বিশ্বাসীদের বৃহৎ প্লাটফর্ম বাংলাদেশ প্রজন্ম সাহিত্য পরিষদ
.প্রতিদিনের মতই একদিন আমি ফেসবুক চালাচ্ছিলাম। ফেসবুক যেন নেশা। অলস; কোন কাজ নাই শুধু লাইক আর কয়েকজনের লেখা পড়া ছাড়া। হঠাৎ টাইমলাইনে Umme Habiba Rahnuma নামক আইডি থেকে একটা ছড়া চোখে পড়লো। ছড়াটা পড়ে মজা পেলাম। আদর্শিক ভিত্তি একই হওয়ায় সাথে সাথে লেখাটা কপি করে লেখিকার নামেই পোষ্ট করলাম। তারপরে বেশ কয়েকদিন সেই বোনের আইডিতে হানা দিতাম লেখা পড়ার জন্য। আইডিতে প্রায়ই একটা গ্রুপের নামে এ্যাড আসতো; Pen & Poem in the field of war গ্রুপের। গ্রুপটাই জয়েন দিয়ে সবার লেখা পড়তাম। তখন মনে হয় দুয়েকটা পর্ব হয়ে গিয়েছিল। একদিন সবার লেখা পড়তে পড়তে আমার মনে হলো আমিও লিখতে পারি ! যেটা আমার ক্লাস সিক্সেও মনে হয়েছিল। দুচারটা লাইন ছন্দ মিলিয়েছিলাম; তারপর ‘লেখা চুরি করেছ’ বলায় মন খারাপ করেছিলাম। সেদিন একটা লেখা পোষ্ট করলাম। আলানূর ভাই প্রশংসা করলেন আমার লেখার। তখন প্রথমে মনে মনে হাসলেও ভাইয়ার কমেন্টটা আমার অন্তরে গেঁথে গিয়েছিল। একে একে উৎসাহমূলক পোষ্ট আসতে লাগলো গ্রুপে। তারপর থেকে সাপ্তাহিক আসরগুলোতে অংশগ্রণ করতে লাগলাম।
.
বই প্রকাশের পরে একদিন দেখলাম বিচ্ছিন্ন থেকে আমরা একত্রিত হচ্ছি। গ্রুপ থেকে একটা সংগঠন তৈরি হয়ে হয়েছে। নাম দেয়া হয়েছে ‘বাংলাদেশ প্রজন্ম সাহিত্য পরিষদ’।
.
‘প্রজন্ম সাহিত্য পরিষদ’ই আমাকে ফেসবুকের অলস ব্যাবহার থেকে সৃজনশীল কর্ম পরিচালনার রাস্তা দেখিয়েছে। এই পরিষদেই আমার হাতেখড়ি । পরিষদের অধিকাংশই আমার মত নবীন, শূন্য থেকে উঠে আসা। কিন্তু প্রাণহীন, নির্জীব নয়। কাঁচাহাতেই উঠে এসেছে দৃষ্টান্তমূলক ছড়া- কবিতা। এদিক থেকে ‘প্রজন্ম’কে শতভাগ সফলই বলা যায়।
.
‘বাংলাদেশ প্রজন্ম সাহিত্য পরিষদ’ অনলাইনে সাহিত্যচর্চায় সাহসিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত। সাহিত্যবান্ধব অন্য গ্রুপগুলোতে যখন প্রাণহীন ‘প্রেম- ভালোবাসা’ আর অশ্লীল সাহিত্যের ছড়াছড়ি, তখন ‘প্রজন্ম সাহিত্য পরিষদ’ মা, মাটি, দেশকে নিয়ে, মানুষের অধিকার আদায়ে এবং অন্যায় প্রতিরোধে দাবি তুলছে। প্রজন্ম যখন সঠিক পথ থেকে বিচ্ছুরিত হয়ে অন্ধকারে পা রাখছে, তখন তাকে আলোর পথে ফিরে আসার আহ্বান করছে এই ‘প্রজন্ম’। ‘প্রজন্ম সাহিত্য পরিষদ’ এখন অনলাইন জগতের বিশ্বাসী সাহিত্যিকদের সর্ববৃহৎ প্লাটফর্মে পরিণত হয়েছে।
.
পরিষদ থেকে আমি অনেক জ্ঞান হাসিল করেছি। অনেক কিছুই নিয়েছি। কিন্তু একে কিছুই দিতে পারিনি আমি।
.
সর্বশেষ, শততম পর্বে অংশগ্রহণকারী সকল ভাই ও বোনকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে শেষ করছি। প্রজন্ম সাহিত্য পরিষদের সার্বিক সফলতা ও সমৃদ্ধি কামনা করছি।