shoto kitha
আসসালামু আলাইকুম,

প্রিয় ভাই বোন বন্ধুরা,

গ্রুপ ও পরিষদ প্রসঙ্গে কিছু কথা।

বন্ধুরা,

আপনারা নিশ্চই মহান রবের অশেষ কৃপায় ভালো আছেন।
আজ গ্রুপের সূচনা লগ্নের কথাগুলো খুব মনে পড়ল। কারন ২০১৪ সালে রমজান মাস শুরু হবার কয়েকদিন আগেই গ্রুপটি খুলেছিলাম। যখন অনলাইনে বা ফেসবুকের ফ্রেন্ড লিষ্টে আড়াই হাজারের একজনও ছিল না যারা সাহিত্য চর্চা করে। আমি খুঁজে পেতে চেষ্টা করতাম লেখকদেরকে তবে তথাকথিত লেখক লেখিকা নয়। তেমন একটা পেলাম না। এখন বলি আমার মাথায় কেন গ্রুপ খোলার চিন্তা আসল। আমি সাহিত্যকে ছোট থেকেই ভালোবাসি। প্রতিভাবান ছোট ভাই বেনদের খুব আদর করতাম উৎসাহ দিতাম লেখার জন্য। পকেট থেকে টাকা খরচ করে একটা কলম হলেও উপহার স্বরুপ স্বিকৃতি দিতাম। ছোটদের ক্লাসে শিক্ষক না আসলে প্রতিযোগিতার ব্যাবস্থা করতাম। যখন ঢাকা চলে আসলাম উৎসাহ দেয়ার মত কাউকে না পেলেও এই ক্ষুধা আমার রয়েই গেল। আমি প্রায় শাহবাগ পাবলিক লাইব্রেরীতে যেতাম ১১ , ১২ সালে । সেখানে সাহিত্য আসরে আমি থাকতাম । চিন্তা আর পর্যবেক্ষণ করতাম । এ টু জেট ভাবতাম।তারা কত একনিষ্ঠ ভাবে সাধনা করে । তারা কতটা ভালোবাসে সাহিত্যকে । কিন্ত সবাই সেখানে ভ্রান্ত পথের পথিক । তখন ফেসবুকে আইডি ছিল কিন্তু ব্যাবহার করতে জানতাম না। যাই হোক বিশেষ কারনে গ্রামে চলে আসলাম। কিছু পরে ঢাকাতে শকুনের ঝড় শুরু হলো। আমার নেট ব্যাবহার করবার মত মোবাইল ছিল না। গ্রামে বসে শুধু বিবিসি সংবাদ শুনার জন্য প্রহর গুনতাম। হায় আমি কিছুই করতে পারছি না। ঢাকা যখন ছিলাম তখন তো সব কিছুতেই ছিলাম। কিন্তু এখন কী করবো। হাতে নিলাম কাগজ কলম । ২৫ থেকে ৩০টি কবিতা লিখলাম ঢাকার পরিস্থিতি নিয়ে। এক ভাইকে ফোনে বললাম আপনি একটি আইডি খুলে বেনামে কবিতাগুলো চালিয়ে দিতে । সে কাজটি করতে পারে নি। আর সহ্য হচ্ছে না কখন ঢাকা আসবো। যখন ঢাকা আসলাম তখনও প্রকাশ করবার মত যায়গা বা মাধ্যম পেলাম না। একটা মোবাইল ছিল না যা দিয়ে নেট ব্যাবহার করবো। চার মাস পর মামা একটি মোবাইল আমাকে উপহার দিল। তখন জানতাম না এই ছোট মোবাইল দিয়ে এত সুন্দর নেট ব্যাবহার করা যায়। বেশ কিছুদিন পর কৌতুহল বশত চেষ্টা করে ওপেরা ডাউনলোড করে ব্যাবহার শুরু করলাম। তখন একটা পেইজ খুলেছিলাম "পৃথিবী আমাকে চায়" এই নামে একটি বই প্রকাশের চিন্তা ছিল তাই। পরে অনেক ভেবে দেখলাম সাহিত্য আসলে একটা আন্দলন । এটা একটা যুদ্ধের ময়দান । খারাপের বিরুদ্ধে সাহিত্য যুদ্ধ করে । কিন্তু তথাকথিত সাহিত্যকরা এটাকে নিজেদের সম্পদে পরিণত করেছে। নিজেদের ইচ্ছামত এটাকে ভালোর বিরুদ্ধে ব্যাবহার করছে। তাই আমার পেইজকে নিজের মধ্যে না রেখে শুধু নিজের লেখা না ভেবে সকলকে একত্রিত করে যুদ্ধ করবার জন্য নাম দিলাম "কলম ও কবিতা যুদ্ধের ময়দানে" কাউকে না পেয়ে একা একাই যুদ্ধ শুরু করেদিলাম । সমকালিন বিষয়গুলো নিয়ে নির্ভয়ে চালিয়ে যেতে লাগলাম। তখনও আমি একা । কিছুদিন পরে সাদিয়া খন্দকার নামে একটি আইডির পোষ্ট আমার টাইমলাইনে আসলে ছন্দে ছন্দে একটা কমেন্ট করলাম । মুহুর্তেই সে কমেন্ট রিপলে করলো ছন্দে ছন্দে আমার চেয়ে আরো ভালো করে। তখন খুব আগ্রহ নিয়ে তার ওয়ালে ঢুকলাম ভাবলাম সে কবিতা লেখে। কিন্তু না একটা লেখাও পেলাম না। তখন খুব ভয়ে ভয়ে বললাম আপু আপনি তো লিখতে পারেন । আপনি আমার এই পেইজে লিখেন। এর আগে কখনও কোনও মেয়েকে ম্যাসেজ দেইনি। আপু বলল আমিতো লিখতে পারি না তবে চেষ্টা করবো। আমি তাকে পেইজের এডমিন বানালাম। সেই মেয়েটি আমাদের প্রিয় বোন উম্মে হাবিবা রাহনুমা। তার দুই মাস পর একটি গ্রুপ খোলার চিন্তা মাথা এলো। কারন আমি তখন থেকে ভালো লেখক খুঁজতাম যাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে পারবো অন্যরাও করতে পারবে। তখন কোনও সাহিত্য গ্রুপ আমার চোখে তেমন পরেনি । প্রথম দেখেছিলাম নবীনদের কবিতার ঝুলি। নারী প্রেম ছাড়া কিছুই পাইনি। ধীর ধীরে আরো কয়েকটা গ্রুপ দেখেছিলাম। কিন্তু কোথাও ঢুকে মনে শান্তি পেতাম না। ভালো লেখকদের কোন কোনও ঘর নেই শুধু খারাপ মানুষদের ঘরে ঢুকে দু’ একটা কবিতার মাধ্যমে উঁকি মারা ভালো লাগছিল না। আমি চাচ্ছিলাম ভালো লেখকরা যেন গর্ব করে বলতে পারে আমাদেরও একটি সুন্দর ঘর আছে । নানা প্রান্ত থেকে এখানে সবাই একত্রিত হবে । একে অপরকে চিনতে পারবে জানতে পারবে। একটা প্লাটফর্ম তৈরি হবে। তাই পেইজের সাথে মিলিয়ে যাতে একেবারে নাম মিলে না যায় তাই প্রথমে ইংরেজী দিয়ে সাথে বাংলা দিলাম । একটি বিষয় প্রতিযোগিতা ঘোষণা করেছিলাম বিষয় ছিল রমজান এক মাসে একটি লেখা পেয়েছিলাম । লিখেছিল হাবিবা আপু। দিন যেতে লাগল গ্রুপে আপনা আপনি সদস্য যোগ হতে লাগলো । গ্রুপে লেখক সংখ্যা বাড়তে লাগল। কিন্তু সাপ্তাহিক সাহিত্য আসর ছিল না। হঠাৎ এক বোন ম্যাসেজ দিলো ভাইয়া, গ্রুপে প্রতি সপ্তাহে একটি নির্ধারিত বিষয় দিলে কেমন হয়।আমি বুঝতে পারিনি সে আমাকে খুব সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে দিল কিভাবে হবে। উদাহরণ স্বরুপ বিষয় দিয়েছিল "মা" এবং এটাই ছিল আনুষ্ঠানিক প্রথম আসর। সেই থেকে এখন পর্যন্ত একটি পর্বও মিস হয়নি। সেই বোনের নাম তাসলিমা জেরিন রিয়া। যিনি মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে এখনও বেঁচে আছেন। এই ভাবে ক্রমশ গ্রুপটি ভালো লেখকদের একটি ঠিকানায় পরিণত হয়। এর পর লেখকদের মনে শক্তি রাখতে বিশেষ করে প্রবাসী বড় ভাই মিজান ভাই সহ অনেকের উৎসাহ অনুপ্রেরণায় বই প্রকাশ ধারাবাহিকতা ধরে রাখি । অনেকেই যখন বলত এটা তার প্রাণের গ্রুপ তখন মনে আনন্দ লাগত । আর সব কিছুই সম্ভব হয়েছে আপনাদের আন্তরিক ভালোবাসা যূক্ত প্রচেষ্টায়। আজ আবার আপনার অনেকেই ঝিমিয়ে পরেছেন। এর জন্য একমাত্র আমি দায়ী। আমি কথা দিয়ে কথা রাখতে পারিনি। সত্য কথা বলতেগেলে আমি এই দায়িত্বে থাকার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছি। তবু আপনার আমাকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখে যাচ্ছেন। এই ময়দান থেকে দূরে থাকার দুঃসাহস আমার নেই।আমার অধিকার নেই আপনাদের আশা আকাঙ্খার সাথে প্রতারণা করবার।। আসলে আমি ছোট বেলা থেকেই খুব অলস । আমার মত অলস আমি আর দেখিনি। তা সত্তেও কিভাবে প্রায় তিন বছর আপনাদের সাথে আছি জানি না।। আপনাদের নিয়ে অনেক পরিকল্পনা আমার আছে। আপনারা আবার জেগে উঠুন । আপনাদের সবাইকে চাই। পরিষদকে নতুন ভাবে সাজাতে চাই। আপনারাও সাধ্যমত দায়িত্ব পালোনে এগিয়ে আসুন। কাউকে জোড় নয় ।। সবাই কিছু কিছু করলে জাতীয় সংগঠনে পরিণত হবে আপনাদের প্রিয় পরিষদ।দোয়া রাইল।
মোবাইলে‬ এইটুকুর বেশি লেখার অনুমতি আমাকে দেয়নি । তাই প্রিয় মানুষদের কথা বলতে চেয়েও পারিনি ।। আপনাদের সবার জন্য প্রাণ ভরে দোয়া দোয়া , ভালোবাসা , শ্রদ্ধা রইল ।
 
Top