সাহিত্য


মো. আমির হামজা

বিকৃত মানুষ


মো. আমির হামজা




ঝরা পাতার আমি কান্না শুনেছি
দেখেছি মাটিতে লুটিয়ে পড়া,
বুক ফাটা তার চিৎকার শুনেছি
ওর ডাকে কেউ দেয়না সাড়া।
,
মহা সাগরের কোণ ঘেষে আমি
বইতে দেখেছি জলের স্রোত,
বিকৃত পৃথিবীর মিনুষ দেখেছি
খুঁজে পাইনি মনুষ্য বোধ।
,
আকাশে মেঘের গর্জন শুনেছি
ঝরতে দেখেছি বৃষ্টি ধারা,
দুর্গম পথের যাত্রী দেখেছি
দু'চোখ জুড়ে ক্লান্তি ভরা।
,
পাহাড় ধ্বংসের আওয়াজ শুনেছি
দেখেছি আমি অগ্নি প্রলয়,
অস্তিত্ব খুঁজে পাইনি শেষে
নিঃশেষে দেখি মিশেছে ধুলায়।
,
রাক্ষস পুরির গল্প শুনেছি
দেখেছি আমি পৃথিবী ঘুরে,
খেয়ালি মনে ছুটে চলেছি
কল্প কাহিনির রাক্ষস পুরে।
,
কাল বৈশাখীর ডাক শুনেছি
রক্তিম দেখেছি পূর্বাচল,
মানব পেমের অগ্নি শিখা
জ্বলতে দেখেছি অন্ত কাল।
,
পাড় ভাঙা ঢেউয়ের সব্দ শুনেছি
দেখেছি কিভাবে পড়েছে ধসে,
জীবন জ্যামিতির ত্রীভূজ কোণ
মিলাতে পারিনি হিসাব কশে।
----------------------------

আবদুস সামাদ


----- রোষানল ------

আবদুস সামাদ



সুরের মুর্চনা থেমে গেছে 

বেশটা থমথমে,
নিরব, নিস্তব্ধ, নির্জীবতায় 
দাম্ভিক সরগরমে।


সুরের পাখিরা গাহেনা আর
সেই চিরায়িত গান,
বিমুঢ়, বিমর্ষ্য নির্বাক নির্জীব 
যেন নদের কলতান।

মেঘের পেখমে নেই আর
সেই শীতল শিহরণ,
রবি হারিয়েছে যেন তার 
তুর্য্য, তীর্যক বিকিরণ।

বাগ-বাগের ফুলেরা আজি
পরাজিত সৈনিক,
প্রজাপতি আসে না’কো আর
পুষ্প মোহে দৈনিক।

রক্ত আর নির্মম, নিষ্ঠুরতায়
থেমেছে সব কোলাহল,
অহং, হিংসা, দ্বেষে বাড়িছে
ভাই, ভাইয়ে রোষানল!

---------------------------------------
মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিন

কি লিখবো ?

মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিন


সৃষ্টি জগৎ ছন্দে চলে কাব্য মনের কথা বলে 
বিষয় ছন্দ মিলে

ছন্দ ছাড়া যেটা লেখা কবিতা নয়, শেখা বাকি
নিতে হবে দিলে ।
মনে মনে সবাই কবি কল্পনাতে মনের ছবি
প্রকাশ হলেই কাব্য
সেটা হতে হবে ছন্দে হোক তা একটু ভালো মন্দে
তবেই লেখায় নাববো ।
ছন্দ আছে যেমন পদ্যে ছন্দ তেমনি আছে গদ্যে
ব্যতিক্রম না জানি
দুই ধরনের ছন্দ হবে দোল খাওয়ানো ভাবটা রবে
তবেই কাব্য মানি ।
পর্ব মাত্রা বৃত্ত পদে সুবিন্যস্ত আকার গদে
পদ্য ছড়া লেখা
স্তবকে ভাগ করে নাও ভাব বিষয়ে প্রাধান্য দাও
প্রচেষ্টা থাক শেখা ।
গদ্য যখন লিখতে যাবে পড়ে তাতে দোলটা পাবে
নন্দ অনুভবে
কিছু প্রকাশ কিছু কল্প নতুন ভাবনা রূপক শব্দ 
অনুপ্রাসও রবে ।
সংজ্ঞা মনে ধারণ করো নিজে লিখো অন্যে পড় 
দেখো কেমনে লিখে
লিখে যাবে অনবরত বসন্ত ও বর্ষা শরৎ
পাকা হবে শিখে ।
লেখো এমন সেই কবিতা ভাসে হৃদে ভাব ছবিটা
পাঠকের মননে
যুগে যুগে স্মরণ করে তোমার কবিতাটি পড়ে
তোমায় রাখে মনে ।।

-----------------------------------------
পাথরে পদ্ম

।।সাজ্জাদ হোসেনের কবিতা।।

“পাথরে পদ্ম”


পাথরে পদ্ম 
শিশির পরশে 

তিমির দখলে রবি 
দগ্ধ বিমর্ষ কবি।

হিমালয়ে চৈতলী 
সাহারায় নৌকা ডিঙ্গি ভেলা 
মরুতে উত্তাল বান 
সমুদ্র পানিশূন্য ধুঁধুঁ বালুচর।

মরুবালি সাগরে তলানী 
পাষাণ স্থুপে জ্বালি অনল 
বহে ফাগুন হাওয়ায় নরক উত্তাপ 
বসন্ত বীথিকার ছায়া দহে পথিক কায়।

জোয়ার ভাঁটা বহে উজান 
পাখিরা গাহে বিরহের গান; 
অগ্নিগিরির লাভা প্রেমের বাঁশি বাজায়,
জল্লাদের গণ্ডে ঝরে মমতার অশ্র“
আবর্জনা করে পথ অবরোধ।

ঘরনীর পদভারে জাগে পথ অরণ্যে 
বনের সন্ন্যাসী ঘরে ফেঁরে মিছা আবেগে
চারদেয়ালের গৃহিনী হয়েছে বৈরাগী।

পুষ্প কানন ভাঁটির টানে প্রেমশূন্য উদ্যান 
হয়েছে রাক্ষসপুরী নাগিনীর ফণা 
মরুতে অঝরে ঝরে শ্রাবনী জলকণা।

পিতার গণ্ডে বহে করুণ অশ্র“ধারা 
চোখে মুখে ভরা বিষাদের ছায়া 
মায়ের অন্তর পাষাণ নেই স্নেহ মায়া।

মেয়েরাও আজ পারদর্শী কঠিনব্রতে
চড়ে তারা হিমালয় রাজসিংহাসনে; 
চার দেয়ালের গণ্ডি ছেড়ে- 
ছুটছে তারা চন্দ্রাভিযানে।

০৬/১০/২০১৬
(পাথরের কান্না হতে সংকলিত)

-----------------------------------------
সাজিদুর রহমান

এসো! জ্বলে উঠি:

সাজিদুর রহমান

............................... 
এই নষ্ট সমাজের আবহাওয়া পরিবেশ
দুর্গন্ধে ভরা পথঘাট পার্কের সবুজ ছায়াতরু

গঞ্জে গঞ্জে ক্লেদাক্ত হিংস্রতার মাতলামি
অসম্ভব হয়ে পড়েছে মানুষের চলাচল
জীবন ও সম্মানের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত
বিপন্ন মানবতার অসহায়ত্বে রাগে ক্ষোভে
দাবদাহে অগ্নি ঝরায় সুদূর আকাশ।
-
দেখতে দেখতে বিধবা হয়ে যাচ্ছে বাংলার জমিন
দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে সত্য সুন্দরের প্রজনন
জীবন রক্ষার আকুতি নিয়ে ক্রন্ধনরত বিবর্ণ ফুল
এখানে আর চাষ হয় না মানবতার--
এই জমিনে হিংসা বর্বরতা চোর ডাকাত আর
জল্লাদদের দৌরাত্ম্যে মুমূর্ষু স্বপ্নের গোঙানি
যে দিকে চোখ যায় রক্ত আর লাশের ভাগাড়।
-
তনু নার্গিস ও শিল্পীরা এখানে থাকতে পারেনি
তাদের ছিড়ে খুবলে খেয়েছে হায়েনা
গ্রাম থেকে শহর, সমাজের প্রতিটি অঙ্গন
এমনকি স্কুল থেকে ভার্সিটি ও রাজনীতির অলিন্দে
এই হায়েনাদের স্বচ্ছন্দ সদর্প বিচরণে তাই
ভীত কুঞ্চিত আড়ষ্ট মানুষের সভ্যতা এখন
মুখ থুবড়ে ধরাশায়ী করছে ভয়ার্ত চিৎকার।
-
এসো! সত্য সুন্দরের নন্দিত প্রতিষ্ঠায়
ক্ষিয়মাণ মানবতার সাযুজ্য সুরক্ষায়
এসো! জ্বলে উঠি হে বাঙালি!
এসো! একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি।
- ----
০৬/১০/১৬ ঈসায়ি।
 
Top