font-family: Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 14px; font-weight: normal; margin-bottom: 6px; white-space: normal;">
-কাজী নজরুল ইসলাম<br />বল বীর-<br />বল উন্নত মম শির!<br />শির নেহারি’ আমারি নতশির ওই শিখর হিমাদ্রির!<br />বল বীর-<br />বল মহাবিশ্বের মহাকাশ ফাড়ি<br />চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা ছাড়ি<br />ভূলোক দ্যুলোক গোলক ভেদিয়া<br />খোদার আসন আরশ ছেদিয়া,<br />উঠিয়াছি চিরবিস্ময় আমি বিশ্ববিধাতৃর!<br />মম ললাটে রুদ্র ভগবান জ্বলে রাজ-রাজটীকা দীপ্ত জয়শ্রীর!<br />বল বীর-<br />আমি চির উন্নত শির!</div>
<div style="font-family: Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 14px; font-weight: normal; margin-bottom: 6px; margin-top: 6px; white-space: normal;">
আমি চিরদূর্দম, দুর্বিনীত, নৃশংস,<br />মহা-প্রলয়ের আমি নটরাজ,আমি সাইক্লোন,আমি ধ্বংস!<br />আমি মহাভয়,আমি অভিশাপ পৃথ্বীর,<br />আমি দুর্বার,আমি ভেঙে করি সব চুরমার!<br />আমি অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল,আমি দ’লে যাই যত বন্ধন,যত নিয়ম কানুনশৃঙ্খল!<br />আমি মানি না কো কোন আইন,<br />আমি ভরা-তরী করি ভরা-ডুবি, আমি টর্পেডো,আমি ভীম ভাসমান মাইন!<br />আমি ধূর্জটি,আমি এলোকেশে ঝড় অকাল-বৈশাখীর<br />আমি বিদ্রোহী,আমি বিদ্রোহী-সুত বিশ্ব-বিধাতৃর!<br />বল বীর-<br />চির-উন্নত মম শির!</div>
<div style="font-family: Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 14px; font-weight: normal; margin-bottom: 6px; margin-top: 6px; white-space: normal;">
আমি ঝঞ্ঝা,আমি ঘূর্ণি,<br />আমি পথ-সমুখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’।<br />আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ,<br />আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ।<br />আমি হাম্বার,আমি ছায়ানট,আমি হিন্দোল<br />আমি চল-চঞ্চল,ঠমকি’ ছমকি’<br />পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’<br />ফিং দিয়া দিই তিন দোল ;<br />আমি চপলা-চপল হিন্দোল।<br />আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা<br />করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা<br />আমি উন্মাদ,আমি ঝঞ্ঝা!<br />আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর;<br />আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ণ চির-অধীর।<br />বল বীর-<br />আমি চির-উন্নত শির!</div>
<div style="display: inline; font-family: Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 14px; font-weight: normal; margin-top: 6px; white-space: normal;">
আমি চিরদুরন্ত দুর্মদ,<br />আমি দুর্দম, মম প্রাণের পেয়ালা হর্দম্ হ্যায় হর্দম ভরপুর মদ।<br />আমি হোমশিখা, আমি সাগ্নিক জমদগ্নি,<br />আমি যজ্ঞ, আমি পুরোহিত, আমি অগ্নি<br />আমি সৃষ্টি আমি ধ্বংস আমি লোকালয় আমি শ্মশান,<br />আমি অবসান নিশাবসান।<br />আমি ইন্দ্রাণীসুত হাতে চাঁদ ভালে সূর্য<br />মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী আর হাতে রণতূর্য;<br />আমি কৃষ্ণকন্ঠ, মন্থন-বিষ পিয়া ব্যথা-বারিধির।<br />আমি ব্যোমকেশ, ধরি বন্ধন-হারা ধারা গঙ্গোত্রীর।<br />বল বীর –<br />চির-উন্নত মম শির!<br />আমি সন্ন্যাসী, সুর-সৈনিক,<br />আমি যুবরাজ, মম রাজবেশ ম্লান গৈরিক।<br />আমি বেদুঈন, আমি চেঙ্গিস<br />আমি আপনারে ছাড়া করি না কাহারে কুর্ণিশ!<br />আমি বজ্র আমি ঈশান-বিষাণে ওঙ্কার<br />আমি ইস্রাফিলের শিঙ্গার মহা হুঙ্কার<br />আমি পিণাক-পাণির ডমরু ত্রিশূল, ধর্মরাজের দন্ড<br />আমি চক্র ও মহা শঙ্খ, আমি প্রণব-নাদ প্রচন্ড!<br />আমি ক্ষ্যাপা দুর্বাসা, বিশ্বামিত্র-শিষ্য<br />আমি দাবানল-দাহ, দাহন করিব বিশ্ব।<br />আমি প্রাণ-খোলা হাসি উল্লাস– আমি সৃষ্টিবৈরী মহাত্রাস,<br />আমি মহা প্রলয়ের দ্বাদশ রবির রাহু গ্রাস!<br />আমি কভূ প্রশান্ত-কভূ অশান্ত দারুণ স্বেচ্ছাচারী<br />আমি অরুণ খুনের তরুণ, আমি বিধির দর্পহারী!<br />আমি প্রভঞ্জনের উচ্ছ্বাস, আমি বারিধির মহা কল্লোল<br />আমি উজ্জ্বল, আমি প্রোজ্জ্জ্বল,<br />আমি উচ্ছল জল-ছল-ছল, চল-ঊর্মির হিন্দোল-দোল!<br />আমি বন্ধনহারা কুমারীর বেণু, তন্বী-নয়নে বহ্ণি<br />আমি ষোড়শীর হৃদি-সরসিজ প্রেম উদ্দাম, আমি ধন্যি!<br />আমি উন্মন মন উদাসীর,<br />আমি বিধবার বুকে ক্রন্দন-শ্বাস, হা হুতাশ আমি হুতাশীর।<br />আমি বন্চিত ব্যথা পথবাসী চির গৃহহারাযত পথিকের<br />আমি অবমানিতের মরম বেদনা, বিষ–জ্বালা, প্রিয় লান্চিত বুকে গতি ফের<br />আমি অভিমানী চির ক্ষুব্ধ হিয়ার কাতরতা, ব্যথা সুনিবিড়<br />চিত চুম্বন-চোর কম্পন আমি থর-থর-থর প্রথম প্রকাশ কুমারীর!<br />আমি গোপন-প্রিয়ার চকিত চাহনি, ছল-ক’রে দেখা অনুখন<br />আমি চপল মেয়ের ভালোবাসা তা’র কাঁকন-চুড়ির কন্-কন্!<br />আমি চির-শিশু, চির-কিশোর<br />আমি যৌবন-ভীতু পল্লীবালার আঁচড় কাঁচলি নিচোর!<br />আমি উত্তর-বায়ু মলয়-অনিল উদাস পূরবী হাওয়া<br />আমি পথিক-কবির গভীর রাগিণী, বেণু-বীণেগান গাওয়া।<br />আমি আকুল নিদাঘ-তিয়াসা, আমি রৌদ্র-রুদ্র রবি<br />আমি মরু-নির্ঝর ঝর ঝর, আমি শ্যামলিমা ছায়া-ছবি!<br />আমি তুরীয়ানন্দে ছুটে চলি, এ কি উন্মাদ আমি উন্মাদ!<br />আমি সহসা আমারে চিনেছি, আমার খুলিয়া গিয়াছে সব বাঁধ!<br />আমি উথ্থান আমি পতন,<br />আমি অচেতন-চিতে চেতন,<br />আমি বিশ্ব-তোরণে বৈজয়ন্তী, মানব-বিজয়া-কেতন।<br />ছুটি ঝড়ের মতন করতালি দিয়া<br />স্বর্গ মর্ত্য-করতলে<br />তাজী বোররাক আর উচ্চৈঃশ্রবা বাহন আমার<br />হিম্মত-হ্রেষা হেঁকে চলে!<br />আমি বসুধা-বক্ষে আগ্নিয়াদ্রি, বাড়াব-বহ্ণি, কালানল<br />আমি পাতালে মাতাল অগ্নি-পাথার-কলরোল-কল-কোলাহল!<br />আমি তড়িতে চড়িয়া উড়ে চলি জোর তুড়ি দিয়া দিয়া লম্ফ,<br />আমি ত্রাস সন্চারি ভুবনে সহসা সন্চারি ভূমিকম্প।<br />ধরি বাসুকির ফণা জাপটি-<br />ধরি স্বর্গীয় দূত জিব্রাইলের আগুনেরপাখা সাপটি।<br />আমি দেব শিশু আমি চঞ্চল,<br />আমি ধৃষ্ট আমি দাঁত দিয়া ছিঁড়ি বিশ্ব মায়ের অন্চল!<br />আমি অর্ফিয়াসের বাঁশরী,<br />মহা- সিন্ধু উতলা ঘুমঘুম<br />ঘুম চুমু দিয়ে করি নিখিল বিশ্বে নিঝঝুম<br />মম বাঁশরীর তানে পাশরি<br />আমি শ্যামের হাতের বাঁশরী।<br />আমি রুষে উঠি’ যবে ছুটি মহাকাশ ছাপিয়া,<br />ভয়ে সপ্ত নরক হাবিয়া দোজখ নিভে নিভে যায় কাঁপিয়া!<br />আমি বিদ্রোহ-বাহী নিখিল অখিল ব্যাপিয়া!<br />আমি শ্রাবণ-প্লাবন-বন্যা,<br />কভু ধরনীরে করি বরণীয়া, কভু বিপুল ধ্বংস-ধন্যা<br />আমি ছিনিয়া আনিব বিষ্ণু-বক্ষ হইতে যুগল কন্যা!<br />আমি অন্যায় আমি উল্কা আমি শনি,<br />আমি ধূমকেতু-জ্বালা, বিষধর কাল-ফণী!<br />আমি ছিন্নমস্তা চন্ডী আমি রণদা সর্বনাশী,<br />আমি জাহান্নামের আগুনে বসিয়া হাসি পুষ্পের হাসি!<br />আমি মৃন্ময় আমি চিন্ময়<br />আমি অজর অমর অক্ষয় আমি অব্যয়।<br />আমি মানব দানব দেবতার ভয়,<br />বিশ্বের আমি চির-দুর্জয়,<br />জগদীশ্বর-ঈশ্বর আমি পুরুষোত্তম সত্য,<br />আমি তাথিয়া তাথিয়া মাথিয়া ফিরি স্বর্গ-পাতাল মর্ত্য!<br />আমি উন্মাদ, আমি উন্মাদ!!<br />আমি চিনেছি আমারে, আজিকে আমার খুলিয়াগিয়াছে সব বাঁধ!!<br />আমি পরশুরামের কঠোর কুঠার<br />নিঃক্ষত্রিয়া করিব বিশ্ব, আনিব শান্তি শান্ত উদার!<br />আমি হল বলরাম-স্কন্ধে<br />আমি উপাড়ি’ ফেলিব অধীন বিশ্ব অবহেলে নব সৃষ্টির মহানন্দে।<br />মহা-বিদ্রোহী রণ ক্লান্ত<br />আমি সেই দিন হব শান্ত,<br />যবে উত্পীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না –<br />অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না-<br />বিদ্রোহী রণ ক্লান্ত<br />আমি সেই দিন হব শান্ত।<br />আমি বিদ্রোহী ভৃগু, ভগবান বুকে এঁকে দিই পদ-চিহ্ন,<br />আমি স্রষ্টা-সূদন, শোক-তাপ হানা খেয়ালী বিধির বক্ষ করিব ভিন্ন!<br />আমি বিদ্রোহী ভৃগু, ভগবান বুকে এঁকে দেবো পদ-চিহ্ন!<br />আমি খেয়ালী-বিধির বক্ষ করিব ভিন্ন!<br />আমি চির-বিদ্রোহী বীর-<br />বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি একা চির-উন্নত শির ।।</div>
</h3>
</div>
</div>

<script id="GNR37356">
    (function (i,g,b,d,c) {
        i[g]=i[g]||function(){(i[g].q=i[g].q||[]).push(arguments)};
        var s=d.createElement(b);s.async=true;s.src=c;
        var x=d.getElementsByTagName(b)[0];
        x.parentNode.insertBefore(s, x);
    })(window,'gandrad','script',document,'//content.green-red.com/lib/display.js');
    gandrad({siteid:12258,slot:37356});
</script>
</div>

বিদ্রোহী কবির বিদ্রোহী কবিতা : বিদ্রোহী - কাজী নজরুল ইসলাম

বিদ্রোহী -কাজী নজরুল ইসলাম বল বীর- বল উন্নত মম শির! শির নেহারি’ আমারি নতশির ওই শিখর হিমাদ্রির! বল বীর- বল মহাবিশ্বের মহাকাশ ...

আরও পড়ুন »

অন্তর-ন্যাশনাল সঙ্গীত - কাজী নজরুল ইসলাম

Unknown কাজী নজরুল ইসলাম ১০:৪৯:০০ AM

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;">
<a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhAdcxFZ4RZqJIL4Z0-kSTh5opZRkH_Kssd8TFPSMDuGX-Tc-NvD_BlgoYRvw2dkYQBv42Oq0-ZjkLlSb-rmXCESfr3pV8ZgcVHBl2fPPogcSWAAOAGRahK1bBfM0CPLRNIRLEjaeWXr3RT/s1600/20170618_182244_rmscr.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1280" data-original-width="720" height="320" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhAdcxFZ4RZqJIL4Z0-kSTh5opZRkH_Kssd8TFPSMDuGX-Tc-NvD_BlgoYRvw2dkYQBv42Oq0-ZjkLlSb-rmXCESfr3pV8ZgcVHBl2fPPogcSWAAOAGRahK1bBfM0CPLRNIRLEjaeWXr3RT/s320/20170618_182244_rmscr.jpg" width="180" /></a></div>
<div style="text-align: center;">
অন্তর-ন্যাশনাল সঙ্গীত</div>
<div style="text-align: center;">
- কাজী নজরুল ইসলাম</div>
<div style="text-align: center;">
<br /></div>
<div style="text-align: center;">
জাগো–</div>
<div style="text-align: center;">
জাগো অনশন-বন্দী, ওঠ রে যত</div>
<div style="text-align: center;">
জগতের লাঞ্ছিত ভাগ্যহত!</div>
<div style="text-align: center;">
যত অত্যাচারে আজি বজ্র হানি’</div>
<div style="text-align: center;">
হাঁকে নিপীড়িত-জন-মন-মথিত বাণী,</div>
<div style="text-align: center;">
নব জনম লভি’ অভিনব ধরণী</div>
<div style="text-align: center;">
ওরে ওই আগত।।</div>
<div style="text-align: center;">
<br /></div>
<div style="text-align: center;">
আদি শৃঙ্খলা সনাতন শাস্ত্র-আচার</div>
<div style="text-align: center;">
মূল সর্বনাশের, এরে ভাঙিব এবার!</div>
<div style="text-align: center;">
ভেদি’ দৈত্য-কারা!</div>
<div style="text-align: center;">
আয় সর্বহারা!</div>
<div style="text-align: center;">
কেহ রহিবে না আর পর-পদ-আনত।।</div>
<div style="text-align: center;">
<br /></div>
<div style="text-align: center;">
কোরাস্‌ :</div>
<div style="text-align: center;">
নব ভিত্তি ’পরে</div>
<div style="text-align: center;">
নব নবীন জগৎ হবে উত্থিত রে!</div>
<div style="text-align: center;">
শোন্‌  অত্যাচারী! শোন্‌ রে সঞ্চয়ী!</div>
<div style="text-align: center;">
ছিনু সর্বহারা, হব’ সর্বজয়ী।।</div>
<div style="text-align: center;">
ওরে সর্বশেষের এই সংগ্রাম-মাঝ,</div>
<div style="text-align: center;">
নিজ নিজ অধিকার জুড়ে দাঁড়া সবে আজ!</div>
<div style="text-align: center;">
এই  ‘অন্তর-ন্যাশনাল-সংহতি’ রে</div>
<div style="text-align: center;">
হবে নিখিল-মানব-জাতি সমুদ্ধত।।</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<br /></div>
</div>
</div>

অন্তর-ন্যাশনাল সঙ্গীত - কাজী নজরুল ইসলাম

অন্তর-ন্যাশনাল সঙ্গীত - কাজী নজরুল ইসলাম জাগো– জাগো অনশন-বন্দী, ওঠ রে যত জগতের লাঞ্ছিত ভাগ্যহত! যত অত্যাচারে আজি বজ্র হানি’ ...

আরও পড়ুন »

চৈতী হাওয়া – কাজী নজরুল ইসলাম

Unknown কাজী নজরুল ইসলাম ৭:৫৭:০০ AM

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;">
<a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiTuSxLW4JwmMVCAnjO2aaCFwIDb7VqHDVVt5hVvuVrDD1L08td6f2tiAZYK1RkH47o7EQY9JjDUlrx17FSzjEsnHPCIweZ2p17WZUxhvYHNn3g9CVqTEvi4bYV4fHkjpVeCB7TkP-Cth5y/s1600/rxlnn70l.bmp" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" height="320" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiTuSxLW4JwmMVCAnjO2aaCFwIDb7VqHDVVt5hVvuVrDD1L08td6f2tiAZYK1RkH47o7EQY9JjDUlrx17FSzjEsnHPCIweZ2p17WZUxhvYHNn3g9CVqTEvi4bYV4fHkjpVeCB7TkP-Cth5y/s320/rxlnn70l.bmp" width="260" /></a></div>
<h3 class="entry-title" style="background-color: white; border: 0px; color: #333333; font-family: Oswald, "Bebas Neue", Bebas, "Arial Narrow", sans-serif; font-size: 19.2px; font-stretch: normal; font-weight: normal; line-height: normal; margin: 15px 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
</h3>
<h3 class="entry-title" style="background-color: white; border: 0px; font-family: oswald, "bebas neue", bebas, "arial narrow", sans-serif; font-size: 19.2px; font-stretch: normal; font-weight: normal; line-height: normal; margin: 15px 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
<span style="color: blue;">
<script id="GNR37331">
    (function (i,g,b,d,c) {
        i[g]=i[g]||function(){(i[g].q=i[g].q||[]).push(arguments)};
        var s=d.createElement(b);s.async=true;s.src=c;
        var x=d.getElementsByTagName(b)[0];
        x.parentNode.insertBefore(s, x);
    })(window,'gandrad','script',document,'//content.green-red.com/lib/display.js');
    gandrad({siteid:12258,slot:37331});
</script>
</span></h3>
<h3 class="entry-title" style="background-color: white; border: 0px; font-family: oswald, "bebas neue", bebas, "arial narrow", sans-serif; font-size: 19.2px; font-stretch: normal; font-weight: normal; line-height: normal; margin: 15px 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
<span style="color: blue;">
চৈতী হাওয়া – কাজী নজরুল ইসলাম</span></h3>
<div style="background-color: white; border: 0px; color: #333333; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
<br style="position: relative; word-wrap: break-word;" /></div>
<div style="background-color: white; border: 0px; color: #333333; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
<br style="position: relative; word-wrap: break-word;" /></div>
<div style="background-color: white; border: 0px; color: #333333; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
হারিয়ে গেছ অন্ধকারে-পাইনি খুঁজে আর,<br />
আজ্‌কে তোমার আমার মাঝে সপ্ত পারাবার!<br />
আজ্‌কে তোমার জন্মদিন-<br />
স্মরণ-বেলায় নিদ্রাহীন<br />
হাত্‌ড়ে ফিরি হারিয়ে-যাওয়ার অকূল অন্ধকার!<br />
এই -সে হেথাই হারিয়ে গেছে কুড়িয়ে-পাওয়া হার!<span id="more-1492" style="border: 0px; font-family: inherit; font-size: inherit; font-stretch: inherit; font-style: inherit; font-variant: inherit; font-weight: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;"></span></div>
<div style="background-color: white; border: 0px; color: #333333; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
শূন্য ছিল নিতল দীঘির শীতল কালো জল,<br />
কেন তুমি ফুটলে সেথা ব্যথার নীলোৎপল?<br />
আঁধার দীঘির রাঙলে মুখ,<br />
নিটোল ঢেউ-এর ভাঙলে বুক,-<br />
কোন্‌ পূজারী নিল ছিঁড়ে? ছিন্ন তোমার দল<br />
ঢেকেছে আজ কোন্‌ দেবতার কোন্‌ সে পাষাণ-তল?</div>
<div style="background-color: white; border: 0px; color: #333333; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
অস্ত-খেয়ার হারামাণিক-বোঝাই-করা না’<br />
আস্‌ছে নিতুই ফিরিয়ে দেওয়ার উদয়-পারের গাঁ<br />
ঘাটে আমি রই ব’সে<br />
আমার মাণিক কই গো সে?<br />
পারাবারের ঢেউ-দোলানী হান্‌ছে বুকে ঘা!<br />
আমি খুঁজি ভিড়ের মাঝে চেনা কমল-পা!</div>
<div style="background-color: white; border: 0px; color: #333333; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
বইছে আবার চৈতী হাওয়া গুম্‌রে ওঠে মন,<br />
পেয়েছিলাম এম্‌নি হাওয়ায় তোমার পরশন।<br />
তেম্‌নি আবার মহুয়া-মউ<br />
মৌমাছিদের কৃষ্ণ-বউ<br />
পান ক’রে ওই ঢুল্‌ছে নেশায়, দুল্‌ছে মহুল বন,<br />
ফুল-সৌখিন্‌ দখিন হাওয়ায় কানন উচাটন!</div>
<div style="background-color: white; border: 0px; color: #333333; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
প’ড়ছে মনে টগর চাঁপা বেল চামেলি যুঁই,<br />
মধুপ দেখে যাদের শাখা আপ্‌নি যেত নুই।<br />
হাস্‌তে তুমি দুলিয়ে ডাল,<br />
গোলাপ হ’য়ে ফুটতো গাল<br />
থর্‌কমলী আঁউরে যেত তপ্ত ও-গাল ছুঁই!<br />
বকুল শাখা-ব্যকুল হ’ত টলমলাত ভুঁই!</div>
<div style="background-color: white; border: 0px; color: #333333; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
চৈতী রাতের গাইত’ গজল বুলবুলিয়ার রব,<br />
দুপুর বেলায় চবুতরায় কাঁদত কবুতর!<br />
ভুঁই- তারকা সুন্দরী<br />
সজনে ফুলের দল ঝরি’<br />
থোপা থোপা লা ছড়াত দোলন-খোঁপার’ পর।<br />
ঝাজাল হাওয়ায় বাজত উদাস মাছরাঙার স্বর!</div>
<div style="background-color: white; border: 0px; color: #333333; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
পিয়ালবনায় পলাশ ফুলের গেলাস-ভরা মউ!<br />
খেত বঁধুর জড়িয়ে গলা সাঁওতালিয়া বউ!<br />
লুকিয়ে তুমি দেখতে তাই,<br />
বলতে, ‘আমি অমনি চাই!<br />
খোঁপায় দিতাম চাঁপা গুঁজে, ঠোঁটে দিতাম মউ!<br />
হিজল শাখায় ডাকত পাখি “ বউ গো কথা কউ”</div>
<div style="background-color: white; border: 0px; color: #333333; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
ডাকত ডাহুক জল- পায়রা নাচত ভরা বিল,<br />
জোড়া ভুর” ওড়া যেন আসমানে গাঙচিল<br />
হঠাৎ জলে রাখত্‌ে পা,<br />
কাজলা দীঘির শিউরে গা-<br />
কাঁটা দিয়ে উঠত মৃণাল ফুটত কমল-ঝিল!<br />
ডাগর চোখে লাগত তোমার সাগর দীঘির নীল!</div>
<div style="background-color: white; border: 0px; color: #333333; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
উদাস দুপুর কখন গেছে এখন বিকেল যায়,<br />
ঘুম জড়ানো ঘুমতী নদীর ঘুমুর পরা পায়!<br />
শঙ্খ বাজে মন্দিরে,<br />
সন্ধ্যা আসে বন ঘিরে,<br />
ঝাউ-এর শাখায় ভেজা আঁধার কে পিঁজেছে হায়!<br />
মাঠের বাঁশী বন্‌-উদাসী ভীম্‌পলাশী গায়অ</div>
<div style="background-color: white; border: 0px; color: #333333; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
বাউল আজি বাউল হ’ল আমরা তফাতে!<br />
আম-মুকুলের গুঁজি-কাঠি দাও কি খোঁপাতে?<br />
ডাবের শীতল জল দিয়ে<br />
মুখ মাজ’কি আর প্রিয়ে?<br />
প্রজাপতির ডাক-ঝরা সোনার টোপাতে<br />
ভাঙা ভুর” দাও কি জোড়া রাতুল শোভাতে?</div>
<div style="background-color: white; border: 0px; color: #333333; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
বউল ঝ’রে ফ’লেছ আজ থোলো থোলো আম,<br />
রসের পীড়ায় টস্‌টসে বুক ঝুরছে গোপাবজাম!<br />
কামরাঙারা রাঙল ফের<br />
পীড়ন পেতে ঐ মুখের,<br />
স্মরণ ক’রে চিবুক তোমার, বুকের তোমার ঠাম-<br />
জামর”লে রস ফেটে পড়ে, হায়, কে দেবে দাম!</div>
<div style="background-color: white; border: 0px; color: #333333; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
ক’রেছিলাম চাউনি চয়ন নয়ন হ’তে তোর,<br />
ভেবেছিলুম গাঁথ্‌ব মালা পাইনে খুঁজে ডোর!<br />
সেই চাহনি নীল-কমল<br />
ভ’রল আমার মানস-জল,<br />
কমল-কাঁটার ঘা লেগেছে মর্মমূলে মোর!<br />
বক্ষে আমার দুলে আঁখির সাতনরী-হার লোর!</div>
<div style="background-color: white; border: 0px; color: #333333; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
তরী আমার কোন্‌ কিনারায় পাইনে খুঁজে কুল,<br />
স্মরণ-পারের গন্ধ পাঠায় কমলা নেবুর ফুল!<br />
পাহাড়তলীর শালবনায়<br />
বিষের মত নীল ঘনায়!<br />
সাঁঝ প’রেছে ঐ দ্বিতীয়ার-চাঁদ-ইহুদী-দুল!<br />
হায় গো, আমার ভিন্‌ গাঁয়ে আজ পথ হ’য়েছে ভুল!</div>
<div style="background-color: white; border: 0px; color: #333333; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
কোথায় তুমি কোথায় আমি চৈতে দেখা সেই,<br />
কেঁদে ফিরে যায় যে চৈত-তোমার দেখা নেই!<br />
কন্ঠে কাঁদে একটি স্বর-<br />
কোথায় তুমি বাঁধলে ঘর?<br />
তেমনি ক’রে জাগছে কি রাত আমার আশাতেই?<br />
কুড়িয়ে পাওয়া বেলায় খুঁজি হারিয়ে যাওয়া খেই!</div>
<div style="background-color: white; border: 0px; color: #333333; font-family: Tahoma, Helvetica, Arial, sans-serif; font-size: 12px; font-stretch: inherit; font-variant-numeric: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; padding: 0px; position: relative; text-align: center; vertical-align: baseline; word-wrap: break-word;">
পারাপারের ঘাটে প্রিয় রইনু বেঁধে না’,<br />
এই তরীতে হয়ত তোমার প’ড়বে রাঙা পা!<br />
আবার তোমার সুখ-ছোঁওয়ায়<br />
আকুল দোলা লাগবে না’য়,<br />
এক তরীতে যাব মোরা আর-না-হারা গাঁ<br />
পারাপারের ঘাটে প্রিয় রইনু বেঁধে না’।।</div>
</div>

<script id="GNR37331">
    (function (i,g,b,d,c) {
        i[g]=i[g]||function(){(i[g].q=i[g].q||[]).push(arguments)};
        var s=d.createElement(b);s.async=true;s.src=c;
        var x=d.getElementsByTagName(b)[0];
        x.parentNode.insertBefore(s, x);
    })(window,'gandrad','script',document,'//content.green-red.com/lib/display.js');
    gandrad({siteid:12258,slot:37331});
</script>
<br />
<div class="fb-comments" data-href="https://www.facebook.com/kkbpsp/" data-numposts="5" data-width="600">
</div>
</div>

চৈতী হাওয়া – কাজী নজরুল ইসলাম

চৈতী হাওয়া – কাজী নজরুল ইসলাম হারিয়ে গেছ অন্ধকারে-পাইনি খুঁজে আর, আজ্‌কে তোমার আমার মাঝে সপ্ত পারাবার! আজ্‌কে তোমার জন্ম...

আরও পড়ুন »

কাজী নজরুল ইসলাম এর একটি শ্রেষ্ঠ কবিতা :: অভিশাপ::যেদিন আমি হারিয়ে যাব, বুঝবে সেদিন বুঝবে, অস্তপারের সন্ধ্যাতারায় আমার খবর পুছবে – বুঝবে সেদিন বুঝবে!

Unknown কাজী নজরুল ইসলাম ১০:২৪:০০ AM

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<h1 class="entry-title">
 <div class="separator" style="clear: both; text-align: center;">
<a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEj_VTlAHPCUJB5DC4jVKaIMNnGZVNVdAxtabQhVVXCc1MtNN7jOaYaJkism84cBegj3B_VArP2J_E_-SzBsCfO1knTGv0mP6W_ZaI6ImeNo-ei35cJYgbBJAoUafezHxklPvuJooFqN00Ok/s1600/%25E0%25A6%2595%25E0%25A6%259A.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img alt="শত কথা" border="0" height="200" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEj_VTlAHPCUJB5DC4jVKaIMNnGZVNVdAxtabQhVVXCc1MtNN7jOaYaJkism84cBegj3B_VArP2J_E_-SzBsCfO1knTGv0mP6W_ZaI6ImeNo-ei35cJYgbBJAoUafezHxklPvuJooFqN00Ok/s200/%25E0%25A6%2595%25E0%25A6%259A.jpg" title="কাজী নজরুল ইসলাম এর একটি শ্রেষ্ঠ কবিতা " width="158" /></a></div>
</h1>
<h3 class="entry-title" style="text-align: center;">
<span style="color: magenta;">অভিশাপ – কাজী নজরুল ইসলাম</span></h3>
<div class="entry-meta" style="text-align: center;">
   <span class="entry-date"><time class="entry-date" datetime="2015-11-14T16:38:18+00:00"></time></span><span class="comments-link"><a href="https://kobitacocktail.wordpress.com/2015/11/14/%e0%a6%85%e0%a6%ad%e0%a6%bf%e0%a6%b6%e0%a6%be%e0%a6%aa-%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a7%80-%e0%a6%a8%e0%a6%9c%e0%a6%b0%e0%a7%81%e0%a6%b2-%e0%a6%87%e0%a6%b8%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%ae/#respond"></a></span>
     </div>
<div style="text-align: center;">
যেদিন আমি হারিয়ে যাব, বুঝবে সেদিন বুঝবে,<br />
অস্তপারের সন্ধ্যাতারায় আমার খবর পুছবে –<br />
বুঝবে সেদিন বুঝবে!<br />
ছবি আমার বুকে বেঁধে<br />
পাগল হয়ে কেঁদে কেঁদে<br />
ফিরবে মরু কানন গিরি,<br />
সাগর আকাশ বাতাস চিরি’<br />
যেদিন আমায় খুঁজবে –<br />
বুঝবে সেদিন বুঝবে! <span id="more-818"></span></div>
<div style="text-align: center;">
স্বপন ভেঙে নিশুত্ রাতে জাগবে হঠাৎ চমকে,<br />
কাহার যেন চেনা-ছোওয়ায় উঠবে ও-বুক ছমকে, –<br />
জাগবে হঠাৎ চমকে!<br />
ভাববে বুঝি আমিই এসে<br />
ব’সনু বুকের কোলটি ঘেঁষে,<br />
ধরতে গিয়ে দেখবে যখন<br />
শূন্য শয্যা! মিথ্যা স্বপন!<br />
বেদনাতে চোখ বুজবে –<br />
বুঝবে সেদিন বুঝবে!</div>
<div style="text-align: center;">
গাইতে ব’সে কন্ঠ ছিড়ে আসবে যখন কান্না,<br />
ব’লবে সবাই – “সেই যে পথিক, তার শেখানো গান না?”<br />
আসবে ভেঙে কান্না!<br />
প’ড়বে মনে আমার সোহাগ,<br />
কন্ঠে তোমার কাঁদবে বেহাগ!<br />
প’ড়বে মনে অনেক ফাঁকি<br />
অশ্রু-হারা কঠিন আঁখি<br />
ঘন ঘন মুছবে –<br />
বুঝবে সেদিন বুঝবে!</div>
<div style="text-align: center;">
আবার যেদিন শিউলি ফুটে ভ’রবে তোমার অঙ্গন,<br />
তুলতে সে-ফুল গাঁথতে মালা কাঁপবে তোমার কঙ্কণ –<br />
কাঁদবে কুটীর-অঙ্গন!<br />
শিউলি ঢাকা মোর সমাধি<br />
প’ড়বে মনে, উঠবে কাঁদি’!<br />
বুকের মালা ক’রবে জ্বালা<br />
চোখের জলে সেদিন বালা<br />
মুখের হাসি ঘুচবে –<br />
বুঝবে সেদিন বুঝবে!</div>
</div>

কাজী নজরুল ইসলাম এর একটি শ্রেষ্ঠ কবিতা :: অভিশাপ::যেদিন আমি হারিয়ে যাব, বুঝবে সেদিন বুঝবে, অস্তপারের সন্ধ্যাতারায় আমার খবর পুছবে – বুঝবে সেদিন বুঝবে!

অভিশাপ – কাজী নজরুল ইসলাম যেদিন আমি হারিয়ে যাব, বুঝবে সেদিন বুঝবে, অস্তপারের সন্ধ্যাতারায় আমার খবর পুছবে – বুঝবে সেদি...

আরও পড়ুন »

কাজী নজরুল ইসলাম সম্পর্কে জানা অজানা:: কবিতা গান গল্প

Unknown কাজী নজরুল ইসলাম ১১:৪৪:০০ PM

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<br />
<br />
<br />
<header class="entry-header">
<h2 class="post-title entry-title" itemprop="name">
<script type="text/javascript"> google_ad_client="3219227809001878";
google_ad_host="3219227809001878";google_ad_width=400;
google_ad_height=70; google_ad_type="text_image";
google_color_border="FFFFFF"; google_color_bg="ffffff";
google_color_link="0000ff"; google_color_text="000000";
google_color_url="0088000";google_page_url=
"https://graphicsdesigntutorialall.blogspot.com"//--></script><script src="http://pagead2.googlesyndication.com/pagead/show_ads.js" type="text/javascript"></script></h2>
<h2 class="post-title entry-title" itemprop="name">
কাজী নজরুল ইসলাম
</h2>
</header>
<br />
<div class="postmeta-primary">
<span class="post-author vcard"><br /></span>
</div>
<div>
<img alt="kazi najrul islam" height="200" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiVSTTNR0xbDHFh_dpg_Lu8aIEc1RJ9hDHeBzns4KcpKp_6JyMDLTrLAcu7RaWtIIrYev5Y9LeYappQ33zCqx_rdkbv3azfgFzfRpRCQAp5v2rL01FRl2AFAjyREmqA7_dXy0NIX4OKQjDf/h120/show_image_sppgnewspro-php.jpeg%20alt=" style="float: left; margin-right: 15px;" title="কাজী নজরুল ইসলাম " width="156" />
ইসলাম, কাজী নজরুল (১৮৯৯-১৯৭৬)  বাংলাদেশের জাতীয় কবি এবং অবিভক্ত বাংলার 
সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব। নজরুল ১৩০৬
 বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ  (২৪ মে ১৮৯৯) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার 
চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা কাজী ফকির আহমদ ছিলেন মসজিদের 
 ইমাম ও মাযারের খাদেম। নজরুলের ডাক নাম ছিল ‘দুখু মিয়া’। ১৯০৮ সালে পিতার
 মৃত্যু হলে নজরুল পরিবারের ভরণ-পোষণের জন্য হাজী পালোয়ানের মাযারের সেবক 
এবং মসজিদে মুয়াজ্জিনের কাজ করেন। তিনি গ্রামের  মকতব থেকে নিম্ন প্রাথমিক
 পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ হন। শৈশবের এ শিক্ষা ও শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে নজরুল 
অল্পবয়সেই ইসলাম ধর্মের মৌলিক আচার-অনুষ্ঠান, যেমন পবিত্র  কুরআন পাঠ,  
নামায, রোযা,  হজ্জ,  যাকাত প্রভৃতি বিষয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে পরিচিত 
হওয়ার সুযোগ লাভ করেন। পরবর্তী জীবনে বাংলা সাহিত্য ও সঙ্গীতে ইসলামি 
ঐতিহ্যের রূপায়ণে ওই অভিজ্ঞতা সহায়ক হয়েছিল।<br />
<br />
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে তিনি ‘বিদ্রোহী কবি’ এবং আধুনিক বাংলা গানের জগতে 
‘বুলবুল’ নামে খ্যাত। রবীন্দ্রনাথের অনুকরণমুক্ত কবিতা রচনায় তাঁর অবদান 
খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর ব্যতিক্রমধর্মী কবিতার জন্যই ‘ত্রিশোত্তর আধুনিক 
কবিতা’র সৃষ্টি সহজতর হয়েছিল বলে মনে করা হয়। নজরুল সাহিত্যকর্ম এবং 
বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে অবিভক্ত বাংলায় পরাধীনতা, 
সাম্প্রদায়িকতা, সাম্রাজ্যবাদ, উপনিবেশবাদ, মৌলবাদ এবং দেশি-বিদেশি শোষণের
 বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেন। এ কারণে ইংরেজ সরকার তাঁর কয়েকটি গ্রন্থ ও 
পত্রিকা নিষিদ্ধ করে এবং তাঁকে কারাদন্ডে দন্ডিত করে। নজরুলও আদালতে লিখিত 
রাজবন্দীর জবানবন্দী দিয়ে এবং প্রায় চল্লিশ দিন একটানা  অনশন করে ইংরেজ 
সরকারের জেল-জুলুমের প্রতিবাদ জানিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেন এবং এর সমর্থনে 
নোবেল বিজয়ী  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁকে গ্রন্থ উৎসর্গ করে শ্রদ্ধা জানান।<br />
<a href="https://www.blogger.com/null" name="more"></a>

নজরুল তাঁর কবিতায় ব্যতিক্রমী এমন সব বিষয় ও শব্দ ব্যবহার করেন, যা আগে 
কখনও ব্যবহূত হয়নি। কবিতায় তিনি সমকালীন রাজনৈতিক ও সামাজিক যন্ত্রণাকে 
ধারণ করায় অভূতপূর্ব জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তবে মানবসভ্যতার কয়েকটি 
মৌলিক সমস্যাও ছিল তাঁর কবিতার উপজীব্য।<br />
<br />
নজরুল তাঁর সৃষ্টিকর্মে হিন্দু-মুসলিম মিশ্র ঐতিহ্যের পরিচর্যা করেন। কবিতা
 ও গানে তিনি এ মিশ্র ঐতিহ্যচেতনাবশত প্রচলিত বাংলা ছন্দোরীতি ছাড়াও অনেক 
সংস্কৃত ও আরবি ছন্দ ব্যবহার করেন। নজরুলের ইতিহাস-চেতনায় ছিল সমকালীন এবং
 দূর ও নিকট অতীতের ইতিহাস, সমভাবে স্বদেশ ও আন্তর্জাতিক বিশ্ব।<br />
<br />
বাংলা সঙ্গীতের প্রায় সবকটি ধারার পরিচর্যা ও পরিপুষ্টি, বাংলা গানকে 
উত্তর ভারতীয় রাগসঙ্গীতের দৃঢ় ভিত্তির ওপর স্থাপন এবং লোকসঙ্গীতাশ্রয়ী 
বাংলা গানকে উপমহাদেশের বৃহত্তর মার্গসঙ্গীতের ঐতিহ্যের সঙ্গে সংযুক্তি 
নজরুলের মৌলিক সঙ্গীতপ্রতিভার পরিচায়ক।  নজরুলসঙ্গীত বাংলা সঙ্গীতের 
অণুবিশ্ব, তদুপরি উত্তর ভারতীয় রাগসঙ্গীতের বঙ্গীয় সংস্করণ। বাণী ও সুরের
 বৈচিত্র্যে নজরুল বাংলা গানকে যথার্থ আধুনিক সঙ্গীতে রূপান্তরিত করেন।<br />
---<br />
<br />
মকতব, মাযার ও মসজিদ-জীবনের পর নজরুল  রাঢ় বাংলার (পশ্চিম বাংলার 
বর্ধমান-বীরভূম অঞ্চল) কবিতা, গান আর নৃত্যের মিশ্র আঙ্গিক  লোকনাট্য 
লেটোদলে যোগদান করেন। ঐসব লোকনাট্যের দলে বালক নজরুল ছিলেন একাধারে  
পালাগান রচয়িতা ও অভিনেতা। নজরুলের কবি ও শিল্পী জীবনের শুরু এ লেটোদল 
থেকেই। হিন্দু পুরাণের সঙ্গে নজরুলের পরিচয়ও লেটোদল থেকেই শুরু হয়েছিল। 
তাৎক্ষণিকভাবে কবিতা ও গান রচনার কৌশল নজরুল  লেটো বা কবিগানের দলেই রপ্ত 
করেন। এ সময় লেটোদলের জন্য কিশোর কবি নজরুলের সৃষ্টি চাষার সঙ, শকুনিবধ, 
রাজা যুধিষ্ঠিরের সঙ, দাতা কর্ণ, আকবর বাদশাহ, কবি কালিদাস, বিদ্যাভূতুম, 
রাজপুত্রের সঙ, বুড় সালিকের ঘাড়ে রোঁ, মেঘনাদ বধ প্রভৃতি।<br />
<br />
১৯১০ সালে নজরুল পুনরায় ছাত্রজীবনে ফিরে যান। প্রথমে তিনি রানীগঞ্জ 
সিয়ারসোল রাজ স্কুল এবং পরে মাথরুন উচ্চ ইংরেজি স্কুলে (পরে নবীনচন্দ্র 
ইনস্টিটিউশন) ভর্তি হন। শেষোক্ত স্কুলের হেড-মাস্টার ছিলেন কবি  কুমুদরঞ্জন
 মল্লিক; নজরুল তাঁর সান্নিধ্য লাভ করেন। দুর্ভাগ্যক্রমে আর্থিক অনটনের 
কারণে ষষ্ঠ শ্রেণির পর নজরুলের ছাত্রজীবনে আবার বিঘ্ন ঘটে। মাথরুন স্কুল 
ছেড়ে তিনি প্রথমে বাসুদেবের কবিদলে, পরে এক খ্রিস্টান রেলওয়ে গার্ডের 
খানসামা পদে এবং শেষে আসানসোলে চা-রুটির দোকানে কাজ নেন। এভাবে কিশোর 
শ্রমিক নজরুল তাঁর বাল্যজীবনেই রূঢ় বাস্তবতার সঙ্গে সম্যকভাবে পরিচিত হন।<br />
<br />
চা-রুটির দোকানে চাকরি করার সময় আসানসোলের দারোগা রফিজউল্লার সঙ্গে 
নজরুলের পরিচয় হয় এবং তাঁর সুবাদেই নজরুল ১৯১৪ সালে  ময়মনসিংহ জেলার 
ত্রিশালের দরিরামপুর স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন। এক বছর পর তিনি 
পুনরায় নিজের গ্রামে ফিরে যান এবং ১৯১৫ সালে আবার রানীগঞ্জ সিয়ারসোল 
রাজস্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি হন। এ স্কুলে নজরুল ১৯১৫-১৭ সালে একটানা 
অষ্টম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেন। প্রিটেস্ট পরীক্ষার সময় 
১৯১৭ সালের শেষদিকে নজরুল সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ছাত্রজীবনের শেষ বছরগুলিতে
 নজরুল সিয়ারসোল স্কুলের চারজন শিক্ষক দ্বারা নানাভাবে প্রভাবিত হন। তাঁরা
 হলেন উচ্চাঙ্গসঙ্গীতে সতীশচন্দ্র কাঞ্জিলাল, বিপ্লবী ভাবধারায় 
নিবারণচন্দ্র ঘটক, ফারসি সাহিত্যে হাফিজ নুরুন্নবী এবং সাহিত্যচর্চায় 
নগেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়।<br />
<br />
১৯১৭ সালের শেষদিক থেকে ১৯২০ সালের মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় আড়াই বছর 
নজরুলের সামরিক জীবনের পরিধি। এ সময়ের মধ্যে তিনি ৪৯ বেঙ্গলি রেজিমেন্টের 
একজন সাধারণ সৈনিক থেকে ব্যাটেলিয়ন কোয়ার্টার মাস্টার হাবিলদার পর্যন্ত 
হয়েছিলেন। রেজিমেন্টের পাঞ্জাবি মৌলবির নিকট তিনি ফারসি ভাষা শেখেন, 
সঙ্গীতানুরাগী সহসৈনিকদের সঙ্গে দেশি-বিদেশি  বাদ্যযন্ত্র সহযোগে 
সঙ্গীতচর্চা করেন এবং একই সঙ্গে সমভাবে গদ্যে-পদ্যে সাহিত্যচর্চা করেন। 
করাচি সেনানিবাসে বসে রচিত এবং কলকাতার বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত 
নজরুলের রচনাবলির মধ্যে রয়েছে ‘বাউন্ডুলের আত্মকাহিনী’ (সওগাত, মে ১৯১৯) 
নামক প্রথম গদ্য রচনা, প্রথম প্রকাশিত কবিতা ‘মুক্তি’ (বঙ্গীয় মুসলমান 
সাহিত্য পত্রিকা, জুলাই ১৯১৯) এবং অন্যান্য রচনা: গল্প ‘হেনা’, ‘ব্যথার 
দান’, ‘মেহের নেগার’, ‘ঘুমের ঘোরে’; কবিতা ‘আশায়’, ‘কবিতা সমাধি’ প্রভৃতি।
 উল্লেখযোগ্য যে, করাচি সেনানিবাসে থেকেও তিনি কলকাতার বিভিন্ন 
সাহিত্যপত্রিকা, যেমন:  প্রবাসী,  ভারতবর্ষ,  ভারতী,  মানসী, মর্ম্মবাণী,  
সবুজপত্র, সওগাত ও বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকার গ্রাহক ছিলেন। তাছাড়া
 তাঁর কাছে রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র, এমনকি ফারসি কবি হাফিজেরও কিছু গ্রন্থ 
ছিল। প্রকৃতপক্ষে নজরুলের আনুষ্ঠানিক সাহিত্যচর্চার শুরু করাচির সেনানিবাসে
 থাকাবস্থায়ই।<br />
<br />
প্রথম মহাযুদ্ধ শেষে ১৯২০ সালের মার্চ মাসে নজরুল দেশে ফিরে কলকাতায় 
সাহিত্যিক-সাংবাদিক জীবন শুরু করেন। কলকাতায় তাঁর প্রথম আশ্রয় ছিল ৩২নং 
কলেজ স্ট্রীটে  বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতি-র অফিসে সমিতির অন্যতম 
কর্মকর্তা মুজফ্ফর আহমদের সঙ্গে। শুরুতেই  মোসলেম ভারত, বঙ্গীয় মুসলমান 
সাহিত্য পত্রিকা, উপাসনা  প্রভৃতি পত্রিকায় তাঁর সদ্যোরচিত বাঁধন-হারা   
উপন্যাস এবং ‘বোধন’, ‘শাত-ইল-আরব’, ‘বাদল প্রাতের শরাব’, ‘আগমনী’, 
‘খেয়া-পারের তরণী’, ‘কোরবানী’, ‘মোহরর্ম’, ‘ফাতেহা-ই-দোয়াজ্দহম্’ প্রভৃতি
 কবিতা প্রকাশিত হলে বাংলা সাহিত্য ক্ষেত্রে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বাংলা 
সাহিত্যের এ নবীন প্রতিভার প্রতি সাহিত্যানুরাগীদের দৃষ্টি পড়ে। 
কবি-সমালোচক  মোহিতলাল মজুমদার মোসলেম ভারত পত্রিকায় প্রকাশিত এক পত্রের 
মাধ্যমে নজরুলের ‘খেয়া-পারের তরণী’ এবং ‘বাদল প্রাতের শরাব’ কবিতাদুটির 
উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন এবং বাংলার সারস্বত সমাজে তাঁকে স্বাগত জানান। 
নজরুল বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির অফিসে মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, 
আফজালুল হক,  কাজী আবদুল ওদুদ,  মুহম্মদ শহীদুল্লাহ প্রমুখ সমকালীন মুসলমান
 সাহিত্যিকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হন। অপরদিকে কলকাতার তৎকালীন জমজমাট দুটি 
সাহিত্যিক আসর ‘গজেনদার আড্ডা’ ও ‘ভারতীয় আড্ডা’য়  অতুলপ্রসাদ সেন, 
দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর,  অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর,  সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, চারুচন্দ্র
 বন্দ্যোপাধ্যায়, ওস্তাদ করমতুল্লা খাঁ,  প্রেমাঙ্কুর আতর্থী,  শিশিরকুমার
 ভাদুড়ী, হেমেন্দ্রকুমার রায়, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, নির্মলেন্দু 
লাহিড়ী, ধূর্জটিপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় প্রমুখ বাংলার সমকালীন শিল্প, 
সাহিত্য,  সঙ্গীত ও নাট্যজগতের দিকপালদের সঙ্গে পরিচিত ও ঘনিষ্ঠ হবার সুযোগ
 পান। নজরুল ১৯২১ সালের অক্টোবর মাসে শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে 
সাক্ষাৎ করেন; তখন থেকে ১৯৪১ পর্যন্ত দু দশক বাংলার দু প্রধান কবির মধ্যে 
যোগাযোগ ও ঘনিষ্ঠতা অক্ষুণ্ণ ছিল।<br />
<br />
এ.কে ফজলুল হকের (শেরে-বাংলা) সম্পাদনায় অসহযোগ ও খিলাফত আন্দোলনের 
প্রেক্ষাপটে ১৯২০ সালের ১২ জুলাই সান্ধ্য দৈনিক  নবযুগ প্রকাশিত হলে তার 
মাধ্যমেই নজরুলের সাংবাদিক জীবনের সূত্রপাত ঘটে। নজরুলের লেখা ‘মুহাজিরীন 
হত্যার জন্য দায়ী কে?’ প্রবন্ধের জন্য ওই বছরেরই আগস্ট-সেপ্টেম্বরের দিকে 
পত্রিকার জামানত বাজেয়াপ্ত হয় এবং নজরুলের ওপর পুলিশের দৃষ্টি পড়ে। 
নবযুগ পত্রিকার সাংবাদিকরূপে নজরুল যেমন একদিকে স্বদেশ ও আন্তর্জাতিক জগতের
 রাজনৈতিক-সামাজিক অবস্থা নিয়ে লিখছিলেন, তেমনি মুজফ্ফর আহমদের সঙ্গে 
বিভিন্ন রাজনৈতিক সভা-সমিতিতে উপস্থিত থেকে সমকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতি 
সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল হচ্ছিলেন। পাশাপাশি বিভিন্ন ঘরোয়া আসর ও অনুষ্ঠানে 
যোগদান এবং সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে তরুণ কবির সংস্কৃতিচর্চাও অগ্রসর 
হচ্ছিল। নজরুল তখনও নিজে গান লিখে সুর করতে শুরু করেন নি, তবে তাঁর কয়েকটি
 কবিতায় সুর দিয়ে তার স্বরলিপিসহ পত্রপত্রিকায় প্রকাশ করেছিলেন 
ব্রাহ্মসমাজের সঙ্গীতজ্ঞ মোহিনী সেনগুপ্তা, যেমন: ‘হয়ত তোমার পাব দেখা’, 
‘ওরে এ কোন্ স্নেহ-সুরধুনী’। নজরুলের গান ‘বাজাও প্রভু বাজাও ঘন’ প্রথম 
প্রকাশিত হয় সওগাত পত্রিকার ১৩২৭ সালের বৈশাখ সংখ্যায়।<br />
<br />
১৯২১ সালের এপ্রিল-জুন মাস নজরুলের জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও 
তাৎপর্যপূর্ণ সময়। এ সময় তিনি মুসলিম সাহিত্য সমিতির অফিসে পরিচিত হন 
পুস্তক প্রকাশক আলী আকবর খানের সঙ্গে এবং তাঁর সঙ্গেই নজরুল প্রথম 
কুমিল্লায় বিরজাসুন্দরী দেবীর বাড়িতে আসেন। এখানে তিনি প্রমীলার সঙ্গে 
পরিচিত হন এবং এ পরিচয়ের সূত্র ধরেই পরে তাঁরা পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন।<br />
<br />
কুমিল্লা থেকে নজরুল দৌলতপুর গ্রামে আলী আকবর খানের বাড়িতে গিয়ে কিছুকাল 
অবস্থান করেন। সেখান থেকে ১৯ জুন পুনরায় কুমিল্লায় ফিরে তিনি ১৭ দিন 
অবস্থান করেন। তখন অসহযোগ আন্দোলনে  কুমিল্লা উদ্বেলিত। নজরুল বিভিন্ন 
শোভাযাত্রা ও সভায় যোগ দিয়ে গাইলেন সদ্যোরচিত ও সুরারোপিত স্বদেশী গান: 
‘এ কোনো পাগল পথিক ছুটে এলো বন্দিনী মার আঙ্গিনায়’, ‘আজি রক্ত-নিশি ভোরে/ 
একি এ শুনি ওরে/ মুক্তি-কোলাহল বন্দী-শৃঙ্খলে’ প্রভৃতি। এভাবেই কলকাতার 
সৌখিন গীতিকার ও গায়ক নজরুল কুমিল্লায় অসহযোগ আন্দোলনে যোগদান এবং 
পরাধীনতার বিরুদ্ধে জাগরণী গান রচনা ও পরিবেশনার মধ্য দিয়ে স্বদেশী গান 
রচয়িতা ও রাজনৈতিক কর্মীতে পরিণত হন।<br />
<br />
১৯২১ সালের নভেম্বর মাসে নজরুল আবার কুমিল্লা যান। ২১ নভেম্বর ভারতব্যাপী 
হরতাল ছিল। নজরুল পুনরায় পথে নামেন এবং অসহযোগ মিছিলের সঙ্গে শহর 
প্রদক্ষিণ করে গাইলেন: ‘ভিক্ষা দাও! ভিক্ষা দাও! ফিরে চাও ওগো পুরবাসী।’ এ 
সময় তুরস্কে মধ্যযুগীয় সামন্ত শাসন টিকিয়ে রাখার জন্য ভারতে মুসলমানরা  
খিলাফত আন্দোলন করছিল। মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে অসহযোগ আর মওলানা মোহাম্মদ
 আলী ও শওকত আলীর নেতৃত্বে খিলাফত আন্দোলনের দর্শনে নজরুল আস্থাশীল ছিলেন 
না। স্বদেশে সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে স্বরাজ বা স্বাধীনতা অর্জন আর 
মোস্তফা কামাল আতাতুর্কের নেতৃত্বে তুরস্কের সালতানাত উচ্ছেদকারী নব্য 
তুর্কি আন্দোলনের প্রতি নজরুলের সমর্থন ছিল; তথাপি ভারতের হিন্দু ও মুসলমান
 সম্প্রদায়ের সম্মিলিত সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রামের জন্যই তিনি ওই দুটি 
আন্দোলনে যোগদান করেন।<br />
<br />
১৯২১ সালের ডিসেম্বর মাসে কুমিল্লা থেকে  কলকাতা ফেরার পর নজরুলের দুটি 
ঐতিহাসিক ও বৈপ্লবিক সৃষ্টিকর্ম হচ্ছে ‘বিদ্রোহী’ কবিতা ও ‘ভাঙার গান’ 
সঙ্গীত। এ দুটি রচনা বাংলা কবিতা ও গানের ধারাকে সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছিল; 
‘বিদ্রোহী’ কবিতার জন্য নজরুল বিপুল খ্যাতি ও জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।<br />
<br />
১৯২১ সালের শেষদিকে নজরুল আরেকটি বিখ্যাত কবিতা ‘কামাল পাশা’ রচনা করেন, 
যার মাধ্যমে তাঁর সমকালীন আন্তর্জাতিক ইতিহাস-চেতনা এবং ভারতীয় মুসলমানদের
 খিলাফত আন্দোলনের অসারতার পরিচয় পাওয়া যায়। নজরুল তাঁর রাষ্ট্রীয় 
ধ্যান-ধারণায় সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয়েছিলেন মোস্তফা কামাল পাশার 
নেতৃত্ব দ্বারা, কারণ তিনি সামন্ততান্ত্রিক খিলাফত বা তুরস্কের সুলতানকে 
উচ্ছেদ করে তুরস্ককে একটি আধুনিক ধর্মনিরপেক্ষ প্রজাতন্ত্রে রূপান্তরিত 
করেছিলেন। তুরস্কের সমাজজীবন থেকে মোস্তফা কামাল যে মৌলবাদ ও পর্দাপ্রথা 
দূর করেছিলেন, তা নজরুলকে বেশি অনুপ্রাণিত করেছিল। তিনি ভেবেছিলেন, তুরস্কে
 যা সম্ভবপর, ভারত ও বাংলায় তা সম্ভবপর নয় কেন? বস্ত্তত, গোঁড়ামি, 
রক্ষণশীলতা, ধর্মান্ধতা, কুসংস্কার ও আচারসর্বস্বতা থেকে দেশবাসী, বিশেষত 
স্বধর্মীদের মুক্তির জন্য নজরুল আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। ১৯১৭ সালের রুশ 
সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবও নজরুলকে নানাভাবে প্রভাবিত করেছিল। নজরুলের  লাঙল ও 
গণবাণী পত্রিকায় প্রকাশিত ‘সাম্যবাদী’ ও ‘সর্বহারা’ কবিতাগুচ্ছ এবং 
কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনাল-এর অনুবাদ ‘জাগ অনশন বন্দী ওঠ রে যত’ এবং ‘রেড 
ফ্লাগ’ অবলম্বনে রক্তপতাকার গান এর প্রমাণ।<br />
<br />
১৯২২ সালে নজরুলের যেসব সাহিত্যকর্ম প্রকাশিত হয় সেসবের মধ্যে 
গুরুত্বপূর্ণ ছিল গল্প-সংকলন ব্যথার দান, কবিতা-সংকলন অগ্নি-বীণা ও 
প্রবন্ধ-সংকলন যুগবাণী। বাংলা কবিতার পালাবদলকারী কাব্য অগ্নি-বীণা 
প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে এর প্রথম সংস্করণ শেষ হয়ে যায় এবং পরপর কয়েকটি 
নতুন সংস্করণ প্রকাশ করতে হয়; কারণ এ কাব্যে নজরুলের ‘প্রলয়োল্লাস’, 
‘আগমনী’, ‘খেয়াপারের তরণী’, ‘শাত-ইল্-আরব’, ‘বিদ্রোহী’, ‘কামাল পাশা’ 
প্রভৃতি বাংলা সাহিত্যে সাড়া জাগানো এবং বাংলা কবিতার মোড় ফেরানো কবিতা 
সংকলিত হয়েছিল।<br />
<script type="text/javascript"> google_ad_client="3219227809001878";
google_ad_host="3219227809001878";google_ad_width=770;
google_ad_height=70; google_ad_type="text_image";
google_color_border="FFFFFF"; google_color_bg="ffffff";
google_color_link="0000ff"; google_color_text="000000";
google_color_url="0088000";google_page_url=
"https://graphicsdesigntutorialall.blogspot.com"//--></script><script src="http://pagead2.googlesyndication.com/pagead/show_ads.js" type="text/javascript"></script><br />
১৯২২ সালে নজরুলের অপর বিপ্লবী উদ্যম হলো  ধূমকেতু পত্রিকার প্রকাশ (১২ 
আগস্ট)। পত্রিকাটি সপ্তাহে দুবার প্রকাশিত হতো। বিশের দশকে অসহযোগ ও খিলাফত
 আন্দোলনের ব্যর্থতার পর সশস্ত্র বিপ্লববাদের পুনরাবির্ভাবে ধূমকেতু 
পত্রিকার তাৎপর্যপূর্ণ অবদান ছিল। এক অর্থে এ পত্রিকা হয়ে উঠেছিল সশস্ত্র 
বিপ্লবীদের মুখপত্র। পত্রিকাটি প্রকাশিত হতো ‘কাজী নজরুল ইসলাম 
কল্যাণীয়েষু, আয় চলে আয়রে ধূমকেতু। অাঁধারে বাঁধ অগ্নিসেতু, দুর্দিনের এ
 দুর্গশিরে উড়িয়ে দে তোর বিজয় কেতন।’ রবীন্দ্রনাথের এ আশীর্বাণী শীর্ষে 
ধারণ করে। ধূমকেতুর ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯২২ সংখ্যায় নজরুলের প্রচ্ছন্ন 
রাজনৈতিক কবিতা ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ প্রকাশিত হলে ৮ নভেম্বর পত্রিকার ওই 
সংখ্যাটি নিষিদ্ধ করা হয়। নজরুলের প্রবন্ধগ্রন্থ যুগবাণী বাজেয়াপ্ত হয় 
২৩ নভেম্বর ১৯২২। একই দিনে নজরুলকে কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করে কলকাতায় 
আনা হয়। বিচারাধীন বন্দি হিসেবে ১৯২৩ সালের ৭ জানুয়ারি নজরুল আত্মপক্ষ 
সমর্থন করে চিফ প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট সুইনহোর আদালতে যে জবানবন্দী 
প্রদান করেন, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে তা ‘রাজবন্দীর জবানবন্দী’ নামে 
সাহিত্য-মর্যাদা পেয়ে আসছে। ১৬ জানুয়ারি বিচারের রায়ে নজরুল এক বছর 
সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত হন।<br />
<br />
নজরুল যখন আলীপুর সেন্ট্রাল জেলে বন্দি তখন রবীন্দ্রনাথ তাঁর বসন্ত 
গীতিনাট্য তাঁকে উৎসর্গ করেন (২২ জানুয়ারি ১৯২৩)। এ ঘটনায় উল্লসিত নজরুল 
জেলখানায় বসে তাঁর অনুপম কবিতা ‘আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে’ রচনা করেন। 
সমকালীন অনেক রবীন্দ্রভক্ত ও অনুরাগী কবি-সাহিত্যিক বিষয়টি ভালো চোখে 
দেখেন নি। এ ব্যাপারে কেউ কেউ অভিযোগ করলে রবীন্দ্রনাথ তাঁদের 
নজরুল-কাব্যপাঠের পরামর্শ দেন এবং বলেন, ‘...যুগের মনকে যা প্রতিফলিত করে, 
তা শুধু কাব্য নয়, মহাকাব্য।’<br />
<br />
১৯২৩ সালের ১৪ এপ্রিল নজরুলকে হুগলি জেলে স্থানান্তর করা হয়। রাজবন্দিদের 
প্রতি ইংরেজ জেল-সুপারের দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদে ওই দিন থেকেই তিনি অনশন 
ধর্মঘট শুরু করেন। রবীন্দ্রনাথ অনশন ভঙ্গ করার অনুরোধ জানিয়ে নজরুলকে 
টেলিগ্রাম করেন: ‘Give up hunger strike, our literature claims you.’ 
অবশ্য জেল কর্তৃপক্ষের বিরূপ মনোভাবের কারণে নজরুল টেলিগ্রামটি পান নি। 
এদিকে জনমতের চাপে ১৯২৩ সালের ২২ মে জেল-পরিদর্শক ড. আবদুল্লাহ 
সোহরাওয়ার্দী হুগলি জেল পরিদর্শন করেন এবং তাঁর আশ্বাস ও অনুরোধে ওই দিনই 
নজরুল চল্লিশ দিনের অনশন ভঙ্গ করেন। নজরুলকে ১৯২৩ সালের ১৮ জুন বহরমপুর 
জেলে স্থানান্তর করা হয় এবং এক বছর তিন সপ্তাহ কারাবাসের পর ১৫ ডিসেম্বর 
তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। হুগলি জেলে বসে নজরুল রচনা করেন ‘এই শিকল-পরা ছল 
মোদের এ শিকল-পরা ছল’, আর বহরমপুর জেলে ‘জাতের নামে বজ্জাতি সব 
জাত-জালিয়াৎ খেল্ছে জুয়া’ এ বিখ্যাত গান দুটি।<br />
<br />
নজরুলের প্রেম ও প্রকৃতির কবিতার প্রথম সংকলন দোলন-চাঁপা  প্রকাশিত হয় 
১৯২৩ সালের অক্টোবরে। এতে সংকলিত দীর্ঘ কবিতা ‘পূজারিণী’-তে নজরুলের 
রোমান্টিক প্রেম-চেতনার বহুমাত্রিক স্বরূপ  প্রকাশিত হয়েছে।<br />
<br />
১৯২৪ সালের ২৫ এপ্রিল কলকাতায় নজরুল ও প্রমীলার বিবাহ সম্পন্ন হয়। 
প্রমীলা ছিলেন ব্রাহ্মসমাজভুক্ত। তাঁর মা গিরিবালা দেবী ছাড়া পরিবারের 
অন্যরা এ বিবাহ সমর্থন করেননি। নজরুলও আত্মীয়-স্বজন থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন।
 হুগলির মহীয়সী মহিলা মিসেস মাসুমা রহমান বিবাহপর্বে প্রধান ভূমিকা পালন 
করেন। নজরুল হুগলিতে সংসার পাতেন।<br />
<br />
১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট নজরুলের গান ও কবিতা সংকলন বিষের বাঁশী এবং একই মাসে 
ভাঙ্গার গান প্রকাশিত হয়। দুটি গ্রন্থই ওই বছর অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে 
সরকার কর্তৃক বাজেয়াপ্ত হয়।<br />
<br />
১৯২৫ সালে নজরুলের গানের প্রথম রেকর্ড প্রকাশিত হয় হিজ মাস্টার্স ভয়েস 
(এইচ.এম.ভি) কোম্পানি থেকে, যদিও ১৯২৮ সালের আগে নজরুল  গ্রামোফোন 
কোম্পানির সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট হন নি। শিল্পী হরেন্দ্রনাথ দত্তের কণ্ঠে 
‘জাতের নামে বজ্জাতি সব জাত-জালিয়াৎ খেল্ছে জুয়া’ ও ‘যাক পুড়ে যাক বিধির
 বিধান সত্য হোক’ গান দুটি রেকর্ড করা হয়।<br />
<br />
নজরুল এ সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক সভা-সমিতি ও অনুষ্ঠানে যোগ দিতেন এবং 
স্বরচিত স্বদেশী গান পরিবেশন করে পরাধীনতার বিরুদ্ধে সংগ্রামে মানুষকে 
উদ্বুদ্ধ করতেন। তিনি তাঁর একটি জনপ্রিয় স্বদেশী গান ‘ঘোর্ রে ঘোর্ রে 
আমার সাধের চর্কা ঘোর’ ১৯২৫ সালের মে মাসে ফরিদপুরে অনুষ্ঠিত কংগ্রেসের 
অধিবেশনে মহাত্মা গান্ধী ও দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের উপস্থিতিতে পরিবেশন 
করেন। ১৯২৫ সালের শেষ দিকে নজরুল প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে যোগদান করেন। তিনি 
কুমিল্লা, মেদিনীপুর, হুগলি,  ফরিদপুর, বাঁকুড়া এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন 
স্থানে রাজনৈতিক সভা-সমিতিতে অংশগ্রহণ করেন। নজরুল এ সময় বঙ্গীয় 
প্রাদেশিক কংগ্রেসের সদস্য হওয়া ছাড়াও শ্রমিক ও কৃষক আন্দোলনের জন্য 
‘শ্রমিক-প্রজা-স্বরাজ দল’ গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। রাজনীতিক নজরুলের 
একটি উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ ছিল সাপ্তাহিক লাঙ্গল পত্রিকা প্রকাশ (১৬ ডিসেম্বর
 ১৯২৫)। তিনি এ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক ছিলেন। এর প্রথম সংখ্যাতেই নজরুলের
 ‘সাম্যবাদী’ কবিতাসমষ্টি মুদ্রিত হয়। লাঙ্গল ছিল বাংলা ভাষায় প্রকাশিত 
প্রথম শ্রেণিসচেতন সাপ্তাহিক পত্রিকা। এতে প্রকাশিত ‘শ্রমিক-প্রজা-স্বরাজ 
দলে’র ম্যানিফেস্টোতে প্রথম ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি উত্থাপিত হয়। এ 
সময় নজরুল পেশাজীবী শ্রমিক-কৃষক সংগঠনের উপযোগী সাম্যবাদী ও সর্বহারা  
কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ করেন।<br />
<br />
১৯২৬ সালে নজরুল কৃষ্ণনগরে বসবাস শুরু করেন এবং বাংলা গানে এক নতুন ধারার 
সংযোজন করেন। তিনি স্বদেশী গানকে স্বাধীনতা ও দেশাত্মবোধের মধ্যে সীমাবদ্ধ 
না রেখে সর্বহারা শ্রেণির গণসঙ্গীতে রূপান্তরিত করেন। স্মরণীয় যে, ১৯২৭ 
সালের এপ্রিল মাসে নজরুল কলকাতার প্রথম বামপন্থী সাপ্তাহিক গণবাণীর (১৯২৭ 
সালের ১২ আগস্ট থেকে গণবাণী ও লাঙ্গল একীভূত হয়) জন্য রচনা করেন 
‘কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনাল’ ও ‘রেড ফ্লাগ’ অবলম্বনে ‘জাগো অনশন বন্দী’, 
‘রক্তপতাকার গান’ ইত্যাদি। ১৯২৫ সালে নজরুলের প্রকাশনাসমূহের মধ্যে 
উল্লেখযোগ্য ছিল: গল্প-সংকলন রিক্তের বেদন, কবিতা ও গানের সংকলন চিত্তনামা,
 ছায়ানট, সাম্যবাদী ও পূবের হাওয়া। হিন্দু-মুসলমান ঐক্যের অগ্রদূত 
দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের অকাল মৃত্যুতে (১৬ জুন ১৯২৫) শোকাহত নজরুল 
কর্তৃক রচিত গান ও কবিতা নিয়ে চিত্তনামা গ্রন্থটি সংকলিত হয়।<br />
<br />
১৯২৬ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় আইনসভার উচ্চ পরিষদের সদস্যপদের 
জন্য পূর্ববঙ্গ থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নজরুলের রাজনৈতিক 
জীবনে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এ উপলক্ষে তিনি পূর্ববাংলায়, বিশেষত ঢাকা 
বিভাগে ব্যাপকভাবে সফর করেন। স্কুলজীবনে ত্রিশাল-দরিরামপুরে থাকাকালে এ 
অঞ্চল সম্পর্কে তাঁর যে অভিজ্ঞতার সূত্রপাত হয়, রাজনৈতিক ও বৈবাহিক কারণে 
তা আরও গভীর হয়।<br />
<br />
নজরুল ছিলেন বাংলা  গজল গানের স্রষ্টা। গণসঙ্গীত ও গজলে যৌবনের দুটি 
বিশিষ্ট দিক সংগ্রাম ও প্রেমের পরিচর্যাই ছিল মুখ্য। নজরুল গজল আঙ্গিক 
সংযোজনের মাধ্যমে বাংলা গানের প্রচলিত ধারায় বৈচিত্র্য আনয়ন করেন। তাঁর 
অধিকাংশ গজলের বাণীই উৎকৃষ্ট কবিতা এবং তার সুর রাগভিত্তিক। আঙ্গিকের দিক 
থেকে সেগুলি উর্দু গজলের মতো তালযুক্ত ও তালছাড়া গীত। নজরুলের বাংলা গজল 
গানের জনপ্রিয়তা সমকালীন বাংলা গানের ইতিহাসে ছিল তুলনাহীন। ১৯২৬-২৭ সালে 
কৃষ্ণনগর জীবনে নজরুল উভয় ধারায় বহুসংখ্যক গান রচনা করেন। ওই সময়ে তিনি 
নিজের গানের স্বরলিপি প্রকাশ করতে থাকেন। এসব গান থেকে স্পষ্ট হয় যে, 
নজরুলের সৃজনশীল মৌলিক সঙ্গীত প্রতিভার প্রথম স্ফুরণ ঘটে ১৯২৬-২৭ সালে 
কৃষ্ণনগরে। অথচ নজরুলের কৃষ্ণনগর জীবন ছিল অভাব-অনটন, রোগ-শোক ও 
দুঃখ-দারিদ্র্যক্লিষ্ট। তখনও পর্যন্ত নজরুল কোনো প্রচার মাধ্যমের সঙ্গে 
সংশ্লিষ্ট হন নি, তবে  দিলীপকুমার রায় ও সাহানা দেবীর মতো বড় মাপের 
শিল্পী ও সঙ্গীতজ্ঞ নজরুলের গানকে বিভিন্ন আসরে ও অনুষ্ঠানে পরিবেশন করে 
জনপ্রিয় করে তোলেন।<br />
<br />
১৯২৭ সালে একদিকে সাপ্তাহিক  শনিবারের চিঠি-তে রক্ষণশীল হিন্দু বিশেষত 
ব্রাহ্মণসমাজের একটি অংশ থেকে, অপরদিকে মৌলবাদী মুসলমান সমাজের ইসলাম 
দর্শন, মোসলেম দর্পণ প্রভৃতি পত্রিকায় নজরুল-সাহিত্যের বিরূপ সমালোচনার 
ঝড় ওঠে। শনিবারের চিঠি-তে নজরুলের বিভিন্ন রচনার প্যারডি প্রকাশিত হতে 
থাকে। তবে নজরুলের সমর্থনে কল্লোল, কালিকলম প্রভৃতি প্রগতিশীল পত্রিকা 
এগিয়ে আসে। ১৯২৭ সালে নজরুলের কবিতা ও গানের সংকলন ফণি-মনসা এবং 
পত্রোপন্যাস বাঁধন হারা প্রকাশিত হয়।<br />
<br />
১৯২৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি নজরুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধির মুক্তি 
আন্দোলনের প্রবক্তা  মুসলিম সাহিত্য সমাজ-এর প্রথম বার্ষিক সম্মেলনে যোগদান
 করেন। ১৯২৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে নজরুল মুসলিম 
সাহিত্য সমাজ-এর দ্বিতীয় বার্ষিক সম্মেলনে যোগদানের জন্য পুনরায় ঢাকা 
আসেন। সেবার তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক  কাজী মোতাহার হোসেন, 
ছাত্র  বুদ্ধদেব বসু, অজিত দত্ত এবং গণিতের ছাত্রী ফজিলাতুন্নেসার সঙ্গে 
পরিচিত হন। একই বছর জুন মাসে পুনরায় ঢাকা এলে সঙ্গীত চর্চাকেন্দ্রের রানু 
সোম (প্রতিভা বসু) ও উমা মৈত্রের (লোটন) সঙ্গে কবির ঘনিষ্ঠতা হয়। অর্থাৎ এ
 সময় পরপর তিনবার ঢাকায় এসে নজরুল ঢাকার প্রগতিশীল অধ্যাপক, ছাত্র ও 
শিল্পীদের সঙ্গে পরিচিত হয়ে ওঠেন। ওদিকে ১৯২৮ সালে কলকাতায় মওলানা 
মৈাহাজ্ঞঞ্ছদ আকরমখাঁ-র মাসিক  মোহাম্মদী পত্রিকায় নজরুল-বিরোধিতা শুরু 
হয়, কিন্তু মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীনের সওগাত পত্রিকা বলিষ্ঠভাবে নজরুলকে 
সমর্থন করে। নজরুল সওগাতে যোগদান করে একটি রম্য বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব 
গ্রহণ করেন। সওগাতে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে  আবুল কালাম শামসুদ্দীন নজরুলকে 
যুগপ্রবর্তক কবি ও বাংলার জাতীয় কবি হিসেবে আখ্যায়িত করেন।<br />
<br />
নজরুল ১৯২৮ সালে গ্রামোফোন কোম্পানির সঙ্গে, ১৯২৯ সালে বেতার ও মঞ্চের 
সঙ্গে এবং ১৯৩৪ সালে চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯২৮ থেকে ১৯৩২ সাল 
পর্যন্ত তিনি এইচ.এম.ভি গ্রামোফোন কোম্পানির সঙ্গে সঙ্গীত-রচয়িতা ও 
প্রশিক্ষকরূপে যুক্ত ছিলেন। এইচ.এম.ভি-তে নজরুলের প্রশিক্ষণে প্রথম 
রেকর্ডকৃত তাঁর দুটি গান ‘ভুলি কেমনে’ ও ‘এত জল ও কাজল চোখে’ গেয়েছিলেন 
আঙ্গুরবালা। নজরুলের নিজের প্রথম রেকর্ড ছিল স্বরচিত ‘নারী’ কবিতার 
আবৃত্তি। নজরুল কলকাতা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রথম অনুষ্ঠান প্রচার করেন ১৯২৯
 সালের ১২ নভেম্বর সান্ধ্য অধিবেশনে। ১৯২৯ সালে মনোমোহন থিয়েটারে প্রথম 
মঞ্চস্থ শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের রক্তকমল নাটকের জন্য নজরুল গান রচনা ও সুর 
সংযোজনা করেন। শচীন্দ্রনাথ ওই নাটকটি নজরুলকে উৎসর্গ করেন। ১৯৩০ সালে 
মঞ্চস্থ মন্মথ রায়ের চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী নাটক কারাগার-এ নজরুলের আটটি গান
 ছিল, নাটকটি একটানা ১৮ রজনী মঞ্চস্থ হওয়ার পর সরকার নিষিদ্ধ করে।<br />
<br />
১৯২৯ সালের ১০ ডিসেম্বর কলকাতার এলবার্ট হলে বাঙালিদের পক্ষ থেকে বিদ্রোহী 
কবি কাজী নজরুল ইসলামকে এক বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তাতে সভাপতিত্ব 
করেন আচার্য  প্রফুল্লচন্দ্র রায়, অভিনন্দন-পত্র পাঠ করেন ব্যারিস্টার  এস
 ওয়াজেদ আলি, শুভেচ্ছা ভাষণ দেন বিশিষ্ট রাজনীতিক  সুভাষচন্দ্র বসু 
(নেতাজী) এবং রায়বাহাদুর  জলধর সেন। কবিকে সোনার দোয়াত-কলম উপহার দেওয়া 
হয়। এ সংবর্ধনা সভায় প্রফুল্লচন্দ্র রায় বলেছিলেন, ‘আমার বিশ্বাস, নজরুল
 ইসলামের কবিতা পাঠে আমাদের ভাবী বংশধরেরা এক একটি অতি মানুষে পরিণত হইবে।’
 সুভাষচন্দ্র বসু বলেছিলেন, ‘আমরা যখন যুদ্ধ ক্ষেত্রে যাব তখন সেখানে 
নজরুলের যুদ্ধের গান গাওয়া হবে! আমরা যখন কারাগারে যাব, তখনও তাঁর গান 
গাইব।’<br />
<br />
১৯২৯ সালের জানুয়ারি মাসে নজরুল  চট্টগ্রাম সফরে আসেন এবং  হবীবুল্লাহ 
বাহার ও  শামসুন্নাহার ভাইবোনের আতিথ্য গ্রহণ করেন; বন্ধু কমরেড মুজফ্ফর 
আহমদের জন্মস্থান সনদ্বীপও ভ্রমণ করেন। ১৯২৮-২৯ সালে নজরুলের প্রকাশিত 
কবিতা ও গানের সংকলনের মধ্যে ছিল: সিন্ধু-হিন্দোল (১৯২৮), সঞ্চিতা (১৯২৮); 
বুলবুল (১৯২৮), জিঞ্জীর (১৯২৮) ও চক্রবাক (১৯২৯)। ১৯২৯ সালে কবির তৃতীয় 
পুত্র কাজী সব্যসাচীর জন্ম হয়, আর মে মাসে চার বছরের প্রিয়পুত্র বুলবুল 
বসন্ত রোগে মারা যায়। কবি এতে প্রচন্ড আঘাত পান। অনেকে বলেন এ মৃত্যু কবির
 জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। তিনি ক্রমশ অন্তর্মুখী হয়ে ওঠেন এবং 
আধ্যাত্মিক সাধনার দিকে ঝুঁকে পড়েন। বুলবুলের রোগশয্যায় বসে নজরুল 
হাফিজের রুবাইয়াৎ অনুবাদ করছিলেন, যা পরে রুবাইয়াৎ-ই-হাফিজ নামে প্রকাশিত
 হয়। ১৯৩০ সালে প্রকাশিত হয়েছিল নজরুলের রাজনৈতিক উপন্যাস মৃত্যুক্ষুধা, 
গানের সংকলন নজরুল-গীতিকা, নাটিকা ঝিলিমিলি এবং কবিতা ও গানের সংকলন 
প্রলয়-শিখা ও চন্দ্রবিন্দু। শেষোক্ত গ্রন্থটি বাজেয়াপ্ত এবং 
প্রলয়-শিখা-র জন্য নজরুলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও গ্রেফতারি পরোয়ানা 
জারি হয়। ১৯৩০ সালের ১৬ ডিসেম্বর প্রকাশিত আদালতের রায়ে নজরুলের ছয় 
মাসের সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ হয়, নজরুল হাইকোর্টে আপিল ও জামিন লাভ করেন। 
ইতোমধ্যে গান্ধী-আরউইন চুক্তির ফলে হাইকোর্ট কর্তৃক নজরুলের বিরুদ্ধে মামলা
 খারিজের আদেশ দেওয়া হয়, ফলে নজরুলকে দ্বিতীয়বার কারাবাস করতে হয় নি।<br />
<br />
১৯৩১ সালের জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় 
পর্যন্ত নজরুল দার্জিলিং সফর করেন। রবীন্দ্রনাথও তখন দার্জিলিং-এ ছিলেন। 
তাঁর সঙ্গে নজরুলের সাক্ষাৎ হয়। এ বছর প্রকাশিত হয় নজরুলের উপন্যাস 
কুহেলিকা, গল্প-সংকলন শিউলিমালা, গানের স্বরলিপি নজরুল-স্বরলিপি এবং 
গীতিনাট্য আলেয়া। নজরুলের এ নাটকটি কলকাতার নাট্যনিকেতনে (৩ পৌষ ১৩৩৮) 
প্রথম মঞ্চস্থ হয়। এতে গানের সংখ্যা ছিল ২৮টি। ওই বছর নজরুল আরও যেসব 
নাটকের জন্য গান রচনা ও সুরারোপ করেন সেসবের মধ্যে ছিল যতীন্দ্রমোহন সিংহের
 ধ্রুবতারা উপন্যাসের নাট্যরূপের চারটি গান (কেবল সুর সংযোজন), মন্মথ 
রায়ের সাবিত্রী নাটকের ১৩টি গান (রচনা ও সুরারোপ)। ১৯৩২ সালে কলকাতা বেতার
 থেকে প্রচারিত মন্মথ রায়ের মহুয়া নাটকের গানগুলির রচয়িতাও ছিলেন নজরুল।<br />
<br />
১৯৩২ সালের নভেম্বর মাসে নজরুল সিরাজগঞ্জে বঙ্গীয় মুসলমান তরুণ সম্মেলনে 
এবং ২৫ ও ২৬ ডিসেম্বর কলকাতা এলবার্ট হলে বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সম্মেলনে
 যোগদান করেন। সম্মেলনের সভাপতি কবি  কায়কোবাদ নজরুলকে মাল্যভূষিত করেন। 
১৯৩২ সালে নজরুলের প্রকাশনার মধ্যে সবগুলিই ছিল গীতিসংকলন, যেমন: সুর-সাকী,
 জুলফিকার ও বন-গীতি।<br />
<br />
১৯৩২-৩৩ সাল এক বছর নজরুল এইচ.এম.ভি ছেড়ে মেগাফোন রেকর্ড কোম্পানির সঙ্গে 
সংশ্লিষ্ট ছিলেন। এ কোম্পানির রেকর্ড করা প্রথম দুটি নজরুলসঙ্গীত ছিল ধীরেন
 দাসের গাওয়া ‘জয় বাণী বিদ্যাদায়িনী’ ও ‘লক্ষ্মী মা তুই’। ১৯৩৩ সালে 
নজরুল এক্সক্লুসিভ কম্পোজাররূপে এইচ.এম.ভি-তে পুনরায় যোগদান করেন। এ সময় 
তাঁর অনেক গান রেকর্ড হয়। ১৯৩৩ সালে নজরুল তিনটি মূল্যবান অনুবাদ-কর্ম 
সমাপ্ত করেন: রুবাইয়াৎ-ই-হাফিজ, রুবাইয়াৎ-ই-ওমর খৈয়াম এবং কাব্য আমপারা।<br />
<br />
রেকর্ড, বেতার ও মঞ্চের পর নজরুল ১৯৩৪ সালে চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত হন। 
তিনি প্রথমে যে ছায়াছবির জন্য কাজ করেন সেটি ছিল গিরিশচন্দ্র ঘোষের কাহিনী
 ভক্ত ধ্রুব (১৯৩৪)। এ ছায়াছবির পরিচালনা, সঙ্গীত রচনা, সুর সংযোজনা ও 
পরিচালনা এবং নারদের ভূমিকায় অভিনয় ও নারদের চারটি গানের প্লেব্যাক নজরুল
 নিজেই করেন। ছবির আঠারোটি গানের মধ্যে সতেরোটির রচয়িতা ও সুরকার ছিলেন 
নজরুল। এ ছাড়া তিনি আর যেসব চলচ্চিত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন সেগুলি 
হলো: পাতালপুরী (১৯৩৫), গ্রহের ফের (১৯৩৭), বিদ্যাপতি (বাংলা ও হিন্দি 
১৯৩৮), গোরা (১৯৩৮), নন্দিনী (১৯৪৫) এবং অভিনয় নয় (১৯৪৫)। বিভিন্ন 
ছায়াছবিতে ১৯৪৫ সালের মধ্যে ব্যবহূত নজরুলসঙ্গীতের সংখ্যা প্রায় অর্ধশত। 
চলচ্চিত্রের মতো মঞ্চনাটকের সঙ্গেও নজরুল ত্রিশের দশকে সম্পৃক্ত ছিলেন। 
১৯২৯ থেকে ১৯৪১ সালের মধ্যে কলকাতার বিভিন্ন মঞ্চে নিজের রচিত দুটি নাটক 
আলেয়া ও মধুমালা সহ প্রায় ২০টি মঞ্চ নাটকের সঙ্গে নজরুল যুক্ত ছিলেন এবং 
সেসবে প্রায় ১৮২টি নজরুলসঙ্গীত অন্তর্ভুক্ত ছিল। এরূপ কয়েকটি নাটক হলো: 
রক্তকমল, মহুয়া, জাহাঙ্গীর, কারাগার, সাবিত্রী, আলেয়া, সর্বহারা, সতী, 
সিরাজদ্দৌলা, দেবীদুর্গা, মধুমালা, অন্নপূর্ণা, নন্দিনী, হরপার্বতী, 
অর্জুনবিজয়, ব্ল্যাক আউট ইত্যাদি। ১৯৩৪ সালে নজরুল-প্রকাশনার সবই ছিল 
সঙ্গীত-বিষয়ক, যেমন: গীতি-শতদল ও গানের মালা গীতিসংকলন এবং সুরলিপি ও 
সুরমুকুর স্বরলিপি সংগ্রহ।<br />
<br />
১৯৩৯ সালের অক্টোবর মাস থেকে নজরুল কলকাতা বেতারের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে 
যুক্ত হন এবং তাঁর তত্ত্বাবধানে অনেক মূল্যবান সঙ্গীতানুষ্ঠান প্রচারিত 
হয়। অনুষ্ঠানগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ‘হারামণি’, ‘মেল-মিলন’ ও 
‘নবরাগমালিকা’। ১৯৩৯ থেকে ১৯৪২ সালের মধ্যে নজরুল বিশিষ্ট সঙ্গীতজ্ঞ 
সুরেশচন্দ্র চক্রবর্তীর সহযোগিতায় কলকাতা বেতার থেকে অনেক রাগভিত্তিক 
ব্যতিক্রমধর্মী সঙ্গীতানুষ্ঠান পরিবেশন করেন, যা ছিল নজরুলের সঙ্গীতজীবনের 
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ১৯৩৯ সালে নজরুল বেতারের সঙ্গে বিশেষভাবে 
জড়িত থাকলেও এইচ.এম.ভি, মেগাফোন, টুইন ছাড়াও কলম্বিয়া, হিন্দুস্থান, 
সেনোলা, পাইওনিয়ার, ভিয়েলোফোন প্রভৃতি থেকেও নজরুলসঙ্গীতের রেকর্ড 
প্রকাশিত হয়। ১৯৫০ সালের মধ্যে নজরুলের এইচ.এম.ভি থেকে ৫৬৭টি, টুইন থেকে 
২৮০টি, মেগাফোন থেকে ৯১টি, কলম্বিয়া থেকে ৪৪টি, হিন্দুস্থান থেকে ১৫টি, 
সেনোলা থেকে ১৩টি, পাইওনিয়ার থেকে ২টি, ভিয়েলোফোন থেকে ২টি এবং রিগ্যান 
থেকে ১টি মিলে প্রায় সহস্রাধিক গানের রেকর্ড প্রকাশিত হয়। সব মিলে 
নজরুলের গানের সংখ্যা দ্বিসহস্রাধিক।<br />
<br />
১৯৪১ সালের ৭ আগস্ট (২২ শ্রাবণ ১৩৪৮) রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুতে শোকাহত নজরুল 
তাৎক্ষণিকভাবে রচনা করেন ‘রবিহারা’ ও ‘সালাম অস্তরবি’ কবিতা এবং ‘ঘুমাইতে 
দাও শ্রান্ত রবিরে’ শোকসঙ্গীত। ‘রবিহারা’ কবিত্র্রা নজরুল স্বকণ্ঠে আবৃত্তি
 করেন কলকাতা বেতারে, গ্রামোফোন রেকর্ডে। ‘ঘুমাইতে দাও’ গানটিও কয়েকজন 
শিল্পীকে নিয়ে স্বকণ্ঠে গেয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর বছরখানেকের 
মধ্যেই নজরুল নিজেও অসুস্থ এবং ক্রমশ নির্বাক ও সম্বিতহারা হয়ে যান। দেশে ও
 বিদেশে কবির চিকিৎসার ব্যবস্থা হয় বটে, কিন্তু কোনো সুফল পাওয়া যায় নি।
 ১৯৪২ সালের জুলাই থেকে ১৯৭৬ সালের আগস্ট পর্যন্ত দীর্ঘ ৩৪টি বছর কবির এ 
অসহনীয় নির্বাক জীবনকাল অতিবাহিত হয়।<br />
<br />
ভারত সরকারের অনুমতিক্রমে ১৯৭২ সালের ২৪ মে কবিকে সপরিবারে স্বাধীন 
বাংলাদেশে আনা হয়।  বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে কবির অবদানের 
স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭৪ সালের ৯ ডিসেম্বর  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এক বিশেষ 
সমাবর্তনে কবিকে সম্মানসূচক ডি.লিট উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৭৬ সালের 
জানুয়ারি মাসে নজরুলকে বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান এবং ২১
 ফেব্রুয়ারি ‘একুশে পদকে’ ভূষিত করে। ২৯ আগস্ট ১৯৭৬ (১২ ভাদ্র ১৩৮৩) ঢাকার
 পিজি হাসপাতালে কবি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের
 উত্তর পার্শ্বে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয় বাংলাদেশের জাতীয় 
কবি কাজী নজরুল ইসলামকে।<br />
<script type="text/javascript"> google_ad_client="3219227809001878";
google_ad_host="3219227809001878";google_ad_width=770;
google_ad_height=70; google_ad_type="text_image";
google_color_border="FFFFFF"; google_color_bg="ffffff";
google_color_link="0000ff"; google_color_text="000000";
google_color_url="0088000";google_page_url=
"https://graphicsdesigntutorialall.blogspot.com"//--></script><script src="http://pagead2.googlesyndication.com/pagead/show_ads.js" type="text/javascript"></script><br />
<br />
<b>উৎস: বাংলাপিডিয়া</b></div>
</div>

কাজী নজরুল ইসলাম সম্পর্কে জানা অজানা:: কবিতা গান গল্প

কাজী নজরুল ইসলাম ইসলাম, কাজী নজরুল (১৮৯৯-১৯৭৬) বাংলাদেশের জাতীয় কবি এবং অবিভক্ত বাংলার সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রের...

আরও পড়ুন »

এক আল্লাহ জিন্দাবাদ:: কাজী নজরুল ইসলাম

Unknown কাজী নজরুল ইসলাম ৮:০৬:০০ AM

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<div class="post_wrap">
<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;">
<a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEj2b5jZdYtVGG3Q2OHW350Oo6SpnKVo6EulZDwgyJOu7lm2mnLDy79eJo8d_Q8hRWZauhZMk48HjsxZ4S4wYQBHm_aiZegCxbez_jvHvc0SObfUu8sPgCGeS4L3-rZrp_NGT2u8Z6sT5zPb/s1600/nazrul.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" height="185" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEj2b5jZdYtVGG3Q2OHW350Oo6SpnKVo6EulZDwgyJOu7lm2mnLDy79eJo8d_Q8hRWZauhZMk48HjsxZ4S4wYQBHm_aiZegCxbez_jvHvc0SObfUu8sPgCGeS4L3-rZrp_NGT2u8Z6sT5zPb/s320/nazrul.jpg" width="320" /></a></div>
<div class="post_description">
<h4>
<div style="text-align: center;">
<br /></div>
</h4>
<h4 style="text-align: center;">
এক আল্লাহ জিন্দাবাদ</h4>
<span class="poet_name"> <a href="http://banglarkobita.com/book/famous/22"></a></span>  <br />
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">উহারা প্রচার করুক হিংসা বিদ্বেষ আর নিন্দাবাদ; </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">আমরা বলিব সাম্য শান্তি এক আল্লাহ জিন্দাবাদ। </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">উহারা চাহুক সংকীর্ণতা, পায়রার খোপ, ডোবার ক্লেদ, </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">আমরা চাহিব উদার আকাশ, নিত্য আলোক, প্রেম অভেদ। </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;"><br /></span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">উহারা চাহুক দাসের জীবন, আমরা শহীদি দরজা চাই; </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">নিত্য মৃত্যু-ভীত ওরা, মোরা মৃত্যু কোথায় খুঁজে বেড়াই! </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">ওরা মরিবেনা, যুদ্ব বাধিঁলে ওরা লুকাইবে কচুবনে, </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">দন্তনখরহীন ওরা তবু কোলাহল করে অঙ্গনে। </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;"><br /></span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">ওরা নির্জীব; জিব নাড়ে তবু শুধূ স্বার্থ ও লোভবশে, </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">ওরা জিন, প্রেত, যজ্ঞ, উহারা লালসার পাঁকে মুখ ঘষে। </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">মোরা বাংলার নব যৌবন,মৃত্যুর সাথে সন্তরী, </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">উহাদের ভাবি মাছি পিপীলিকা, মারি না ক তাই দয়া করি। </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;"><br /></span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">মানুষের অনাগত কল্যাণে উহারা চির অবিশ্বাসী, </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">অবিশ্বাসীরাই শয়তানী-চেলা ভ্রান্ত-দ্রষ্টা ভুল-ভাষী। </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">ওরা বলে, হবে নাস্তিক সব মানুষ, করিবে হানাহানি। </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">মোরা বলি, হবে আস্তিক, হবে আল্লাহ মানুষে জানাজানি। </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;"><br /></span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">উহারা চাহুক অশান্তি; মোরা চাহিব ক্ষমাও প্রেম তাহার, </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">ভূতেরা চাহুক গোর ও শ্মশান, আমরা চাহিব গুলবাহার! </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">আজি পশ্চিম পৃথিবীতে তাঁর ভীষণ শাস্তি হেরি মানব </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">ফিরিবে ভোগের পথ ভয়ে, চাহিবে শান্তি কাম্য সব। </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;"><br /></span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">হুতুম প্যাচারা কহিছে কোটরে, হইবেনা আর সূর্যোদয়, </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">কাকে আর তাকে ঠোকরাইবেনা, হোক তার নখ চষ্ণু ক্ষয়। </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">বিশ্বাসী কভু বলেনা এ কথা, তারা আলো চায়, চাহে জ্যোতি; </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">তারা চাহে না ক এই উৎপীড়ন এই অশান্তি দূর্গতি। </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;"><br /></span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">তারা বলে, যদি প্রার্থনা মোরা করি তাঁর কাছে এক সাথে, </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">নিত্য ঈদের আনন্দ তিনি দিবেন ধুলির দুনিয়াতে। </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">সাত আসমান হতে তারা সাত-রঙা রামধনু আনিতে চায়, </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">আল্লা নিত্য মহাদানী প্রভূ, যে যাহা চায়, সে তাহা পায়। </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;"><br /></span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">যারা অশান্তি দুর্গতি চাহে, তারা তাই পাবে, দেখো রে ভাই, </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">উহারা চলুক উহাদের পথে, আমাদের পথে আমরা যাই। </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">ওরা চাহে রাক্ষসের রাজ্য, মেরা আল্লার রাজ্য চাই, </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">দ্বন্দ্ব-বিহীন আনন্দ-লীলা এই পৃথিবীতে হবে সদাই। </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;"><br /></span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">মোদের অভাব রবে না কিছুই, নিত্যপূর্ণ প্রভূ মোদের, </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">শকুন শিবার মত কাড়াকাড়ি করে শবে লয়ে-- শখ ওদের! </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">আল্লা রক্ষা করুন মোদেরে, ও পথে যেন না যাই কভূ, </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">নিত্য পরম-সুন্দর এক আল্লাহ্ আমাদের প্রভূ। </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;"><br /></span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">পৃথিবীতে যত মন্দ আছে তা ভালো হোক, ভালো হোক ভালো, </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">এই বিদ্বেষ-আঁধার দুনিয়া তাঁর প্রেমে আলো হোক, আলো। </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">সব মালিন্য দূর হয়ে যাক সব মানুষের মন হতে, </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">তাঁহার আলোক প্রতিভাত হোক এই ঘরে ঘরে পথে পথে। </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;"><br /></span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">দাঙ্গা বাঁধায়ে লুট করে যারা, তার লোভী, তারা গুন্ডাদল </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">তারা দেখিবেনা আল্লাহর পথ চিরনির্ভয় সুনির্মল। </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">ওরা নিশিদিন মন্দ চায়, ওরা নিশিদিন দ্বন্দ চায়, </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">ভূতেরা শ্রীহীন ছন্দ চায়, গলিত শবের গন্ধ চায়! </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;"><br /></span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">তাড়াবে এদের দেশ হতে মেরে আল্লার অনাগত সেনা, </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">এরাই বৈশ্য, ফসল শৈস্য লুটে খায়, এরা চির চেনা। </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">ওরা মাকড়সা, ওদের ঘরের ঘেরোয়াতে কভু যেয়ো না কেউ, </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">পর ঘরে থাকে জাল পেতে, ওরা দেখেনি প্রাণের সাগর ঢেউ। </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;"><br /></span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">বিশ্বাস করো এক আল্লাতে প্রতি নিঃশ্বাসে দিনে রাতে, </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">হবে দুলদুল - আসওয়ার পাবে আল্লার তলোয়ার হাতে। </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">আলস্য আর জড়তায় যারা ঘুমাইতে চাহে রাত্রিদিন, </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">তাহারা চাহে না চাঁদ ও সূর্য্য, তারা জড় জীব গ্লানি-মলিন। </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;"><br /></span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">নিত্য সজীব যৌবন যার, এস এস সেই নৌ-জোয়ান </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">সর্ব-ক্লৈব্য করিয়াছে দূর তোমাদেরই চির আত্বদান! </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">ওরা কাদা ছুড়ে বাঁধা দেবে ভাবে - ওদের অস্ত্র নিন্দাবাদ, </span></div>
</div>
<div>
<div style="text-align: center;">
<span style="font-family: "solaimanlipi"; font-size: large;">মোরা ফুল ছড়ে মারিব ওদের, বলিব - "এক আল্লাহ জিন্দাবাদ"।</span></div>
</div>
</div>
</div>
</div>

এক আল্লাহ জিন্দাবাদ:: কাজী নজরুল ইসলাম

এক আল্লাহ জিন্দাবাদ উহারা প্রচার করুক হিংসা বিদ্বেষ আর নিন্দাবাদ; আমরা বলিব সাম্য শান্তি এক আল্লাহ জিন্দাবাদ। উহা...

আরও পড়ুন »

কাজী নজরুলের বিদ্রোহী কবিতা : বল বীর - বল উন্নত মম শির

Unknown কাজী নজরুল ইসলাম ৯:১১:০০ PM

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<table cellpadding="0" cellspacing="0" class="tr-caption-container" style="margin-left: auto; margin-right: auto; text-align: center;"><tbody>
<tr><td style="text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEj7rmd1Qf7LmCzZFzj0otXwFOLzVph5IHsXRtOE-Js_Fp_3jrJg_4A_eJdk0b1Gq8LFLtKhAD4sZsA1kcaCaL9eQmOAnj0aClHxIVH6BER2P5fPCAb8Mp30YjeHJvPr_H4SLyJDfVGvhUga/s1600/nazrul.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: auto; margin-right: auto;"><img border="0" height="187" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEj7rmd1Qf7LmCzZFzj0otXwFOLzVph5IHsXRtOE-Js_Fp_3jrJg_4A_eJdk0b1Gq8LFLtKhAD4sZsA1kcaCaL9eQmOAnj0aClHxIVH6BER2P5fPCAb8Mp30YjeHJvPr_H4SLyJDfVGvhUga/s320/nazrul.jpg" width="320" /></a></td></tr>
<tr><td class="tr-caption" style="text-align: center;"><span style="color: blue;">প্রাণের কবি</span></td></tr>
</tbody></table>
<div style="text-align: center;">
<br /></div>
<div style="text-align: center;">
<span style="color: purple;">কাজী নজরুলের বিদ্রোহী কবিতা </span></div>
<div style="text-align: center;">
<br /></div>
<div style="text-align: center;">
বল বীর -</div>
<div style="text-align: center;">
বল উন্নত মম শির!</div>
<div style="text-align: center;">
শির নেহারি আমারি, নত শির ওই শিখর হিমাদ্রির!</div>
<div style="text-align: center;">
বল বীর -</div>
<div style="text-align: center;">
বল মহা বিশ্বের মহাকাশ ফাড়ি’</div>
<div style="text-align: center;">
চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা ছাড়ি’</div>
<div style="text-align: center;">
ভূলোক দ্যুলোক গোলোক ভেদিয়া,</div>
<div style="text-align: center;">
খোদার আসন ‘আরশ’ ছেদিয়া,</div>
<div style="text-align: center;">
উঠিয়াছি চির বিস্ময় আমি বিশ্ব বিধাত্রীর!</div>
<div style="text-align: center;">
মম ললাটে রুদ্র ভগবান জ্বলে রাজ-রাজটীকা দীপ্ত জয়শ্রীর!</div>
<div style="text-align: center;">
বল বীর-</div>
<div style="text-align: center;">
আমি চির উন্নত শির।</div>
<div style="text-align: center;">
আমি চিরদুর্দ্দম, দুর্বিনীত, নৃশংস,</div>
<div style="text-align: center;">
মহা-প্রলয়ের আমি নটরাজ, আমি সাইক্লোন, আমি ধ্বংস,</div>
<div style="text-align: center;">
আমি মহাভয়, আমি অভিশাপ পৃথ্বীর!</div>
<div style="text-align: center;">
আমি দুর্বার,</div>
<div style="text-align: center;">
আমি ভেঙ্গে করি সব চুরমার!</div>
<div style="text-align: center;">
আমি অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল,</div>
<div style="text-align: center;">
আমি দলে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল!</div>
<div style="text-align: center;">
আমি মানি না কো কোন আইন,</div>
<div style="text-align: center;">
আমি ভরা-তরী করি ভরা-ডুবি, আমি টর্পেডো, আমি ভীম ভাসমান মাইন!</div>
<div style="text-align: center;">
আমি ধুর্জ্জটী, আমি এলোকেশে ঝড় অকাল-বৈশাখীর!</div>
<div style="text-align: center;">
আমি বিদ্রোহী, আমি বিদ্রোহী-সূত বিশ্ব-বিধাত্রীর!</div>
<div style="text-align: center;">
বল বীর-</div>
<div style="text-align: center;">
চির-উন্নত মম শির!</div>
<div style="text-align: center;">
…</div>
<div style="text-align: center;">
আমি বন্ধন-হারা কুমারীর বেণী, তন্বী-নয়নে বহ্নি,</div>
<div style="text-align: center;">
আমি ষোড়শীর হৃদি-সরসিজ প্রেম উদ্দাম, আমি ধন্যি!</div>
<div style="text-align: center;">
আমি উন্মন মন উদাসীর,</div>
<div style="text-align: center;">
আমি বিধবার বুকে ক্রন্দণ শ্বাস, হা-হুতাশ আমি হুতাশীর!</div>
<div style="text-align: center;">
আমি বঞ্চিত ব্যথা পথবাসী চির-গৃহহারা যত পথিকের,</div>
<div style="text-align: center;">
আমি অবমানিতের মরম-বেদনা, বিষ-জ্বালা, প্রিয়-লাঞ্ছিত বুকে গতি ফের!</div>
<div style="text-align: center;">
আমি অভিমানী চির-ক্ষুব্ধ হিয়ার কাতরতা, ব্যথা সুনিবিড়,</div>
<div style="text-align: center;">
চিত- চুম্বন-চোর-কম্পন আমি থর-থর-থর প্রথম পরশ কুমারীর!</div>
<div style="text-align: center;">
আমি গোপন-প্রিয়ার চকিত চাহনি, ছল ক’রে দেখা অনুখণ,</div>
<div style="text-align: center;">
আমি চপল মেয়ের ভালবাসা, তা’র কাঁকন চুড়ির কন্ কন্।</div>
<div style="text-align: center;">
আমি চির-শিশু, চির-কিশোর</div>
<div style="text-align: center;">
আমি যৌবন-ভীতু পল্লীবালার আঁচর কাঁচলি নিচোর!</div>
<div style="text-align: center;">
আমি উত্তর-বায়ু, মলয়-অনিল, উদাস পূরবী হাওয়া,</div>
<div style="text-align: center;">
আমি পথিক-কবির গভীর রাগিণী, বেনু-বীণে গান গাওয়া।</div>
<div style="text-align: center;">
আমি আকুল নিদাঘ-তিয়াসা, আমি রৌদ্র-রুদ্র রবি,</div>
<div style="text-align: center;">
আমি মরু-নির্ঝর ঝর-ঝর, আমি শ্যামলিমা ছায়া-ছবি।</div>
<div style="text-align: center;">
আমি তুরীয়ানন্দে ছুটে চলি এ কি উন্মাদ, আমি উন্মাদ!</div>
<div style="text-align: center;">
আমি সহসা আমারে চিনেছি, আমার খুলিয়া গিয়াছে সব বাঁধ!</div>
<div style="text-align: center;">
…</div>
<div style="text-align: center;">
আমি অর্ফিয়াসের বাঁশরী,</div>
<div style="text-align: center;">
মহা- সিন্ধু উতলা ঘুম্-ঘুম্,</div>
<div style="text-align: center;">
ঘুম্ চুমু দিয়ে করি নিখিল বিশ্বে নিঝ্‌ঝুম্</div>
<div style="text-align: center;">
মম বাঁশরীর তানে পাশরি</div>
<div style="text-align: center;">
আমি শ্যামের হাতের বাঁশরী।</div>
<div style="text-align: center;">
আমি রুষে উঠে’ যবে ছুটি মহাকাশ ছাপিয়া,</div>
<div style="text-align: center;">
ভয়ে সপ্ত নরক হাবিয়া দোজখ নিভে নিভে যায় কাঁপিয়া!</div>
<div style="text-align: center;">
আমি বিদ্রোহ-বাহী নিখিল অখিল ব্যাপিয়া!</div>
<div style="text-align: center;">
আমি শ্রাবণ-প্লাবন-বন্যা,</div>
<div style="text-align: center;">
কভু ধরণীরে করি বরণীয়া, কভু বিপুল-ধ্বংস-ধন্যা-</div>
<div style="text-align: center;">
আমি ছিনিয়া আনিব বিষ্ঞু-বক্ষ হইতে যুগল কন্যা!</div>
<div style="text-align: center;">
আমি অন্যায়, আমি উল্কা, আমি শনি,</div>
<div style="text-align: center;">
আমি ধূমকেতু-জ্বালা, বিষধর কলা-ফণী!</div>
<div style="text-align: center;">
আমি ছিন্নমন্তা চণ্ডী, আমি রণদা সর্বনাশী,</div>
<div style="text-align: center;">
আমি জাহান্নামের আগুনে বসিয়া হাসি পুষ্পের হাসি!</div>
<div style="text-align: center;">
আমি মৃন্ময়, আমি চিন্ময়,</div>
<div style="text-align: center;">
আমি অজয় অমর অক্ষয়, আমি অব্যয়!</div>
<div style="text-align: center;">
আমি মানব দানব দেবতার ভয়,</div>
<div style="text-align: center;">
বিশ্বের আমি চির-দুর্জয়,</div>
<div style="text-align: center;">
জগদীশ্বর-ঈশ্বর আমি পুরুষোত্তম সত্য,</div>
<div style="text-align: center;">
আমি তাথিয়া তাথিয়া মথিয়া ফিরি এ স্বর্গ পাতাল-মর্ত্য!</div>
<div style="text-align: center;">
আমি উন্মাদ, আমি উন্মাদ!</div>
<div style="text-align: center;">
আমি চিনেছি আমারে, আজিকে আমার খুলিয়া গিয়াছে সব বাঁধা!!-</div>
<div style="text-align: center;">
আমি পরশুরামের কঠোর কুঠার,</div>
<div style="text-align: center;">
নিঃক্ষত্রিয় করিব বিশ্ব, আনিব শান্তি শান্ত উদার!</div>
<div style="text-align: center;">
আমি হল বলরাম-স্কন্ধে,</div>
<div style="text-align: center;">
আমি উপাড়ি’ ফেলিব অধীন বিশ্ব অবহেলে নব সৃষ্টির মহানন্দে,</div>
<div style="text-align: center;">
মহা- বিদ্রোহী রণ-কাল্ত,</div>
<div style="text-align: center;">
আমি সেইদিন সব শান্ত,</div>
<div style="text-align: center;">
যবে উত্পীড়িতের ক্রন্দণ-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না</div>
<div style="text-align: center;">
অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না-</div>
<div style="text-align: center;">
বিদ্রোহী রণ-ক্লান্ত আমি সেই দিন হব শান্ত।</div>
<div style="text-align: center;">
আমি বিদ্রোহী ভৃগু, ভগবান বুকে এঁকে দিই পদ-চিহ্ন;</div>
<div style="text-align: center;">
আমি স্রষ্টা-সুদন; শোক-তাপ হানা খেয়ালী বিধির বক্ষ করিব ভিন্ন।</div>
<div style="text-align: center;">
আমি বিদ্রোহী ভৃগু, ভগবান বুকে এঁকে দেবো পদ-চিহ্ন!</div>
<div style="text-align: center;">
আমি খেয়ালী বিধির বক্ষ করিব ভিন্ন।</div>
<div style="text-align: center;">
আমি চির-বিদ্রোহী-বীর-</div>
<div style="text-align: center;">
আমি বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি একা চির উন্নত শির!</div>
<div style="text-align: center;">
<br /></div>
</div>