প্রিয় সাহিত্যপ্রেমী বন্ধুগণ,
আসসালামু আলাইকুম অরাহমাতুল্লাহ। আশারাখি সবাই ভালো আছেন। আমাদের গ্রুপের প্রায় অধিকাংশ লেখকই নতুন। আমাদের অনেকেরই এইগ্রুপে এসেই লেখালেখির যাত্রাশুরু হয়েছে। যেকারণে লেখালেখি তেমন উঁচুমানের নয়। আলহামদুলিল্লাহ্ দিনেদিনে লেখার মান উন্নত হচ্ছে। আমাদের হতাশ হবার কোন কারণ নেই। ইনশাআল্লাহ চেষ্টা করলে আমরা পারবই। খুবদ্রুতই আমাদের গ্রুপের মাসিক বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে এবং তাদের ঠিকানায় পুরস্কার পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এখন ঘোষণা করবো বাংলাদেশ প্রজন্ম সাহিত্য পরিষদ[BPSP] কর্তৃক আয়োজিত প্রতিভাবিকাশ সাপ্তাহিক সাহিত্য আসর—৯৫ এর ফলাফল। এবারের বিষয় ছিল কবিতালিখন। যারা বিজয়ী হয়েছেন তাদের কে জানাই প্রাণঢালা অভিনন্দন এবং যারা অংশগ্রহণ করেছেন তাদের কে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা।
.
১.
রক্তপিয়াসী
খাদিজাতুল কোবরা খান
.
মস্তিষ্কের নিউরণে যদি ওঠে
টগবগিয়ে রক্তের ঝলক
অনুরণিত হয় সর্বদা লোলুপ খুনের তিয়াস
মানুষের কষ্টে উল্লসিত হও,
খুনের উন্মত্ততায় বাধা হয় না পলক
জীঘাংসা নয়,নয় প্রতিশোধ
কেবল রক্ত,রক্তের উন্মাদনা!
মানুষ,না মুখোশে ঢাকা পিশাচ!
দাবী কর মানুষ?
মানবতার সেবায় রাখো
দাবি খুনের ছাপ?
হও যদি পিশাচ
মেটাও তোমার রক্তের আস্বাদ!
.
২.
হারিয়ে গেছে সব
আনিস আরমান
.
হারিয়ে গেছে সব!
মনের কোণে জমে থাকা রঙিন অনুভব।
.
গাঁও-গেরামের আঁকাবাঁকা মেঠোপথ আর নেই
ফুল হাতে সব ললনারা হারিয়েছে খেই।
সাঁঝের বেলা পুকুরঘাটে আলতারাঙা পায়
কলসিকাঁখে পল্লীবধূ আর কি দেখা যায়?
চোখজুড়ানো সবুজ-শ্যামল ফসল ভরা মাঠ
পূর্বপাড়ার বটতলাতে সেই সে বুড়ির হাট।
ভোর না হতেই কিচিরমিচির পাখির কলরব।
হারিয়ে গেছে সব।
.
নকশিকাঁথা নববধূর নিপুণ হাতের ফুল
শিউলি, জবার গাঁথা মালার তারই কানের দুল।
সারিসারি নৌকাগুলোর হরেক রকম পাল
আর দেখি না নদীর বুকে জেলে ভাইয়ের জাল।
আউল-বাউল লালনগীতি একতারারই সুর
হারিয়ে গেছে কালের টানে অনেক অনেক দূর।
ছলাৎছলাৎ ঢেউয়ের তাল আর নদীর কলরব।
হারিয়ে গেছে সব।
.
তরুলতার ছায়ায় বসে রাখাল ছেলের গান
আকাশমণির চিকন শাখে নেইতো কুহুতান।
লাঙল-জোয়াল নিয়ে চাষির চাষ করা সেই বিল
নীল আকাশে ডানা মেলে নানান জাতের চিল।
বৃষ্টিজলে দুষ্টদলের খেলাধূলার সাজ
হারিয়ে গেছে মায়ার বাঁধন, ভালবাসা, লাজ।
সাতসকালে খোকাখুকুর কোরান পড়ার রব
হারিয়ে গেছে সব।
.
০৩.
বর্ষা এলে
মোঃ মনোয়ার হোসাইন
.
বর্ষা এলে ঢোলবাজে গুড়ুমগুড়ুম মেঘের ভেলায়,
হাজার রঙের স্বপ্ন তখন নাচতে চায় মনের থালায়।
টিনেরচালে সন্ধ্যা-প্রাতে শনশনাশন সুরবাজে,
এমন সুরে নিত্যদিনই সকল কবির মনসাজে।
:
বর্ষা এলে ব্যঙ-বেঙাচি গান গায় সুরতুলে,
খাল-বিল, নদী-নালায় লাফায় সেকী বুকফুলে।
বৃষ্টিভেজা ব্যঙেরছাতা হয় নরম তুলতুলে,
ভাঙলে ছাতা কান্না সেকী বুকফাটে তার মুখখুলে।
:
বর্ষা এলে বৃষ্টি পড়ে নম্রভাবে ঝিরঝিরে,
ঘাসের মাথায় পা বসালে উঠে তখন শিরশিরে।
তারই সাথে জলেভেজা ধরতে আসে জোঁকঘিরে,
সাহস নিয়ে বসে থাকবে সেথায় তখন কোনবীরে?
:
বর্ষা এলে পুকুর-ডোবায় জলনাচে থৈ থৈ,
মহানন্দে কূলে উঠে বিল ছেড়ে ওই কৈ।
ইঁলশেগুড়ির রূপ যে আমার মনকাড়ে রৈ রৈ,
মুষলধারে বৃষ্টি শুধু করছেরে হৈ চৈ
:
বর্ষা এলে হরষে দোলে কদমগাছের ডাল,
কদমতলায় কনেরমাথায় কদমপাতার চাল।
থোকাথোকা ফুলফুটেছে সেথা কদমফুল,
বায়না কনের কদমফুলে রাঙাবে তার চুল।
.
ধন্যবাদান্তে
আলানূর হোসাইন
সভাপতি
বাংলাদেশ প্রজন্ম সাহিত্য পরিষদ[BPSP]
--------------------