শৈশবের স্মৃথি থেকে
এক ছটাক!
মোহাম্মদ মুহিন
যখন আমি আর আমার ছোট বোন চতুর্থ শ্রেণীতে এ পড়ছিলাম তখন অমি ছিলাম অনেক
দুষ্ট স্বভাবের। দুষ্টমির জন্য আমার অনেক উপাধি ছিল যেমন: বোমা মুহিন,
টাকুর যম, পিচ্ছি জামাই,দুষ্টবালক
ইত্যাদি। ক্লাস এবং আমার নিজ পাড়ায় আমি ছিলাম সব ছেলেদের সর্দার। আর কেউ
যদি একটু ভুল করে ঊনিষ বিশ করত তখন তাকে মেরে পিঠের ছাল তুলে ফেলতাম।আমাদের
ক্লাসে দু'টি সুন্দরী মেডাম ছিল।রিক্তা ও পাভেল মেডাম। পাভেল মেডাম ছিলেন
স্কুলের প্রিন্সিপাল। চেহেরাটা সামান্য সূন্দর হলেও চোখে মুখে ছিল একটি
ভয়ংকর ভাব।চোখ বড় বড় করে থাকালেই যেন পুরো স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা ভয়ে জলের
মত ঠান্ডা হয়ে যেত।
রিক্তা ম্যাডামের কথা কি বলব।অনেক অনেক দুষ্ট মহিলা ছিলেন তিনি।পড়া না পারলে কখনো মারতেননা,সাস্তি
দিতেন।জগন্য পৈছাশিক সাস্থি।যেমন:হাই
বেঞ্চ লৌবেঞ্চের উপর দাড় করিয়ে রাখা,মেয়ে হলে ছেলেদের পাসে,ছেলে হলে
মেয়েদের পাশে বসিয়ে, ছেলেমেয়ে উভয়ে একসাথে কানে ধরে উঠবস ইত্যাদি।এই জগন্য
সাস্থি আমার একদম পছন্দ ছিলনা।তাই পতিদিন উনার পড়াই আগে রেডি
করতাম।দুর্ভাগ্য
বশত
একদিন উনার পড়া না শিখেই ক্লাসে গিয়েছিলাম। ম্যাডামটা আমাকে নতূন এক সাস্থি
দিতে বল্ল।একহাত নাকে অন্যহাত কানে দিয়ে জনপ্রতি সব মেয়েদের স শব্দে ছালাম
দিতে বল্ল।অনেক কষ্ট করে অপমান শয়ে সাস্থিটা গ্রহন করলাম। এবং সালাম
করলাম। চির প্রতিদন্দী দুই মেয়ে ক্লাস মিট সালামের জবাব দিচ্ছে আমাকে
ভেঙ্গিয়ে।মানে তারাও নাক কান দরে সালামের জবাব দিচ্ছে।এর পর ম্যডাম এর উপর
একটু রাগ পোষন করলাম।এরপর কোন একটা কারনে মেডামটা আমার ছোট বোনকে
মারল।আমার রাগটা আরো বেড়ে গেল।এবার আমি প্রতিশোদের ইচ্ছা মনে পোষন
করলাম।টিফিন ছূটিতে আমরা কয়েকজন মাঠে ট্যনিস বল দিয়ে বোম ফাইট খেলছিলাম।এমন
সময় মাঠের পাশে বারান্দা দিয়ে ম্যডাম অফিসের দিকে যাচ্ছিলেন।মাঠ থেকে
বারান্দায় উনার আমার পজিসন হল কোনাকোনি আমি উনার১৪/
১৫হাত
দুরে।উনার একটু পিছনে মিজান।আমি বলটা ছোটে মারবো মিজনের গা লক্ষ্য করে।
তখন আমি বলটা ছুটলাম রিক্তার রিক্ততাই বিরক্ত হওয়া ম্যডামের গায়ে।বল গিয়ে
লাগলো ম্যডামের ব্যক সাইডে। ম্যডামটা একটু চমকে গিয়ে থমকে দাড়িয়ে কে রে
গাডাতো হাড়ায়ালাইছত(সম্ভব ম্যডাম নুয়াখায়ল্লা ছিলেন) পিছনে ফিরে জানুয়ার
বদমাইস দাড়া, দেখাচ্ছি তোদের খেলা। আমিতো মনে মনে বলি খেলা দেখমু-অ ও খেলা
খেলমু-অ। ম্যডামকে বল দিয়ে আঘত করতে পারাই কি যে আনন্দ হচ্ছিল আমার বলে
বুঝাবার মত নয়। কিছুক্ষন পর হেডমাষ্টার তার অফিস কক্ষে ডাকলেন আমাকে।আমি
অফিসে গেলে কয়েকটা ব্যত্রাঘাত করে কিছু উপদেশমূলক কথা বলে আমাকে ছেড়েদেন।
সেদিন থেকেই আমাকে অনেকে "বোমা মুহিন" বলে ছ্যছাতো
_ _ _ _ _ _ _ _ _
কিছুদিন পর স্কুলে আবার ঝামেলা বাধাঁলাম মিনা নামের একটা মেয়ের সাথে . কি
একটা কথা কাঁটাকাটিতে আমাদের মধ্যে বেঁধেগেল তুমুল ঝগড়া।একপর্যায়ে মিনার
মাথার ৩ ভাগের দুভাগ চুল উপড়ে ফেল্লাম। বেচারার মাথার অনেকটা অংশ টাকের মত
দেখাচ্ছে। পরে মিনা কান্নাকাটি করতে করতে ভয়ংকর পাভেল ম্যডামের নিকট বিচার
দিল। আবার ম্যডামের কক্ষে যাওয়ার ডাক পড়ল। এবং গেলাম।ম্যডাম আমাকে জিজ্ঞেস
করছে তুমিকি ওকে মেরেছ? আমি:না ম্যম মারিনি।ম্যম:কি করেছো? আমি:তার চুল
গুলো উপড়ে ফেলেছি।আর কিছু জিজ্ঞেস না করে ম্যম আমাকে মারার প্রস্তুতি
নিচ্ছে। তা দেখে একটু ফন্দি এটে ম্যমকে বল্লাম, ম্যম একটা কথা বলবো?
বল।ম্যাম আপনি না যা চুইট, আপনাকে আমার খুব পছন্দ হয়েছে।আমি আপনাকে ভালবাসি
" I love you" ম্যম। আমি আপনাকে বিয়ে করবো। ম্যমতো শুনে থ। একটু হেসে আয়
ভাই আদর করে জড়িয়ে ধরে ঠিক আছে ভাই তূকেই বিয়ে করব। মনে মনে বল্লাম বড়
বাঁচা বেচে গেলাম,তোর মত বুড়ু মেয়েকে কে বিয়ে করবে? আরো ভাবলাম পাড়ার আপুর
লজিকটা সময়মত কাজে লেগেছে।ঐ আপূ ফোনে এক ভায়াকে মেয়ে পটানোর টিপ্স শিখিয়ে
দিচ্ছলেন। মেয়দের মন পেতে চাইলে প্রথমে তাদের রুপের প্রসংশা কর,আরো কাছে
পেতে চাইলে I I lov youবল। আমি আপুর সেই লজিকটাই কাজে লাগিয়েছিলাম। কাজও
টিক ভাবে সফল হলাম।পরিশেষে ছেলে মেয়েদের কাছে আমি বনেগেলাম টাকুর যম এবং
স্যার ম্যডাম এর কাছে পিচ্ছি জামাই .
---------------
-----
"দুষ্ট স্বভাবের ছিলাম বলে কখনো কোন খেলা ধোলাই হেরে যাওয়াটা মেনে নিতে
পারতামনা।তো একদিন পাড়ার এক ফুপাতো বোনের সাথে কুঁত কুঁত খেলছিলাম।মেয়েদে
র
খেলা বলে হয়তো তেমনটা পারতাম না।এক পর্যায়ে ফূপাতো বোনের কাছে আমি হেরেই
গেলাম।হারার পর রাগে দু:খে কি করবো ভেবে উঠতে পারছিলাম না। খেলার পর বোনটি
পুকুর ঘাটে হাত মুখ দুতে গেল।আমিও গেলাম।রাগটা ক্রমস বেড়েই চলছে।সব রাগ
ঝাড়ার জন্য কোন না কোন কিছু করতেই হবে।তারপর আগপিছ না ভেবে পেছন থেকে
ধাক্কা দিয়ে বোনকে পুকুরে ফেলে দিলাম।দেখতে পেলাম বোনটি অসম্ভব ধরনের পানি
খাচ্ছে।পরে বুঝতে পারলাম সে সাতার কাটতে পারেনা।আমি অনেকটা ভয় পেয়ে
গেলাম।সঙ্গে সঙ্গে আমিও পানিতে ঝাপিয়ে পড়লাম। এব্যং এক হাতে ধরে অন্য হাতে
সাঁতরিয়ে পাড়ে আসার প্রাণ পণে চেষ্টা করতে লাগলাম।অবশেষে পাড়ে আসলাম।মনে
হয়,সেদিনি অনিচ্ছা সত্তে সবচেয়ে বেশি পানি খেয়েছিলাম। বোনটিকে লজ্জিত কন্ঠে
একবার বল্লাম সরি।এবং সে কাঁদতে কাঁদতে বাসায় চলে গেল।
প্রত্যেকের
জিবনে জড়িয়ে আছে এরকম কোন না কোন মধুমাখা শৈশবের স্মৃতি। আর যখনি মনে পড়ে
সে শৈশবের কথা ,তখনি ফিরে যেতে ইচ্ছেকরে সে শৈশবে।
কিন্তু তা কি আধো সম্ভব!
.
04/04/2016