শিশুসাহিত্য : আমাদের ভাবনা 

মির্জা মুহাম্মদ নূরুন্নবী নূর

সাহিত্য জীবন। সাহিত্য জীবনের কথা বলে। কথা বলে মননের সাথে জড়িত হাজারো অনুসঙ্গের উপকরণ নিয়ে। সাহিত্য বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা জোগায়। মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার সাহস জোগায়। শিশুতোষ সাহিত্য চর্চা সাহিত্যের অন্যতম অংশ বিশেষ। তাই শিশুতোষ সাহিত্য চর্চায় আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। ছোটদের জন্য কাজ করতে হবে সাহিত্য অঙ্গনে। শিশুমনের বিকাশ সাধনে সাহিত্য কর্মীদের এগিয়ে আসতে হবে অকুণ্ঠ চিত্তে।
আজকের শিশু আগামীদিনের কর্ণধার। জাতির অভিভাবক। জনতার আশার বাতিঘর। দেশ ও জাতির অগ্রসেনা। পথিকের অগ্রপথিক। এসব শিশুমনের বিকাশ সাধনে তাদের উপযোগী করে সাহিত্য রচনা করতে হবে। শিশুদের হাসি আর কান্না সাহিত্যের চরিত্র বানাতে হবে। শিশুদের হাসির ধরন জানতে হবে। বুঝতে হবে ওদের কান্নার কারন। খুঁজে বের করতে হবে ওদের বেড়ে ওঠার সহায়ক উপকরণ কি কি। সাহিত্যের পাতায় স্থান করে দিতে হবে ওদের খেলাধূলার সামগ্রীর বিবরণ। ওদের হৃদয়ের আকুতি বুঝতে হবে কবি সাহিত্যিকদের। ওদের মিষ্টি হাসির উৎস তুলে আনতে হবে কবিতার পংক্তিতে। ছড়ার ছন্দে ছন্দে। গল্পের উপমায়। প্রবন্ধের অনুসঙ্গে। সাহিত্য সম্ভারে ওদের স্থান আরো প্রসারিত করতে হবে। শিশুদের নিয়ে ভাবতে হবে আরো অনেক বেশি করে। একান্ত আপনার করে। আজকের শিশুদের আদর্শ করে গড়ে তুলতে পারলে পরবর্তী সময়ে ওদের জন্য নতুন করে খুব বেশি ভাবতে হবে না। ওদের জন্য নতুন করে অত বেশি সৃষ্টির প্রয়োজন হবে না। তাই শিশুমনের উপযোগী করে সাহিত্য চর্চা খুব বেশি প্রয়োজন। বড়দের জন্য যেমন লিখতে হবে ঠিক তেমনি ছোটদের জন্যও সৃষ্টি করতে হবে সাহিত্য ভান্ডার। জ্ঞানের সবগুলো শাখাতেই শিশুমনের বিকাশ সাধনে এগিয়ে আসতে হবে। ওদের জন্য লিখতে হবে কবিতা। ছন্দ ছড়ায় জাগাতে হবে শিশুদের। কল্প কাহিনীর গল্পের ভিতরে ওদের জীবন গড়ার বীজ বোপন করতে হবে কবি সাহিত্যিকদেরকেই।
জাতি আজ পথহারা পথিক। সঠিক পথের দিক ভুলে অজানা, অচেনা পথে এগিয়ে চলছে আজকের প্রজন্ম। এগিয়ে যাচ্ছে অন্ধকারের দিকে। দিক হারা নাবিকের মত। পথহারা পথিকের মত। পথভোলা আগন্তুকের মত। এ জাতিকে জাগাতে হলে তরুণদের জাগ্রত করতে হবে। সচেতন করে গড়ে তুলতে হবে নতুন প্রজন্মকে। আর এরাই হচ্ছে আজকের শিশু কিশোর।
এদের জন্য কাজ করতে হবে কবি সাহিত্যিকদের। জাতির কান্ডারী কবি সাহিত্যিক। সময়ের সাহসী যোদ্ধা কবি সাহিত্যিকগণ। ব্যক্তি মননের বিকাশ সাধনে কবি সাহিত্যিকদের চেয়ে আর কেউ ভালো, মজবুত এবং টেকসই ভুমিকা রাখতে পারে বলে আমার জানা নেই। কবিতা অনন্ত যৌবনা। ছড়া ধারালো তলোয়ারের চেয়ে অনেক বেশি কাটতে জানে। বিবেকের দুয়ারে শক্ত আঘাত হানতে কবিতার বিকল্প আর কি আছে?
শিশুরা আমাদের প্রাণ। আমাদের অবিনাশী শক্তি। প্রেরণার বাতিঘর। আঁধার পথের আলোকবর্তিকা। পথিকের অগ্রপথিক। সেনানীর অগ্রসেনা। এদের জন্যই আমাদের সব সৃষ্টি। সৃষ্টির উল্লাস। সৃষ্টি উল্লাসের আনন্দ। আনন্দের আনন্দ। হাসির হাসি। কান্নার আঁধার। আমরা ওদের জন্য কাজ করি। আরো অনেক কাজ করতে হবে ওদের জন্য। অনেক দূরে এগিয়ে নিতে হবে শিশুদের। শিশু সাহিত্যের কাজকে।
 
Top