--------------------------------------------------
কালারব্লাইন্ড
পৃথিবী দু'টো দরজা নিয়েই জন্মেছে
আগমন-নির্গমন চলে ইচ্ছা-অনিচ্ছার দোলাচলে
এখানে স্বর্গ পাওয়া যায়
আছে নরকের সাজসরঞ্জাম
চশমা পরে হাঁটা মানুষের স্বভাবজাত ধর্ম
লাল-নীল-হলুদ হরেকরকম
সাদাচশমার মানুষগুলোই আঁধার বুঝতে পারে
কালারব্লাইন্ডের সংখ্যাও নেহাত কম নয়
ভুলে গেছি ইউফ্রেটিস নদীর কথা
কারবালার সুর মরসিয়া গীতি নয়
ইহুদীরা অমৃতভেবে শরাব পান করতেই পারে
তাদের আছে ষড়যন্ত্রের এক পরিত্যক্ত ইতিহাস
সত্যের ঘোড়া ছুটছে সভ্যতার কেন্দ্রবিন্দু ধরে
মানুষ একদিন ব্রোথেল ছাড়বেই
আকাশ বিদীর্ণ হবে
তারাগুলো ঝরে পড়বে
সমুদ্র রেগে যাবে
এই এক নিশ্চিত সত্য- অনিশ্চিত জীবন
মানুষ পানশালা ছেড়ে একদিন মরুর পথে পা বাড়াবেই
খোরশেদ মুকুল
১২-১০-২০১৬ ইং
---------------------------
ভালোবাসার বিবর্তন
খুনেরাঙা পথ বাংলার জনপদ
হত্যা-গুম খেলা
মমতার বাঁধন মুহূর্তেই ছেদন
শেষ করে বেলা
ইচ্ছে হলে হায় প্রেমে মজে যায়
বাধে স্বপ্নে ঘর
পাশে থাকলে জান বাজায় কুহুতান
সমুদ্রে যেনো চর
হয় যদি অমিল লাথি-ঘুসি-কিল
প্রাণ নেয় ছিনিয়ে
ভেঙ্গে যায় প্রণয় দূরে ঝি-তনয়
যায় রাগ ডিঙিয়ে
খোরশেদ মুকুল
০৭-১০-২০১৬ ইং
------------------------------------
ডাবল অপরাধী
স্নায়ুবিক উত্তেজনায় সাময়িক আনন্দলাভের অবৈধ পন্থা
দুর্ভাগ্য সেই অনাগতের যাকে পাওয়া যায় ডাস্টবিনে,
তার আশেপাশে, ফুটপাথে কিংবা লোকালয়ের কাছে
পলিথিনে মোড়ানো ক্ষতবিক্ষত নিষ্পাপ ফুল
সভ্যতার উন্নতি নৈতিকতার ব্যস্তানুপাতিক
এখনও আমরা চীনাদের ন্যায় হারবাল বেবি স্যুপ খাওয়ার মতো সভ্য (?) হইনি।
তাই তো যখনতখন এই অসভ্যতার মুখোমুখি হই
হত্যা কোরে আনন্দ পাই- পৈশাচিক আনন্দ
যার অন্তর্বাসে লুকিয়ে থাকে হত্যার অভিযোগ
কিন্তু কেউ শাস্তির আবেদন কোরে না
ভারতীয়দের আকাশছোঁয়া উন্নতির পদতলে পিষ্ট হয়ে
মারা যায় চার দশমাংশ কন্যাভ্রুন
অনিচ্ছা - অসম্মতি - আর্থিক অসচ্ছলতা (?)
এই ফ্যাক্টরগুলা না হয় আজ বাইরেই রাখলাম
তবে বিচারের দাবি রেখে গেলাম মানবের মাঝে- বিবেকের তরে
খোরশেদ মুকুল
০২-১০-২০১৬ ইং
------------------------------------------
কবিতা
প্রেম- দ্রোহ আর প্রকৃতির মূর্তপ্রতীক
ইতিহাসের পাতা বেয়ে চলে সূচনার প্রারম্ভে
তুলে আনে মণিমুক্তাদি, বানায় অলংকার- শব্দের বিন্যাসে
একবর্ষা কালি এনে দিবো তোমার কলমে
তুমি রচিবে একটি শ্রাবণসন্ধ্যা
শামিয়ানায় বোসে ঘড়ি আবিষ্কারের উপাখ্যান আঁকবে
বসন্তীরঙে সাজাবে তোমার নগ্নদেহ
হৃদ্যিতা যখন শীতের নির্মল-সিক্ত
দূর্বাঘাসের উপর দিয়ে হেটে যায় তখন তোমার
মহাকাব্যের ইতি হবে- অনুপম প্রেমের চিত্রকল্প
কখনও কখনও উন্নয়নকে সভ্যতাবিমুখ বলে গালি দেয়
ডাস্টবিনে যখন দ্যাখে নষ্ট মিলনের পবিত্রফল
ক্ষুধার্ত পেট পূর্ণিমা খায়
পৃথিবীর সবচে' বড় ছাদের নিচে যখন দ্যাখে অজস্র মানবের আবাসন
কবিতা তখন ফুটপাথ দিয়ে হাটে
খোরশেদ মুকুল
১৭-০৯-২০১৬ ইং
--------------------------------------------
আমার ছোটোবেলা
খর তাপদাহে তৃষাহৃদে দিলে বারিধারা
মাতাল ছোঁয়ায় পেলো সঞ্জীবনী শক্তি
রিনিঝিনি ছন্দে কচিধানের পাতা বেয়ে
নামে হিরেকণা- যেনো চিরঅমৃত
নারকোল গাছের একটা শাখা সদরদরজার
মাথা ধরে টিপটিপ কোরে প্রসাদ ফেলছে
আমি হারিয়ে গেলাম সে আহবানে
চলে গেলাম অভিসারে - উষ্ণ আলিঙ্গনে
দু'হৃদয়ের ঘর্ষণে রূপ নিলো প্রেমের বর্জ্যপাত
অসমের শ্রাবণে আমি মেঘ হতে চাই
তোমায় ঢেকে দিতে অত:পর প্রেমজলে ডুবাতে
আমি বৃষ্টি তুমি তৃষ্ণাতুর পৃথিবী
আশেপাশে বনফুল নেই, নেই কদম
কি দিয়ে তোমায় জানাবো অভিবাদন?
তুমি এসো - জাগানিয়া হয়ে
কৃষিকের বুকে প্রাণ হয়ে , কৃষাণির হিয়া
পুকুরে মলা মাছের মতো লাফায় কচিকাঁচা
উদ্দাম নৃত্য - উলঙ্গ স্নান - নির্মল হাসি
আমি খুঁজে পাই আমাকে- আমার ছোটোবেলা
খোরশেদ মুকুল
১২-০৯-২০১৬ ইং