সাহিত্য
বিশেষ ঘোষণা
সাহিত্যপ্রেমী বন্ধুদের জানানো যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ প্রজন্ম সাহিত্য পরিষদ[BPSP] এর আগামী আসর অনুষ্ঠিত হবে হাইকু’এর উপর। পরিষদ সবসময়ই চেষ্টা করে ব্যতিক্রমধর্মী বিষয়ের উপর সাহিত্য আসর করতে। তারই ধারাবাহিকতায় এই প্রথম হাইকু’র উপর আসর অনুষ্ঠিত হবে। আশারাখি আপনারাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করবেন।
.

প্রতিভাবিকাশ সাপ্তাহিক সাহিত্য আসর—১০৩

বিষয়ঃ হাইকু
সময়ঃ আগামী রবিবার (০৯/১০/২০১৬) থেকে সোমবার (১০/১০/২০১৬) রাত ১১টা পর্যন্ত।
পূর্বপ্রকাশিতলেখা প্রতিযোগিতায় অনুপযুক্ত বলে বিবেচিত হবে।
একজন একই পোস্টে ক্রমিকভাবে সর্বোচ্চ দুইটি হাইকু দিতে পারবেন।
যারা হাইকু সম্পর্কে অবগত নন তাদের জন্য হাইকুর পরিচিতিমূলক পোস্ট নিচে দেওয়া হল।
.
হাইকু কী
এখানে অন্তমিল মুখ্য নয়,
মোট তিন লাইনের হবে,
কোনো দাড়ি কমা থাকে /থাকে না
প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষোভাবে ঋতুবৈচিত্রের উল্লেখ থাকতে হবে ।
গঠন হবে ৫+৭+৫ মোট 'অক্ষরের সিলেবলে' গঠিত হয়।হাইকু পৃথিবীর সবচেয়ে ছোটো কাব্য
.
হাইকু হল জাপানি বড় কবিতার ক্ষুদ্রতম রূপ! প্রাথমিক পর্যায়ে ৫-৭-৫ অক্ষরের সিলেবল 'হক্কু'(hokku) নামে লেখা হয়! তার আগে 'রেঙ্গা'(renga) কবিতা ৫-৭-৫-৭-৭ 'অক্ষরে্র সিলেবল' মোট পাঁচটি ছোট লাইনে লেখা হতো। 'রেঙ্গা' (Renga)কবিতার আরেক নাম তান্‌কা (tanka)কবিতা।
জাপানের 'Heian Period' ( ৭৯৪ – ১১৮৫ ) থেকে 'রেঙ্গা' কবিতা বিভিন্ন কবি ও রাজদরবারে অভিজাতব্যক্তিত্ববর্গ রেঙ্গা বা 'তানকা' কবিতার প্রবর্তন করেন। তখন থেকেই 'haikai-no-renga' রেঙ্গা কবিতারও প্রচলন হয়। সেই কবিতাগুলি 'হাইকাই'(Haikai) এর মতোই কিন্তু এইধরণের কবিতা ছিল হাস্যরসাত্বক কবিতা এবং তাতে কিছুটা নিম্নমানের শীল্পবোধ ছিল। তবে এইধরণের কবিতা সতেরশ' শতাব্দী পর্যন্ত অভিজাত ব্যবসায়ীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। অন্যদিকে এই কবিতাগুলি বেশ জনপ্রিয় ও আনন্দজনক ছিল। সে যাই হোক, ক্রমাগত কবিতার বিবর্তনে সেই রেঙ্গা বা তানকা বা ওয়াকা কবিতা থেকেই হাইকু কবিতা হয়েছে।
সেই 'হক্কু' কবিতায় পরিবর্তন এনে মাৎচুঅ বাশো ( ১৬৪৪ – ১৬৯৪ ) সেগুলিকে অন্যান্য 'তানকা বা ওয়াকা' কবিতা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা করে ৫-৭-৫ 'অক্ষরের সিলেবলে' নতুনধরনের ক্ষুদ্রকবিতার প্রচলন করেন! তারপরে Masaoka Shiki (১৮৬৭ – ১৯০২ ) বাশোর কবিতার নতুন নামকরণ করেন এবং 'হাইকু' নামে প্রচলন করেছেন!
ইনেনাগা সাবুরো নামে জাপানের বিখ্যাত একজন ঐতিহাসিক "History of Japanese Culture, 1959” বইটিতে লিখেন যে হাইকু লেখার নিয়ম বেশ সিম্পল! হাইকুতে ১৭ টি অক্ষরের সিলেবল থাকে এবং তিন ভাগে বিভক্ত থাকে। আমরা জানি যে সিলেবল্‌ মানে জিহ্বার গতি না বদলিয়ে একবারে উচ্চারণ সক্ষম শব্দ বা শব্দাংশ; একস্বরবিশিষ্ট শব্দ বা শব্দাংশ! ছন্দ কবিতায় একস্বর বিশিষ্ট সিলেবল দেখা যায়! জাপানের বর্তমান জেনারেশন শুধু হিরাগানা অক্ষরে ৫-৭-৫ গুনেই হাইকু লিখেন। আর এই হিরাগানা অক্ষরের শব্দকেই "অনজি” বলা যায়! তারা বলেন শব্দের rythom মিলিয়ে লিখলেই চলবে।
পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় চমৎকার সব হাইকু রচিত হলেও বাংলা ভাষায় হাইকু হয়নি খুব বেশী। বাংলায় হাইকুর প্রসার না ঘটার অন্যতম কারণ, কঠোর নিয়ম ও অতিসংক্ষিপ্ততার কারণে তিনলাইনে সেই ভাবের জানালাটি ঠিক মতো তৈরী করার ব্যর্থতা, যেখান দিয়ে ব্যাপ্তির সৌন্দর্য দেখার প্রয়াস থাকবে।
.
নিচে কিছু হাইকু লেখকদের সুবিধার্থে উদাহরণস্বরূপ দেওয়া হলো।
.
বুসন
ছোট্ট গ্রীষ্ম রাত।
এক রোমশ শুঁয়াপোকার
পিঠে এক শিশির।
.
রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর
পুরোনো ডোবা,
দাদুরি লাফালো যে,
জলেতে ধ্বনি।
.

.
তারিক অনিকেত
(১)
বদন বই
ফোটাবেই শুধুযে
কথার খই।
(২)
হাসি কান্না
জীবনের ঝুলিতে
হীরা পান্না।
.
শেখ বশির আল নাহিয়ান
(১)
শিশির পড়ে
পথশিশুরা কাঁদে
কুঁড়ের ঘরে।
(২)
গোধূলিবেলা
পাখিদের কূজন
বসন্তখেলা।


 
Top